Advertisement
E-Paper

দলমোড়-কাণ্ডের পুলিশি তদন্ত নিয়ে ক্ষোভ

ডুয়ার্সের দলমোড় চা বাগানের সহকারী ম্যানেজারকে খুনের ঘটনার চার দিন পরেও অভিযুক্তেরা গ্রেফতার না হওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে চা বাগান মালিকদের সংগঠনগুলি। শুক্রবার জলপাইগুড়ির জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন বিভিন্ন চা বাগান মালিকদের সংগঠনের যৌথ মঞ্চ ‘কনসালটেটিভ কমিটি অব প্ল্যানটেশন অ্যাসোসিয়েশনের’ (সিসিপিএ) সদস্যরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৪ ০১:৫৮

ডুয়ার্সের দলমোড় চা বাগানের সহকারী ম্যানেজারকে খুনের ঘটনার চার দিন পরেও অভিযুক্তেরা গ্রেফতার না হওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে চা বাগান মালিকদের সংগঠনগুলি। শুক্রবার জলপাইগুড়ির জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন বিভিন্ন চা বাগান মালিকদের সংগঠনের যৌথ মঞ্চ ‘কনসালটেটিভ কমিটি অব প্ল্যানটেশন অ্যাসোসিয়েশনের’ (সিসিপিএ) সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ, অভিযুক্তেরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাদের গ্রেফতার করতে কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে চা বাগান কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট আতঙ্কিত এবং বাগান খুলতেও সাহস পাচ্ছেন না বলে জেলাশাসককে জানিয়েছে সিসিপিএ।

জলপাইগুড়ির জেলাশাসক পৃথা সরকার বলেন, “চা বাগান কর্তৃপক্ষ স্মারকলিপি দিয়েছেন। খোঁজ নিয়ে দেখব কী পরিস্থিতি হয়ে রয়েছে। ওঁরা নিরাপত্তার ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন, ওই বিষয়ে চটজলদি কিছু করার নেই।” জেলা পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল জানিয়েছেন, গাফিলতির অভিযোগ সঠিক নয়। তাঁর কথায়, “ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি এটা ঠিক নয়। চা বাগান কর্তৃপক্ষকে বলেছি ঘটনায় জড়িত একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি দু’জনকে খুব তাড়াতাড়ি গ্রেফতার করা হবে।”

গত বৃহস্পতিবার দলমোড় চা বাগানের সহকারী ম্যানেজার অজিত পানোয়ারকে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ ওঠে চা শ্রমিক শোভেন রানার বিরুদ্ধে। শোভেনের স্ত্রী সাবিত্রীদেবীর সঙ্গে দুর্ব্যবহারের পাল্টা অভিযোগ উঠেছিল নিহত ম্যানেজারের বিরুদ্ধে। ঘটনার পরে মূল অভিযুক্ত শোভেন রানাকে পুলিশ গ্রেফতার করে। মালিকপক্ষের তরফে, সহকারী ম্যানেজারের নামে মিথ্যা অভিযোগ করে শোভেন রানাকে প্ররোচিত করার পাল্টা অভিযোগ দায়ের হয় সাবিত্রী রানা এবং তাঁর ছেলের বিরুদ্ধেও। এ দিন সোমবার স্মারকলিপি দিয়ে জেলাশাসককে মালিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা ওই দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পুলিশের গাফিলতির অভিযোগ জানান। মূল অভিযুক্ত শোভেন জলপাইগুড়ি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এ দিন সিসিপিএ-র আহ্বানে ডুয়ার্সের দেড়শো চা বাগানের ম্যানেজার ও সহকারী ম্যানেজাররা জেলাশাসকের দফতরে হাজির হন। ডুয়ার্স ব্রাঞ্চ ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিআইটিএ) চেয়ারম্যান সুদর্শনকুমার বাবল অভিযোগ করে বলেন, “চা শ্রমিক সাবিত্রী রানা দেরিতে কাজে গেলে সহকারী ম্যানেজার ওঁকে বাগানের ১৮ নম্বর সেকশনের বাইরে কাজে যেতে বলেন। সে কাজে না দিয়ে স্বামীকে মিথ্যা কথা বলে প্ররোচিত করে। আমরা তিন জনের নামে বীরপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। সাবিত্রী রানা ও তাঁর ছেলে বাগানে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার না করায় ভুল বার্তা যাচ্ছে।” দলমোড় বাগানের ম্যানেজার রূপেন্দ্র রানাওয়াত বলেন, “বাগান কবে খুলবে বলতে পারছি না। কাজে যেতে সাহস হচ্ছে না। প্রশাসন কী ব্যবস্থা নেয় সে দিকে লক্ষ্য রাখছি।” ইন্ডিয়ান টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (আইটিপিএ) চেয়ারম্যান রজত দেব জানান, “এই পরিস্থিতিতে কেউ কাজে যোগ দেওয়ার সাহস পাবেন না।”

যদিও, মালিকপক্ষের অভিযোগ নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি নন দলমোড় বাগানের শ্রমিকেরা। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদেরও পুলিশ চিহ্নিত করতে পারেনি বলে জানা গিয়েছে। তবে পুলিশের দাবি, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত সাবিত্রী রাণা এবং তাঁর ছেলে বাগান ছেড়ে চলে গিয়েছেন। বীরপাড়া থানার ওসি হীরালাল ঠাকুর জানিয়েছেন, কয়েক দফায় অভিযুক্তের বাড়িতে হানা দিয়ে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বাগানে পুলিশ পিকেট রয়েছে।

বীরপাড়া ২ পঞ্চায়েত সদস্য তথা বাগানের বাসিন্দা গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতা কিসমত প্রধান এ দিন পাল্টা দাবি করে বলেন, “ওই সহকারী ম্যানেজার শ্রমিকদের কাজ করানোর ক্ষেত্রে চাপ দিতেন বলে শুনেছি। ওই দিন মহিলার সঙ্গে তিনি খারাপ ব্যবহার করেন। তার পরে সাবিত্রী রানা আমার কাছে অভিযোগ জানাতে আসেন।” পঞ্চায়েত সদস্যের পাল্টা অভিযোগ, “একে বাগান বন্ধ, তার সঙ্গে পুলিশি হানায় শ্রমিকেরা আতঙ্কিত।”

birpara jalpaiguri police investigation dolmore kanda
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy