তৃণমূলের দুই কাউন্সিলরের বিবাদের জেরে বৃহস্পতিবার সকালে আড়াই ঘন্টা ইস্টার্ন বাইপাস অবরোধ করার জেরে ২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করল ভক্তিনগর থানার পুলিশ।
অভিযুক্তরা সকলেই ইস্টার্ন বাইপাস সংলগ্ন শিলিগুড়ি পুরসভার ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড ও আশপাশের বাসিন্দা ও ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর রঞ্জন শীলশর্মার অনুগামী বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেওয়া হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে। অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। রঞ্জনবাবুকে মারধরে মূল অভিযুক্ত গোবিন্দ সরকারকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তার খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন বলেন, “সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এই ঘটনায় অভিযুক্তকেও শীঘ্রই গ্রেফতার করা হবে। তবে রাস্তা অবরোধেরও মামলা করা হয়েছে।” পুলিশের ফটোগ্রাফারের তোলা ভিডিও ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। দু’এক দিনের মধ্যেই তাঁদেরও গ্রেফতার করতে পারে পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে কোনও রকম বন্ধ, অবরোধের বিপক্ষে। তাই নিজেদের দলের লোকেরাই অবরোধ করায় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলে খবর। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি মুকুল রায়ও একই কথা জানিয়েছিলেন। তার পরেই সক্রিয় হয় পুলিশ।
শিলিগুড়ি পুরসভার ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রঞ্জন শীলশর্মা। বুধবার রাতে বাড়িতে ঢোকার সময়ে রঞ্জনবাবুকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। রঞ্জনবাবু পাড়ারই বাসিন্দা গোবিন্দ সরকারের বিরুদ্ধে শিলিগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পরে ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কৃষ্ণ পাল এই ঘটনার পিছনে রয়েছে বলে অভিযোগ করেন। এ দিন কৃষ্ণবাবু বলেন, “গোটা ঘটনার প্রতি আমি নজর রেখেছিলাম। সমস্ত বিষয় দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে লিখিত ভাবে জানাচ্ছি। এটা তাঁদের ব্যক্তিগত বিবাদ। সেখানে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমার নাম জড়িয়ে দেওয়ার বিষয়টিও জানানো হবে।”
জমি কেনাবেচার লড়াইকেই এই বিবাদের মূল কারণ হিসেবে তুলে ধরেছিলেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। এ দিন তিনি বলেন, “আড়াই ঘণ্টা রাজ্য সড়ক অবরোধ থাকল অথচ ২৪ ঘণ্টার বেশি কেটে যাওয়ার পরেও কেউ গ্রেফতার হল না। অথচ বামপন্থীরা সাধারণ মিছিল করলেও মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এটা নিরপেক্ষ পুলিশ-প্রশাসনের দৃষ্টান্ত হতে পারে না। অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করার দাবি জানাচ্ছি।” ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কংগ্রেস সভাপতি শম্পা দাসও জমি-বাড়ি কেনাবেচাকেই মূল কারণ হিসেবে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, “এলাকায় কেউ জমি কিনতে বা বেচতে চাইলে কয়েকজন নেতাকে মোটা টাকা চাঁদা বা দক্ষিণা হিসেবে দিতে হয়। তার পরেই অনুমতি মেলে। এটা বন্ধ করার ব্যাপারে শীঘ্রই পুলিশি হস্তক্ষেপ দরকার।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy