Advertisement
E-Paper

ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রের মৃত্যু ঘিরে রহস্য জলপাইগুড়িতে

বন্ধুদের সঙ্গে বেরিয়ে এক ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুকে ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে জলপাইগুড়িতে। গত সোমবার রাতে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের গোশালা মোড় লাগোয়া একটি সেতুর সামনে থেকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ওই ছাত্রকে। জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ছাত্রের নাম তন্ময় চক্রবর্তী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৪ ০২:০০
মৃত তন্ময় চক্রবর্তী।

মৃত তন্ময় চক্রবর্তী।

বন্ধুদের সঙ্গে বেরিয়ে এক ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুকে ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে জলপাইগুড়িতে। গত সোমবার রাতে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের গোশালা মোড় লাগোয়া একটি সেতুর সামনে থেকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ওই ছাত্রকে। জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ছাত্রের নাম তন্ময় চক্রবর্তী।

বেঙ্গালুরুর একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তন্ময় শহরের অরবিন্দনগরের বাসিন্দা। পুজোর ছুটিতে তিনি জলপাইগুড়িতে ফিরেছিলেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, সোমবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ ৫ জন বন্ধু তন্ময়কে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ ওই বন্ধুরাই তন্ময়ের বাড়িতে ফোন করে জানায়, বাইক দুর্ঘটনায় তিনি জখম হয়েছেন। বন্ধুদের দাবি, জাতীয় সড়কের দিকে যাওয়ার সময়ে তন্ময় বাইক থেকে পড়ে যায়। বক্তব্যে নানা অসঙ্গতি থাকায় ৪ বন্ধুকে আটক করে জেরা শুরু করেছে পুলিশ। মৃতের মোবাইল ফোনটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ঘটনার আগে কার কার সঙ্গে তন্ময়ের কথা হয়েছিল, তা চিহ্নিত করেছে পুলিশ।

ছাত্রের পরিবারের তরফে এ দিন রাত পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের না হলেও, মৌখিকভাবে তন্ময়কে খুন করা হয়ে থাকতে পরে পুলিশকে অভিযোগ জানানো হয়েছে। জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি আশিস রায় বলেন, “ছাত্রের পরিবারের তরফে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হবে বলে জানানো হয়েছে। সব সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তন্ময়ের চার বন্ধুকে আটক করে জেরা চলছে।” ছাত্রের পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, ময়নাতদন্ত এবং শেষকৃত্যের কাজে ব্যস্ত থাকায় এ দিন অভিযোগ দায়ের করা সম্ভব হয়নি।

হাসপাতাল থেকে তন্ময়ের দেহ আনার সময়ে শোকার্ত পরিজন।—নিজস্ব চিত্র।

গত সোমবার পাঁচ বন্ধু যখন ডাকতে এসেছিল, সে সময় বাড়িতে তন্ময় একাই ছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। তন্ময়ের মা-বাবা বাড়িতে ফিরে তাঁকে মোবাইলে ফোন করেন। সে সময় তন্ময় বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে দেশবন্ধুপাড়ার মোড়ে আছে এবং দ্রুত ফিরে আসবেন বলে জানিয়েছিলেন বলে পরিবারের দাবি। প্রাথমিক জেরার পরে তন্ময়ের বন্ধুদের বক্তব্য নিয়ে ধন্দে রয়েছেন পুলিশের তদন্তকারী অফিসাররা। বন্ধুদের বয়ান অনুযায়ী, জাতীয় সড়কের দিক থেকে বাইক নিয়ে ফেরার সময়ে এক বন্ধুর বাইকের পিছনে বসা তন্ময় পড়ে যান। সে সময় কেউ কিছু টের না পাওয়ায় বন্ধুরা এগিয়ে চলে যায়। তারও বেশ কিছুক্ষণ পরে সেতুর কাছে এক যুবক পড়ে আছে শুনে তারা ফের সেখানে ফিরে যায়।

পুলিশের প্রশ্ন, বাইকের পিছন থেকে আরোহী পড়ে গেলে প্রথমে কোনও কারণে টের না পেলেও, কিছু দূর গিয়ে চালকের জানতে পারার কথা। এ ক্ষেত্রে তা হল না কেন, তার সদুত্তর দিতে পারেনি তন্ময়ের বন্ধুরা। সেতুর কাছে এক যুবক পড়ে রয়েছে, এ খবর তারা কোথা থেকে শুনতে পেল, সে বিষয়েও চার বন্ধু চার রকম উত্তর দিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। সকলে মিলে জাতীয় সড়কের কোন দিকে গিয়েছিল তার জবাবেও দু’তিন রকম উত্তর মিলেছে বলে পুলিশের দাবি।

পুজোর সময়ে আগেও ওই বন্ধুদের সঙ্গে তন্ময় বেরিয়েছিলেন কি না, তাদের সঙ্গে পুরোনো কোনও বিবাদ ছিল কি না, তা-ও জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। সোমবার রাতে কয়েকজন যুবক জাতীয় সড়কের পাশে একটি ধাবার সামনে গোলমালে জড়িয়ে পড়েছিল বলেও পুলিশ জানিয়েছে। সেই ঘটনার সঙ্গে তন্ময় বা তার বন্ধুদের যোগ রয়েছে কি না তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

তন্ময়ের বাবা অশোকবাবু অবসরপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী। তন্ময়ের মামা আইনজীবী তপন ভট্টাচার্য বলেন, “বন্ধুরাই ওঁকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে বাড়িতে ফোন করেছিল। এটা নিছক দুর্ঘটনা হতে পারে না। বাড়ি থেকে বন্ধুদের সঙ্গে বার হয়ে সে নিশ্চয়ই একা গোশালা মোড়ের দিকে যায়নি। বাইক থেকে পড়ে গেলে বন্ধুরা টের পাবে না এটা হতে পারে না।”

engineering student death tanmoy chakraborty jalpaiguri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy