Advertisement
E-Paper

দিনহাটায় জবরদখলে ধুঁকছে রাজমাতা দিঘি

সংস্কারের অভাব আর জবরদখলের চাপে ধুঁকছে শতাব্দী প্রাচীন রাজমাতা দিঘি। গরমে জলস্তর তলানিতে এসে ঠেকলেও পরিকল্পনা-মাফিক দিঘির সংস্কার, খনন, সৌন্দর্যায়নে পুরসভা এবং প্রশাসন কারও তরফে কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৪ ০১:৪৪

সংস্কারের অভাব আর জবরদখলের চাপে ধুঁকছে শতাব্দী প্রাচীন রাজমাতা দিঘি। গরমে জলস্তর তলানিতে এসে ঠেকলেও পরিকল্পনা-মাফিক দিঘির সংস্কার, খনন, সৌন্দর্যায়নে পুরসভা এবং প্রশাসন কারও তরফে কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় আগুন লেগে গেলে ভয়াবহ পরিণতির আশঙ্কা করছেন লাগোয়া এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা।

বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রাজাদের আমলে ওই দিঘি খনন করা হয়। জৈন মন্দির লাগোয়া এলাকায় প্রায় তিন একর জমির ওপর দিঘিটি পুরসভার মালিকাধীন। দিঘি লাগোয়া চত্বরের জমি সরকারি খতিয়ানভুক্ত। ওই জমির একাংশ ইতিমধ্যে জবরদখল হয়েছে। আগাছার জঙ্গলে ঢেকে গিয়েছে গোটা এলাকা। দীর্ঘ দিন খনন না হওয়ায় জলধারণ ক্ষমতা কমেছে। গরম পড়তে জলস্তর এতটাই কমে গিয়েছে যে দ্রুত সংস্কার না হলে দিঘি শুকিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁরা। পুরসভা ও প্রশাসনে এ নিয়ে জানানো হলেও দিঘির বেহাল দশা ঘোঁচাতে কারও উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।

এই ঘটনায় বাসিন্দারা তো বটেই ব্যবসায়ী মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দিঘির কাছেই রয়েছে ঘিঞ্জি চওড়াহাট বাজার, পাট-তামাকের গুদাম। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, আগুন লাগলে সেখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়তো সম্ভব হবে না। তাই রাজমাতা দিঘির হাল ফেরাতে আন্দোলনে ব্যবসায়ীরা। ২৪ মে ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্মেলনে আন্দোলন রুপরেখা তৈরির পরিকল্পনা পাকা। মহকুমাশাসক কাজল সাহা এই প্রসঙ্গে বলেন, “ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে রাজমাতা দিঘি সংলগ্ন এলাকা নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। তা দেখে দিঘির হাল ফেরানোর ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

যদিও এক বছর আগে প্রশাসন, পুরসভা, ব্যবসায়ী সংগঠনের কর্তাদের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক হয়েছিল। সেখানে দিঘির হাল ফেরাতে একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দিনহাটা পুরসভার চেয়ারম্যান চন্দন ঘোষ বলেন, “দিঘি সংস্কার, সৌন্দর্যায়নে গড়িমসির কথা ঠিক নয়। তিন বছর আগে দিঘিটি শেষ বার খনন করা হয়। কিন্তু দিঘির লাগোয়া সরকারি খতিয়ানভুক্ত জমি জবরদখল হওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। কিছু দিন আগে কাজ শুরুর চেষ্টা হলেও তা করা যায়নি। জমি খালি করে প্রশাসন পুরসভাকে হস্তান্তরের জন্য মহকুমা ও জেলা প্রশাসনে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

ওই চিঠি দেওয়ার পরে সাত মাস পেরিয়েছে। কিন্তু দিঘির হাল ফেরাতে উদ্যোগ চোখে পড়েনি। পুরসভা ও প্রশাসনের এমন ‘দীর্ঘসূত্রতায়’ ক্ষোভ বেড়েছে বাসিন্দাদের। দিনহাটা মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষে সম্পাদক রাণা গোস্বামী বলেন, “দিঘিটি প্রায় মজে যাওয়ায় চওড়াহাট বাজার বা কোনও গুদামে আগুন লাগলে সেখান থেকে জলের ব্যবস্থা করার সমস্যা আগেও হয়েছে। অথচ রাজমাতা দিঘি সংস্কার নিয়ে টালবাহানা চলছে। চওড়াহাটে ব্যবসায়ীদের সম্মেলনে দিঘির হাল ফেরাতে আন্দোলনের রুপরেখা ঠিক করব।” এই প্রসঙ্গে দিনহাটা নাগরিক মঞ্চের সম্পাদক জয়গোপাল ভৌমিক বলেন, “দিঘির তিন দিকে রাস্তা জবর দখলে বন্ধ। জল প্রায় শুকিয়ে গিয়েথে। পুরসভা-প্রশাসন কেন সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হচ্ছে না সেটাই বড় প্রশ্ন। আন্তরিকতা থাকলে এই দিঘি শহরের অন্যতম আকর্ষণ হতে পারত।”

dinhata rajmaata dighi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy