Advertisement
E-Paper

টাকা চেয়ে মার, ‘দখল’ সারদার এজেন্টের জমি

বাড়িতে ঢুকে সারদার এক এজেন্টকে মারধর করে তাঁর জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে একদল আমানতকারীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ‘সারদা কান্ডের জেরে জমি দখল’ বলে ওই জমিতে ব্যানারও ঝোলানো হয়েছে। সোমবার সকালে তুফানগঞ্জ থানার নাককাটিগছের শিকারপুর এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। গোলমালের সময় আমানতকারীদের একাংশ ওই এজেন্টের বাড়ি থেকে একটি গরু ও পাম্পসেট তুলে নিয়ে যান বলেও অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৪ ০১:৫২
এই সেই জমি। —নিজস্ব চিত্র।

এই সেই জমি। —নিজস্ব চিত্র।

বাড়িতে ঢুকে সারদার এক এজেন্টকে মারধর করে তাঁর জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে একদল আমানতকারীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ‘সারদা কান্ডের জেরে জমি দখল’ বলে ওই জমিতে ব্যানারও ঝোলানো হয়েছে। সোমবার সকালে তুফানগঞ্জ থানার নাককাটিগছের শিকারপুর এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। গোলমালের সময় আমানতকারীদের একাংশ ওই এজেন্টের বাড়ি থেকে একটি গরু ও পাম্পসেট তুলে নিয়ে যান বলেও অভিযোগ। সন্ধ্যা অবধি অবশ্য পুলিশের কাছে এই বিষয়ে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, স্থানীয় স্তরেই বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

নাককাটিগছ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান শচীন্দ্রনাথ বর্মন বলেন, “সিপিএমের উস্কানিতেই গোলমাল হয়েছে। এজেন্ট ও আমানতকারী দু’পক্ষের লোকেরা আমার কাছে এসেছিলেন। দুই পক্ষই আপাতত আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটাতে চান। আজ, মঙ্গলবার আলোচনায় বসা হবে।” সিপিএম অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দলের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য তমসের আলি বলেন, “আমাদের উস্কানির ব্যাপার নেই। দুই পক্ষই তৃণমূলের লোক।”

এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, এ দিন সকালে একদল আমানতকারী শিকারপুরের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম নামে সারদার ওই এজেন্টের বাড়ির পাশে জমায়েত হন। তাঁদের মধ্যেই তিন চার জন ঘরের ভিতরে ঢুকে পড়েন। রফিকুলবাবু তখন বিছানায় শুয়ে ছিলেন। টাকা ফেরতের নিশ্চয়তার দাবিতে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে ওই আমানতকারীরা বিছানা থেকে রফিকুলবাবুকে টেনে বাড়ির উঠোনে নিয়ে আসেন। তার পর মারধর করা হয়। পরিবারের লোকেরা বাঁচাতে এগিয়ে এলে তাঁরাও আমানতকারীদের রোষের মুখে পড়েন। প্রায় একঘন্টা ধরে রফিকুলবাবুকে নিয়ে পরিবারের লোকদের সঙ্গে ক্ষুব্ধ আমানতকারীদের ট্যানা হেঁচড়া চলে। পরে তারা ঘরের জামাকাপড়, বাসনপত্র ছুড়ে ফেলে দিয়ে একটি গরু ও পাম্পসেট তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। বাড়ির কাছেই ওই সারদা এজেন্টের ১২ কাঠা জমিতে গিয়ে ব্যানার সেঁটে চলে যান। এমনকি ছেলেকে বাঁচাতে গেলে আমানতকারীরা রফিকুলের মা-কেও হেনস্তা করে বলে অভিযোগ।

রফিকুলের বাবা মহিরুদ্দিন মিঁয়ার দাবি, “আমাদের পরিবার তৃণমূল সমর্থক। এদিন যারা বাড়িতে গোলমাল করল, সেখানে বিভিন্ন দলের লোকেরা ছিলেন। পেটের টানে সারদার এজেন্টের কাজ নেওয়া ছেলেটাকে বাড়িতে ঢুকে যে ভাবে মারধর করা হল, তা ভাবতেই পারছি না।” দশ মাসের ছেলে কোলে নিয়ে রফিকুলবাবুর স্ত্রী রাজিমা বিবি বলেন, “এর আগেও আমার বাচ্চাকে অপহরণ করার হুমকি দিয়েছিল কিছু আমানতকারী। বাড়িতে ঢুকে মারধরের পর গরু, পাম্পসেট তুলে নিয়ে ওরা যে ভাবে জমি দখল করেছে, তাতে আতঙ্কে আছি।”

পুলিশে অভিযোগ জানানো নিয়ে দোলাচলে ভুগছেন ওই এজেন্টের পরিবার। মহিরুদ্দিনের দাবি, “ছেলে ঘটনার পর তুফানগঞ্জ শহরে গিয়েছে। বিভিন্ন মহলে আলোচনা করে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ও নেবে।” কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”

স্থানীয় সূত্রের খবর, বিক্ষোভকারীরা নাককাটিগছের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। ২০০৯ সাল থেকে রফিকুলবাবু সারদার এজেন্টের কাজ করছিলেন। প্রায় ২০০ আমানতকারী তাঁর মাধ্যমে সারদায় প্রায় ১২ লক্ষ টাকা নানা প্রকল্পে জমা করেন। এর মধ্যে কেবলমাত্র ৫-৬ জনকেই তিনি টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করতে পেরেছেন। বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছেন, এর আগেও টাকা মেটানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। এদিন টাকা নিয়ে আলোচনায় গেলে এজেন্টের বাবা জানান, টাকা সরকার দেবে। এই নিয়ে গোলমাল শুরু হয়।

tufanganj sarada
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy