Advertisement
E-Paper

কিশোরের দেহ উদ্ধার, ধৃত ৩

প্রতিবেশী এক কিশোরীকে প্রেমপত্র দিয়েছিল এক কিশোর। ওই কিশোরীর বাড়ির লোকজন সে কথা জানার পরে মহম্মদ জারুল (১২) নামে কিশোরকে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ ওঠে। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জারুলের দেহ স্থানীয় একটি চা বাগানের গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৪ ০১:২৩

প্রতিবেশী এক কিশোরীকে প্রেমপত্র দিয়েছিল এক কিশোর। ওই কিশোরীর বাড়ির লোকজন সে কথা জানার পরে মহম্মদ জারুল (১২) নামে কিশোরকে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ ওঠে। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জারুলের দেহ স্থানীয় একটি চা বাগানের গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। রবিবার শিলিগুড়ির মাটিগাড়া থানার লেনিন কলোনি এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ একটি আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা করে তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনায় যুক্ত সন্দেহে কিশোরীর বাবা মহম্মদ রুস্তম, মা আঞ্জুমা খাতুন এবং মেসো দেবনারায়ণ গোঁসাইকে গ্রেফতার করে। আরও এক অভিযুক্ত দেবনারায়ণের স্ত্রী দেবন্তী পালিয়েছে। যদিও কিশোরের মা এবং প্রতিবেশীদের সন্দেহ, ঘটনাটি খুনের।

রবিবাক ১২টা নাগাদ মাটিগাড়া চা বাগানের শেড ট্রিতে ঝুলন্ত অবস্থায় জারুলের দেহ উদ্ধার করা হয়। এ দিনই ভোরে জারুল এবং তার সৎ মাকে মারধর করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। এ দিন দুপুরে ঘটনার কথা জানাজানি হতেই অভিযুক্তদের বাড়ির সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসীদের একাংশ। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা লিগাল এড ফোরাম এবং সিনি-র সদস্যরা পরিস্থিতি সামলান। পরে তাঁদের সাহায্যে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মৃত কিশোরের মা।

শিলিগুড়ির পুলিশের এডিসি কে সাভারি রাজকুমার বলেন, “থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। বাকিদেরও ধরা হবে।” ঘটনায় অভিযুক্তদের কড়া শাস্তি চাইছেন দার্জিলিং জেলা লিগাল এড ফোরাম সম্পাদক অমিত সরকার। তিনি বলেন, “পুলিশে অভিযুক্তদের কড়া শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। আমাদের সন্দেহ কিশোরকে মেরে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

পুলিশ সূত্রে খবর, জারুল শিব মন্দিরের একটি কাঠের দোকানে কাজ করত। তিন বছর আগেই সে পড়াশোনা ছেড়ে দেয়। তার বাবা মারা গিয়েছেন ১০ বছর আগেই। মা তারও আগে মারা যান। সৎ মা মনোহরা বেওয়ার কাছেই ২ বছর বয়স থেকে সে মানুষ। ধৃত কিশোরীর বাবা, মা রুস্তম এবং আঞ্জুমা ভিক্ষাবৃত্তি করেন। তাঁদের দু’জনেরই পায়ে সমস্যা রয়েছে। বাকি দু’জন অভিযুক্ত পেশায় ফেরিওয়ালা। দু’দিন আগে জারুল পাড়ারই সমবয়সী এক কিশোরীকে প্রেমপত্র দিয়েছিল। সেই চিঠির কথা কোনওভাবে জানতে পারে কিশোরীর বাবা-মা।

এদিন জারুলদের বাড়িতে এসে তাকে ডেকে নিয়ে যায় অভিযুক্তরা। সেই সময় তাদের সঙ্গে লাঠি, বাঁশ, দা ছিল। মারধরের পর জারুলকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিশোর বাড়িতে এসে সব জানায় তার সৎ মাকে। এর কিছুক্ষণ পর ফের অভিযুক্তরা এসে মারধর করেন মনোহরাকে। মনোহরা বলেন, “আমাকেও মারধর করা হয়। খুনের হুমকি দেয়। ছেলেকে দেখে নেবে বলে শাসিয়ে দিয়ে যায়। ছেলেকে পরে কাজে পাঠিয়ে দিই। এখন মনে হচ্ছে, ওরাই ছেলেকে মেরে দিয়েছে।”

ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ মারধরের ঘটনার পর সাড়ে ৬টা নাগাদ জারুল কাজে যায়। মনোহরা সকাল ১০টায় ছেলেকে খাবার দিতে গিয়ে জানতে পারেন, ছেলে কাজে যায়নি। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ পড়শি এক ব্যক্তি মনোহরাকে মোবাইলে ফোন করে ছেলের দেহ উদ্ধারের খবর দেন। অন্য দিকে অভিযুক্তরা পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, তারা জারুলকে মারধর বা খুন করেনি। শুধুমাত্র মেয়েকে প্রেমপত্র দেওয়ায় বকাঝকা করেছিল।

md zarul matigara lenin colony
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy