Advertisement
E-Paper

ধর্ষণে অভিযুক্ত নেতা অধরা, সরব বিরোধীরা

প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত শাসক দলের নেতাদের গ্রেফতার করছে না পুলিশ, মঙ্গলবার এমনই অভিযোগ তুলে দিনহাটায় আন্দোলনে সামিল হল বাম সংগঠন থেকে শুরু করে পড়ুয়ারা। সোমবার মাতালহাট হাইস্কুলের নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল নেতা সহ দু’জনের বিরুদ্ধে। আরেক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহায়তা করার অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৩৪

প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত শাসক দলের নেতাদের গ্রেফতার করছে না পুলিশ, মঙ্গলবার এমনই অভিযোগ তুলে দিনহাটায় আন্দোলনে সামিল হল বাম সংগঠন থেকে শুরু করে পড়ুয়ারা।

সোমবার মাতালহাট হাইস্কুলের নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল নেতা সহ দু’জনের বিরুদ্ধে। আরেক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহায়তা করার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ এক অভিযুক্ত সন্তোষ বর্মনকে গ্রেফতার করলেও শাসক দলের দুই অভিযুক্ত নেতাকে গ্রেফতার করেনি বলে বিরোধীদের দাবি। তাঁদের অভিযোগ, ওই নেতাদের আড়াল করার চেষ্টা করছে পুলিশের একটি মহল। কয়েকটি সংগঠনের পক্ষ থেকে দিনহাটার মহকুমাশাসককে বিষয়টি জানিয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।

কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব অবশ্য বিষয়টি মানতে চাননি। তিনি বলেন, “অভিযুক্তদের একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে যারা অভিযুক্ত প্রত্যেককে গ্রেফতার করা হবে। আড়াল করার অভিযোগ ঠিক নয়।” দিনহাটার মহকুমাশাসক কৃষ্ণাভ ঘোষ পুলিশের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, “প্রত্যেক অভিযুক্তকেই গ্রেফতার করা হবে।”

ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক তথা দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ দাবি করেছেন, পুলিশ অভিযুক্তদের খোঁজে কোনও তল্লাশি করেনি। এদিনও ওই এলাকাতে তৃণমূলের দুই নেতাকে প্রকাশ্যে ঘুরতে দেখা গিয়েছে। তিনি বলেন, “এ ভাবে ধর্ষণের মামলায় শাসক দলের নেতাদের আড়াল করার চেষ্টা কিছুতেই মেনে নেওয়া হবে না। আমরা বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে মহকুমাশাসককে স্মারকলিপি দিয়েছি। ধারাবাহিক আন্দোলন করা হবে।”

তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য ওই ঘটনার পিছনে বিরোধীদের চক্রান্ত রয়েছে বলে দাবি করেছেন। শাসক দলের দুই নেতাই নির্দোষ বলে তাঁর দাবি। তিনি বলেন, “ওই মেয়েটি আজিজার রহমানের মেয়ের সঙ্গে পড়াশোনা করত। তার বিপদের কথা শুনে আজিজার ও প্রদীপ তাঁর পাশে দাঁড়ায়। এখন বিরোধীরা চক্রান্ত করে ওঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছে।”

রবীন্দ্রনাথবাবুর ওই বক্তব্য নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের প্রশ্ন, শাসক দলের ওই দুই নেতা যদি ছাত্রীটির পাশে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন তা হলে কেন পুলিশ ডাকা হল না? কেন বিষয়টি মিটিয়ে ফেলার কথা বলে খুনের হুমকি দেওয়া হল?

এ দিন সকাল ১০ টা নাগাদ দিনহাটার মাতালহাট হাইস্কুলের ছাত্রছাত্রীরা স্কুলের সামনে জড়ো হয়। সেখানেই ক্লাস বয়কটের ঘোষণা করে তারা। তৃণমূলের দখলে থাকা গ্রাম পঞ্চায়েতের অফিসে গিয়েও বিক্ষোভ দেখায় তারা। সঙ্গে যোগ দেয় এসইউসির ছাত্র সংগঠন ডিএসও। উত্তেজনা ছড়াতে শুরু করলে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। পরে ডিএসওর নেতৃত্বে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের একাংশ দিনহাটা শহরে মিছিল করে মহকুমাশাসককে স্মারকলিপি দেয়।

মাতালহাট হাইস্কুলের শিক্ষকরাও ওই ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুশান্ত বর্মন বলেন, “এমন ঘটনার প্রভাব সরাসরি স্কুলের উপরে পড়বে। কোন ভরসায় সাধারণ মানুষ ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাবে? দোষী যিনিই হন না কেন, আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।” দিনহাটা নারীনিগ্রহ বিরোধী কমিটির পক্ষ থেকেও মহকুশাসককে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। সংগঠনের সদস্য শ্যামল চৌধুরী বলেন, “প্রশাসনকে কঠোর ও নিরপেক্ষ হতে হবে। ওই ঘটনায় প্রত্যেককে অভিযুক্তের আমরা গ্রেফতার চাই।” অল ইন্ডিয়া মহিলা সাংস্কৃতিক সমিতির সম্পাদিকা রীনা ঘোষ হাসপাতালে গিয়ে ওই ছাত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। তিনি বলেন, “ওই ছাত্রী এখনও অসুস্থ। তার যাতে সঠিক চিকিৎসা হয় সে ব্যাপারে আমরা হাসপাতালের সুপারের সঙ্গে কথা বলেছি।”

cooch behar gangrape dinhata matlahat azijar rehman tmc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy