Advertisement
E-Paper

কাউন্সিলরকে গালি, ধৃত আইনজীবী

এক তৃণমূল কাউন্সিলরকে গালি দেওয়ার অভিযোগে মালদহ শহরের এক আইনজীবীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ঘটনাচক্রে, ওই আইনজীবী গত ২৩ মার্চ ইংরেজবাজার থানায় পুরসভার চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীর বিরুদ্ধে তৃণমূলের দলীয় তহবিলে দু’কোটি টাকা চাঁদা চাওয়ার হুমকির অভিযোগ করেছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:৩২

এক তৃণমূল কাউন্সিলরকে গালি দেওয়ার অভিযোগে মালদহ শহরের এক আইনজীবীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ঘটনাচক্রে, ওই আইনজীবী গত ২৩ মার্চ ইংরেজবাজার থানায় পুরসভার চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীর বিরুদ্ধে তৃণমূলের দলীয় তহবিলে দু’কোটি টাকা চাঁদা চাওয়ার হুমকির অভিযোগ করেছিলেন।

এই ঘটনার পরে কংগ্রেসের কটাক্ষ, জেলারই মোজমপুরে বোমাবাজি-সংঘর্ষ চলছেই, তা থামাতে পারছে না পুলিশ। অথচ মালদহে গালি দেওয়ার অভিযোগে আইনজীবীকে ধরা হচ্ছে।

জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যকরী সভানেত্রী তথা ইংরেজবাজার পুরসভার কাউন্সিলর প্রতিভা সিংহের অভিযোগ, ওই আইনজীবী সঞ্জয় শর্মা বেআইনিভাবে বহুতল বাড়ি করছেন। পুরসভা থেকে ওই বেআইনি বহুতল বাড়ির কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। ফের তাঁর বাড়ির কাজ শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, “পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মীরা বৃহস্পতিবার ওই আইনজীবীর বাড়িতে যান। উনি তাঁদের গালাগাজ করে তাড়িয়ে দেন। এর পর ওই আইনজীবী আমার বাড়িতে চড়াও হয়ে আমাকেও অকথ্য গালিগালাজ করেছেন। আমাকে দেখে নেবেন বলে হুমকি দিয়েছেন।” এ দিন সকালে পুলিশ সঞ্জয়বাবুকে গ্রেফতার করে। তাঁকে আদালতে তোলা হলে মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন।

সঞ্জয়বাবু সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “প্রতিভা সিংহ তাঁর ভাইয়ের নামে বেসরকারি বিমা সংস্থার হয়ে কাজ করেন। উনি লোক পাঠিয়ে আমাকে বিমা করার জন্য চাপ দেন। রাজি হইনি। বিমা না করালে বাড়ির প্ল্যানও উনি আটকে দেন। আমার বেলায় থানায় মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।” তবে প্রতিভাদেবী এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তাঁর মন্তব্য, “আমি বিমা সংস্থার সঙ্গে যুক্ত এটা প্রমাণ করতে না পারলে ওই আইনজীবীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করব।”

জেলারই মোজমপুরে গত ২১ দিন ধরে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ চলেছে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে। গুলিতে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। পুলিশ সেখানে অবশ্য মূল অভিযুক্ত কাউকেই ধরতে পারেনি। এমনকী, জেলার আরেক মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র সেখানে যেতে চাইলেও তাঁকে নিষেধ করে পুলিশ। তৃণমূল কংগ্রেসের দুই গোষ্ঠীর ৩৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হলেও পুলিশ মাত্র দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। ৩৪ জনকে পুলিশ এখনও ধরতে পারেনি। তাই এ দিনের ঘটনার পরে পুলিশের ‘অতিসক্রিয়তা’র অভিযোগ তুলেছেন অনেকেই।

ঘটনাচক্রে, পুলিশ যাঁকে গ্রেফতার করেছে সেই আইনজীবী গত ২৩ মার্চ ইংরেজবাজার থানায় কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীর বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় তহবিলে ২ কোটি টাকা চাঁদা চাওয়ার হুমকির অভিযোগ করেন। পুলিশ সেই আইনজীবীর অভিযোগ আদালতে পেশ করে। আদালত পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু ওই আইনজীবী অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ দিতে না পারায় এখন সেই তদন্ত মাঝপথে ঝুলে রয়েছে। আইনজীবীকে গ্রেফতারের ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দোপাধ্যায় বলেন, “একজন মহিলা কাউন্সিলরের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ আইনজাবীকে গ্রেফতার করেছে। একজন মহিলা কাউন্সিলরকে তাঁর বাড়িতে গিয়ে গালিগালাজ করবে এটা তো হতে পারে না।” ধৃত আইনজীবী মন্ত্রীর বিরুদ্ধে যে ২ কোটি টাকার চাওযার যে অভিযোগ করেছিলেন সেই মামলা কী অবস্থায় রয়েছে? জবাবে জেলা পুলিশ সুপার বলেন, “আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানি না। আমি সেই সময় মালদহে ছিলাম না।”

রাজ্যের মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুবাবু অবশ্য দাবি করেছেন, ওই আইনজীবী তাঁর বিরুদ্ধে টাকা চাওয়ার মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করে এখন মিটমাটের জন্য আলোচনায় বসতে চাইছেন। তাঁর অভিযোগ, “ওই আইনজীবী একজন প্রতারক। তাই মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। আমাদের কাউন্সিলরকে গালি দিয়েছেন। তাই কাউন্সিলরকে থানায় যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।” এই ব্যাপারে মালদহের তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভানেত্রী তথা মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র মন্তব্য করতে চাননি।

জেলার কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরীর অভিযোগ, “মোজমপুরে কোউকে ধরা যাচ্ছে না। অথচ গালি দেওয়ার অভিযোগ পেয়ে পুলিশ অতিসক্রিয় হয়ে আইনজীবীকে গ্রেফতার করেছে। মোজমপুরে দুপক্ষই তো তৃণমূলের। এক পক্ষকে ধরলে অন্য পক্ষের রোষের মুখে পড়বে পুলিশ।”

maldah councillor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy