Advertisement
E-Paper

ট্র্যাফিক কনস্টেবলকে চড় তৃণমূল নেতার

শহরের রাস্তায় তৃণমূল যুব নেতার ‘দাদাগিরি’র অভিযোগ উঠল জলপাইগুড়িতে। কর্তব্যরত এক ট্রাফিক পুলিশ কনস্টেবলকে চড় মারার নালিশ করা হয়েছে জলপাইগুড়ির জেলা যুব তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ ঘটনাটি ঘটে জলপাইগুড়ির দিনবাজার এলাকায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৪ ০২:০৪
নৃপেন পালচৌধুরী। —নিজস্ব চিত্র।

নৃপেন পালচৌধুরী। —নিজস্ব চিত্র।

শহরের রাস্তায় তৃণমূল যুব নেতার ‘দাদাগিরি’র অভিযোগ উঠল জলপাইগুড়িতে। কর্তব্যরত এক ট্রাফিক পুলিশ কনস্টেবলকে চড় মারার নালিশ করা হয়েছে জলপাইগুড়ির জেলা যুব তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ ঘটনাটি ঘটে জলপাইগুড়ির দিনবাজার এলাকায়। ওই ট্রাফিক পুলিশকর্মী কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ, চড় মেরে কান ফাটিয়ে পুলিশ সুপারকে বলে বাইরে বদলি করার হুমকিও দিয়েছেন সৈকতবাবু। সৈকতবাবু অবশ্য সব অভিযোগই ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তাঁর দাবি, “আমার সঙ্গে পুলিশকর্মীর কোনও কথা হয়নি। এক গাড়ির চালকের সঙ্গে কথা হয়েছে। ট্রাফিক পুলিশের কর্মী চালকের কাছে একশো টাকা ঘুষ চান। আমি তার প্রতিবাদ করি। এর বাইরে কিছুই হয়নি।”

জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল অবশ্য বলেন, “ওই পুলিশকর্মীকে অভিযোগ দায়ের করতে বলেছি। ঘটনাটি নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছেন। এ দিন দার্জিলিঙের ম্যালে চৌরাস্তায় তাঁর সভাও ছিল। এর মধ্যে এই ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব। তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তীর বক্তব্য, “ঘটনাটি শুনেছি। দলীয় স্তরে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।” তাঁর সোজা কথা, “সরকারি কর্মী ও পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনা দল সমর্থন করে না। অভিযোগ সত্যি হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঘটনার সূত্রপাত এ দিন বেলা পৌনে ১২টা নাগাদ। দিনবাজার ট্রাফিক পোস্টের কাছে ওই সময় ডাবলু বি-৭৪-ইউ ০৫৪৭ নম্বরের ছোট গাড়ি নিয়ে সৈকতবাবু রাস্তা আটকে দাঁড়ান বলে ট্রাফিক পুলিশকর্মীদের অভিযোগ। ফলে ব্যস্ততম রাস্তার দু’পাশে বাস দাঁড়িয়ে যায়। ওই সময় ট্রাফিকে কর্তব্যরত কনস্টেবল নৃপেন পালচৌধুরী ছোট গাড়ির চালককে রাস্তা ছেড়ে দাঁড়াতে বলেন। কিন্তু চালক কর্ণপাত করেননি। এর পরে কড়া ভাবে গাড়ি সরাতে বললে বচসা বাঁধে। দ্বিতীয়বার গাড়ি সরানোর কথা বললে গাড়ির কাচ নামিয়ে সৈকতবাবু তাঁকে ধমক দেন। নৃপেনবাবু লিখিত অভিযোগে জানান, এরপরেই সৈকতবাবু গাড়ি থেকে নেমে তাঁকে চড় মারেন এবং ধাক্কা দেন। ঘটনাটি দেখে পথচারীরা এগিয়ে গেলে যুব নেতা পালিয়ে যান।

কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা অভিযোগপত্রে এই গোটা ঘটনা হুবহু উল্লেখ করেছেন নৃপেনবাবু। শাসক দলের নেতার মুখে ‘তুই তোকারি’ শুনে অবাক হয়ে যান বছর পঞ্চাশের ট্রাফিক কনস্টেবল। তিনি প্রতিবাদ করেন। অভিযোগ নৃপেনবাবু বলেন, “ওই সময় গাড়ি থেকে নেমে সৈকতবাবু চড় মেরে ধাক্কা দেন। আশপাশের লোকজন ছুটে এলে তিনি গাড়িতে উঠে পালিয়ে যান।”

দিনবাজার ট্রাফিক পোস্ট সংলগ্ন এলাকায় ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শাসক দলের নেতাকে এভাবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে পুলিশকে ধাক্কাধাক্কি করতে দেখে তাঁরা অবাক হয়ে যান। নৃপেনবাবুর বাঁ দিকের চোখের তলায় লাল হয়ে ফুলে যায়। কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ জানানোর পরে এক পুলিশকর্মীর আক্ষেপ, এভাবে নেতাদের দাদাগিরি চলতে থাকলে কে কাজ করবে!

slapped traffic constable tmc leader
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy