Advertisement
E-Paper

তৃণমূল কর্মীর হাতে কোপ, অভিযুক্ত আরএসপি

পাম্প সেট নিয়ে গোলমালের জেরে এক তৃণমূলকর্মীর হাতে ধারালো অস্ত্রের কোপ মেরে তাঁকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে জলপাইগুড়ির শামুকতলায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৪ ০৫:২৬
আহত দীপঙ্কর দাস। —নিজস্ব চিত্র।

আহত দীপঙ্কর দাস। —নিজস্ব চিত্র।

পাম্প সেট নিয়ে গোলমালের জেরে এক তৃণমূলকর্মীর হাতে ধারালো অস্ত্রের কোপ মেরে তাঁকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে জলপাইগুড়ির শামুকতলায়। বৃহস্পতিবার সকালে শামুকতলার বোরাগাড়ি এলাকার তৃণমূল কর্মী দীপঙ্কর দাসের উপর আরএসপি কর্মীরাই আক্রমণ করেছে বলে দাবি। তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা পর্যবেক্ষক সৌরভ চক্রবর্তী অভিযোগ করেছেন, “তৃণমূল করার জন্যই দীপঙ্করবাবুকে খুনের চেষ্টা করা হয়। ওই গ্রামে আরএসপি দীর্ঘদিন ক্ষমতায় রয়েছে। দীপঙ্করবাবু আমাদের সংগঠন বাড়াচ্ছিলেন। তাই ওর উপর এই হামলা চালিয়েছে আরএসপি।” তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আরএসপি-র ভাটিবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অলোকা দাস বলেন, “ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। পাম্পসেট নিয়ে দুই প্রতিবেশীর গোলমাল হয়। তৃণমূলের ভোটের মুখে এতে রাজনীতির রং লাগিয়েছে।”

ধারাল অস্ত্র দিয়ে দীপঙ্করবাবুর বাঁ কাঁধের নীচে কোপ মারা হয় বলে অভিযোগ। কাঁধের নীচের অংশ থেকে তাঁর হাত ঝুলে পড়ে। ঝুলে পড়া হাতের অংশকে গামছা ও বিছানার চাদর দিয়ে বেঁধে দলের কর্মী সমর্থকরা তাঁকে একটি পিকআপ ভ্যানে তুলে ভাটিবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে ঝুলে থাকা হাতের অংশটিকে ব্যান্ডেজে কাঁধের সঙ্গে বেঁধে দিয়ে আলিপুরদুয়ার মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। সকাল সাড়ে আটটার সময় ঘটনার পরে প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর্যন্ত হাতটি সেই অবস্থাতেই থাকে। সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ আলিপুরদুয়ার মহকুমা হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে ঘণ্টা দেড়েকের চেষ্টায় সেলাই করে হাতের ঝোলা অংশটি জুড়ে দেন চিকিৎসকরা। পরে এ দিন রাতেই তাঁকে কোচবিহারের একটি নাসির্ংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে। আপাতত তিনি সুস্থ রয়েছেন বলে পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে।

আলিপুরদুয়ার হাসপাতালের চিকিৎসক প্রলয় পণ্ডিত বলেন, “শুধু হাত ছিন্ন হয়েছে, তাই-ই নয়, বাঁ কাঁধ থেকে যে ভাবে হাতটি ঝুলছিল এবং রক্তক্ষরণ হয়েছে, তাতে ওই যুবকের প্রাণ সংশয় ছিল। ষাটটিরও বেশি সেলাই করে হাতটি জুড়তে হয়েছে। সে সময় ওই যুবককে রেফার করা হলে অধিক রক্তক্ষরণে পথে মৃত্যুরও আশঙ্কা ছিল।” দীপঙ্করবাবুর দাদা শঙ্করবাবু বলেন, “প্রথমে ভেবেছিলাম হাতটা বোধ হয় আর জোড়া লাগবে না। পরে চিকিৎসকরা তা জুড়ে দেন। ভাই আপাতত সুস্থই রয়েছে।”

এ দিনের ঘটনার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়কে জানিয়েছেন সৌরভবাবু। তৃণমূলের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা চালানোর অভিযোগ তুলেছে আরএসপিও। সংঘর্ষে আরএসপি’র ৪ জন ও তৃণমূলের ২ জন কর্মী জখম হয়েছেন বলে দু’দলের থেকে জানানো হয়েছে। আলিপুরদুয়ারের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক বিশ্বচাঁদ ঠাকুর বলেন, “দু’পক্ষই লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।”

কী ঘটেছিল এ দিন?

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধান খেতে জল দেওয়ার কাজে ব্যবহার করা পাম্প সেটের ভাড়াকে কেন্দ্র করে এ দিন সকালে দীপঙ্করবাবুর সঙ্গে আরএসপি কর্মী বিকাশ দাসের বচসা বাধে। দীপঙ্করবাবুর অভিযোগ, “বিকাশবাবুর পাম্পসেট ভাড়া নিয়ে চাষ করি। এ দিন তিনি এসে ভাড়া চান। আমি কয়েকদিন সময় চাই। তারপরেই তিনি আরএসপি-র লোকজন এনে মারধর শুরু করেন। কোপ মেরে হাত কেটে নেওয়ার চেষ্টা করেন।” বিকাশবাবুর পাল্টা অভিযোগ, “পাম্প সেটের ভাড়া চাইতে গেলেই দল বেঁধে হামলা হয়। আমার বাবা, মা, ভাইয়ের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। স্ত্রীকে মারধর করা হয়। আমি তৃণমূলে যোগ না দেওয়ায় চক্রান্ত করে হামলা হয়।”

rsp tmc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy