Advertisement
E-Paper

এসি খারাপ হতেই কামরা গেল আরশোলাদের দখলে

ইঞ্জিন বিকল, বাতানুকুল যন্ত্রে বিভ্রাট, সিটের নীচ আরশোলা-ছারপোকার দাপাদাপির অভিযোগ। সব মিলিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় তিন ঘণ্টা ধরে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে আপ দ্বারকা এক্সপ্রেসের এসি থ্রি টিয়ারের যাত্রীদের।

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৩৩

ইঞ্জিন বিকল, বাতানুকুল যন্ত্রে বিভ্রাট, সিটের নীচ আরশোলা-ছারপোকার দাপাদাপির অভিযোগ। সব মিলিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় তিন ঘণ্টা ধরে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে আপ দ্বারকা এক্সপ্রেসের এসি থ্রি টিয়ারের যাত্রীদের।

ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাওয়ায় গুয়াহাটি থেকে গুজরাতের ওখাগামী ওই ট্রেনে সোমবার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকে। এক সময়ে এসি থ্রি টিয়ারের দু’টি কামরায় যান্ত্রিক গোলযোগ শুরু হয়। দু’টি কামরার বাতানুকূল যন্ত্র হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। যাত্রীদের অভিযোগ, এরপরেই সিটের নীচ থেকে আরশোলার দল বেরোতে শুরু করে। কামরা জুড়ে আরশোলা বাহিনী ঘোরাঘুরি শুরু করে। কামরার মেঝে থেকে শৌচাগারের দেওয়ালে আরশোলা দেখা যায়। যার জেরে প্রশ্ন উঠেছে ট্রেনের রক্ষণাবেক্ষণ ও যাত্রী পরিষেবা নিয়ে।

নিউ জলপাইগুড়ির সিনিয়র এরিয়া ম্যানেজার পার্থ শীল বলেন, “ইঞ্জিনের গোলমালের জন্য দ্বারকা এক্সপ্রেস অন্তত তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়েছিল। তবে বাতানুকুল যন্ত্র বিকল হয়ে যায়নি। অন্য কোনও সমস্যা হতে পারে। আরশোলা সংক্রান্ত অভিযোগ যথাযথ জায়গায় জানানো হয়েছে।”

গুয়াহাটির বাসিন্দা ব্যবসায়ী বিবেক অগ্রবাল বি-৩ নম্বর কোচে ছিলেন। তাঁর অভিযোগ, বাতানুকুল যন্ত্র কাজ করা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কিছু পরে সিটের নীচ থেকে আরশোলা বের হয়ে কামরার মেঝেতে চক্কর কাটতে থাকে। দেওয়াল বেয়েও আরশোলা উঠতে থাকে। সহযাত্রী অতুল ব্যাসের নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের রক্ষনাবেক্ষণ এবং সাফাই অফিসে গিয়ে অভিযোগ জানালেও ফল মেলেনি বলে দাবি। বিবেকবাবুর অভিযোগ, “বেশ কয়েকবার অভিযোগ জানানো পরে, এক সাফাইকর্মী কামরায় ঢুকে কোনও ওষুধ ছড়িয়ে দেন। তাতে কোনও কাজ হয়নি। পরে বুঝলাম ওই কর্মী শুধুমাত্র সুগন্ধি ছড়িয়েছেন।” আরেক যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, “স্বাচ্ছন্দ্যের কারণেই বেশি দাম দিয়ে বাতানুকুল কামরার আসন সংরক্ষণ করি। শুনছি, রেলেও এখন স্বচ্ছ ভারত অভিযান চলছে, তার পরিণাম এমন হবে ভাবতে পারিনি।”

উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেল সূত্রে জানা দিয়েছে, গত সোমবার দ্বারকা এক্সপ্রেস নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে ঢোকার পর থেকে বিপত্তির শুরু। সন্ধ্যে সাড়ে ৬টা নাগাদ নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে ঢোকার মিনিট দশেক পরে দ্বারকা এক্সপ্রেস ছাড়ার সিগন্যাল পেয়ে যায়। কিন্তু ইঞ্জিন বিভ্রাটের কারণে ট্রেন ছাড়তে পারেননি চালক। পরীক্ষার পরে দেখা যায়, ইঞ্জিন থেকে ডিজেল লিক করে করতে শুরু করেছে। প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টাতেও মেরামতি সম্ভব না হওয়ায় রেলের সদর দফতরে খবর পাঠানো হয়। সেখান থেকে আসা নির্দেশ মতো ইঞ্জিন বদলে দেওয়া হয় দ্বারকা এক্সপ্রেসের। তবে সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়ে অন্য ট্রেনকে যেতে দেওয়ার জন্য সাপ্তাহিক এই ট্রেনটিকে আরও দু’ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হয় বলে অভিযোগ। তৃতীয় শ্রেণির বাতানুকুল দু’টি কামরার যাত্রীদের দুর্ভোগ মাত্রা ছাড়িয়ে যায় বলে অভিযোগ।

নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন কর্তৃপক্ষের তরফে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, যাত্রীদের থেকে অভিযোগ পেয়েই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। তবে আরশোলা বা ছারপোকা মারার কাজ এক ঘণ্টায় সম্ভব নয়। গুয়াহাটি থেকে ছাড়া ট্রেনগুলিতে পরিচ্ছন্নতার সমস্যা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন সূত্রেও গুয়াহাটি স্টেশন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। স্টেশন কর্তৃপক্ষের যুক্তি মানতে রাজি নন নিউ জলপাইগুড়ি রেল যাত্রী কল্যাণ সমিতির সভাপতি দীপক মোহান্তি। তিনি অভিযোগ করেন, “যাত্রীদের সঙ্গে আমি নিজেও স্টেশন কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। কিন্তু কোনও ফল মেলেনি। কামরাটি পুরো সাফ করলে হয়ত আরশোলার দাপট কিছুটা কমত, তাও হয়নি।” দীপকবাবু জানিয়েছেন, প্রতিটি ট্রেনের পরিচ্ছন্নতা নিয়ে সমীক্ষা চালিয়ে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ জানানো হবে।

anirban roy siliguri ac
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy