উত্তরবঙ্গ উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সামিল হয়েছিল শতাধিক পড়ুয়া। দিনভর স্কুল করার পর বেলা তিনটে নাগাদ তাদের উৎসবের র্যালিতে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপরেও তাদের টিফিন দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রায়গঞ্জের সুদর্শনপুর দ্বারিকাপ্রসাদ উচ্চ বিদ্যাচক্র হাইস্কুল মাঠে জেলা পর্যায়ের ওই উৎসবের উদ্বোধন করেন রাজ্যের মৎস্য বিষয়ক পরিষদীয় সচিব অমল আচার্য। সেখান থেকে প্রায় ৭০০ জন পড়ুয়াকে নিয়ে প্রশাসনিক কর্তারা র্যালি করে দেড় কিলোমিটার দূরে অনুষ্ঠানস্থলে হাজির হন। কিন্তু অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছনোর পর দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও টিফিন না পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়ে পড়ুয়ারা। ক্ষোভ ছড়ায় বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যেও। তাঁরা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার আগেই পড়ুয়াদের নিয়ে সেখান থেকে চলে যান।
প্রশাসনিক কর্তাদের সমন্বয়ের অভাবে পড়ুয়াদের টিফিন দেওয়া সম্ভব হয়নি বলে মঞ্চেই দুঃখ প্রকাশ করে নেন জেলাশাসক স্মিতাদেবী। তিনি বলেন, “জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিককে পড়ুয়াদের টিফিন দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কেনও এমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” রাজ্যের পরিষদীয় সচিব অমলবাবুও ওই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি জানান, আজ, ২৩ জানুয়ারি নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিনের সরকারি অনুষ্ঠানে সমস্ত পড়ুয়াকে সামিল করিয়ে উপহার ও টিফিন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণির পড়ুয়াদের অনেকেই জানায়, তারা সকাল সাড়ে ১০টায় স্কুলে গিয়েছিল। তার পর স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা বেলা তিনটে নাগাদ তাদের স্টেশন চত্বরে নিয়ে যান। সেখান থেকে এরপর তারা দেড় কিলোমিটার হেঁটে অনুষ্ঠান স্থলে যায়। তাদের অভিযোগ, “টিফিন তো দূরের কথা। এতটা দূর হেঁটে ক্লান্ত হয়ে অনুষ্ঠানস্থলে এসে পৌঁছনোর পর আমরা প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে বার বার জল চেয়েও পাইনি।”
যে স্কুলের মাঠে উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে, সেই সুদর্শনপুর দ্বারিকাপ্রসাদ উচ্চ বিদ্যাচক্রের প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ দত্ত বলেন, “লক্ষ লক্ষ টাকা সরকারি খরচে উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। পড়ুয়াদের সামিল করিয়ে তাদের টিফিন ও জল দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি প্রশাসন। এই ঘটনার পর ভবিষ্যতে কোনও স্কুল কর্তৃপক্ষ পড়ুয়াদের সরকারি অনুষ্ঠানে সামিল করবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।” তিনি জানান, এই ঘটনার পর বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ পড়ুয়াদের স্কুলে নিয়ে গিয়ে তাদের কেক, মিষ্টি, ডিমসেদ্ধ ও ফল খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেন। অভিজিৎবাবুর অভিযোগ, তাঁর স্কুলের মাঠে সরকারি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলেও তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক দীপক কেরকেট্টা জানান, তিনি ছুটিতে থাকায় অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন তাঁর দফতরের কর্মী অমিয়কুমার জানাকে। তাই যা বলার তিনিই বলতে পারবেন। অমিয়বাবু দাবি করেছেন, তাঁকে কেউ পড়ুয়াদের টিফিন দেওয়ার দায়িত্ব দেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy