Advertisement
E-Paper

দরজা ভেঙে উদ্ধার হল চার জনের দেহ

আর্থিক সমস্যার জেরে স্ত্রী, সাত বছরের মেয়ে ও বৃদ্ধা মাকে খুন করে এক ব্যক্তি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার সকালে শিলিগুড়ির নবগ্রাম এলাকার একটি বন্ধ বাড়ির দরজা ভেঙে ওই চারজনের পচাগলা দেহ পুলিশ উদ্ধার করেছে। পড়শিরা পুলিশকে জানিয়েছেন, বুধবার থেকে ওই বাড়ির কাউকে বাইরে বার হতে দেখা যায়নি। বাড়ির দরজা-জানালাও খোলেনি। এদিন সকালে তীব্র দুর্গন্ধ বার হতে থাকলে পড়শিরা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ বাড়ির দরজা ভেঙে দেহগুলি উদ্ধার করে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:৪৫
শিলিগুড়িতে সেই বাড়ির পড়শিদের ভিড়। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

শিলিগুড়িতে সেই বাড়ির পড়শিদের ভিড়। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

আর্থিক সমস্যার জেরে স্ত্রী, সাত বছরের মেয়ে ও বৃদ্ধা মাকে খুন করে এক ব্যক্তি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার সকালে শিলিগুড়ির নবগ্রাম এলাকার একটি বন্ধ বাড়ির দরজা ভেঙে ওই চারজনের পচাগলা দেহ পুলিশ উদ্ধার করেছে। পড়শিরা পুলিশকে জানিয়েছেন, বুধবার থেকে ওই বাড়ির কাউকে বাইরে বার হতে দেখা যায়নি। বাড়ির দরজা-জানালাও খোলেনি। এদিন সকালে তীব্র দুর্গন্ধ বার হতে থাকলে পড়শিরা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ বাড়ির দরজা ভেঙে দেহগুলি উদ্ধার করে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম সুপ্রভাত সাহা (৪২), তাঁর স্ত্রী মিঠু সাহা (৩২), ৭ বছরের মেয়ে মানসী এবং মা গীতা দেবী (৬০)। মিঠু দেবী সাড়ে তিন মাসের অন্ত্বঃসত্ত্বা ছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। তিন জনের গলাতেই আঙ্গুলের ছাপ পেয়েছে পুলিশ। এর থেকেই পুলিশের সন্দেহ তিনজনকেই শ্বাসরোধ করে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছেন সুপ্রভাত বাবু।

একটি ঘরে বিছানা থেকে মিঠু দেবী এবং মানসীর দেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং পাশের ঘরে মেলে বৃদ্ধা গীতা দেবীর দেহ। এই ঘর থেকেই ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে সুপ্রভাতবাবুর। সে কারণেই পুলিশ মনে করছে প্রথমে স্ত্রী ও মেয়েকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন সুপ্রভাতবাবু। তার পরে পাশের ঘরে থাকা মাকেও খুন করে আত্মঘাতী হন তিনি । গীতাদেবীর বালিশের নীচ থেকে একটি ‘সুইসাইড নোট’ পাওয়া গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। নিউ জলপাইগুড়ি ফাঁড়ি সূত্রে জানা গিয়েছে, সুপ্রভাতবাবুর নাম লেখা সেই নোটে উল্লেখ করা হয়েছে, এমন কিছু সমস্যা রয়েছে, যা কাউকে বলা যাবে না।

শিলিগুড়ি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার অ্যংমু গ্যামসো ভুটিয়া বলেন, “তদন্ত চলছে। ফরেন্সিক দলও বাড়িটি পরীক্ষা করেছে। ঠিক কী কারণে ঘটনাটি ঘটেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরিবারের অন্য সদস্যদেরও জেরা করা হচ্ছে।”

বাড়ির কাছেই গেট বাজার এলাকায় সুপ্রভাতবাবুর দোকান রয়েছে। এই দোকানে ধোঁয়া পরীক্ষার পাশাপাশি এবং সেলাইয়ের সুতো, বোতাম সহ নানা সরঞ্জাম বিক্রি হয়। গত বুধবার থেকে দোকানটি বন্ধ ছিল বলে এলাকার ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। সুপ্রভাতবাবু এবং তাঁর স্ত্রী মিঠু দেবী দু’জনেই দোকানে বসতেন। মঙ্গলবার রাতে মিঠু দেবীর সঙ্গে তাঁর মায়ের ফোনে কথা হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। সব মিলিয়ে পুলিশের ধারণা মঙ্গলবার রাতেই ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে।

সুইসাইড নোটের লেখা কয়েকটি শব্দ দেখে পুলিশের অনুমান আর্থিক কারণেই পরিবারের সকলকে খুন করে আত্মঘাতী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন সুপ্রভাতবাবু। বছর দুয়েক আগে নবগ্রাম এলাকায় একটি বাড়ি কিনে পরিবার নিয়ে থাকতে শুরু করেন তিনি। তাঁর দোকানে ধোঁয়া পরীক্ষার যন্ত্রটিও দিন পনেরো আগে বিকল হয়ে যায় বলে পুলিশ জেনেছে। সেটি মেরামতির জন্য দিল্লিতে পাঠানো হয়েছে।

এদিন ঘটনার খবর পেয়ে নবগ্রামে এসেছিলেন মিঠু দেবীর বাবা কালাচাঁদ মণ্ডল এবং মা গীতা দেবী। কালাচাঁদ বাবু বলেন, “ওরা তো বেশ ভালই ছিল। টাকা পয়সা নিয়েও কোনও সমস্যা ছিল না। ক’দিন আগেই বাড়ি তৈরি করেছে সুপ্রভাত। আমরাও সে সময় ওঁকে সাহায্য করেছি।” গীতা দেবীর কথায়, “ মঙ্গলবার মিঠুর সঙ্গে শেষবার ফোনে কথা হয়েছিল। তার পরে আর ফোন ধরেনি। ভাবছিলাম বাড়ি এসে খোঁজ নেব। তার আগেই এই খবর পেলাম।” পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সুইসাইড নোটের শেষ অংশে লেখা ছিল, ‘মেয়েকে কেউ দেখার নেই। তাই ওকেও নিয়ে গেলাম।’

4 bodies rescued siliguri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy