Advertisement
E-Paper

নাটকে সম্প্রীতির বার্তা প্রতিবন্ধী আবাসিকদের

বাড়ি থেকে হারিয়ে ওরা সকলেই অনাথ। কেউই কথা বলতে ও শুনতে পায় না। সারা বছর হোমের চার দেওয়ালে বন্দি থাকাই তাদের পরিচিত রুটিন। এমনই ২০ জন মূক ও বধির কিশোর কিশোরী মূকাভিনয় করে অবাক করে দিলেন উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের। সহ আবাসিকদের মূকাভিনয় দেখে উচ্ছ্বসিত দর্শকাসনে থাকা ৪২ জন মূক ও বধির কিশোর কিশোরীও। মূকাভিনয়ের বিষয় ছিল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৩৬
রায়গঞ্জের সূর্যোদয় হোমে নাটক।

রায়গঞ্জের সূর্যোদয় হোমে নাটক।

বাড়ি থেকে হারিয়ে ওরা সকলেই অনাথ। কেউই কথা বলতে ও শুনতে পায় না। সারা বছর হোমের চার দেওয়ালে বন্দি থাকাই তাদের পরিচিত রুটিন। এমনই ২০ জন মূক ও বধির কিশোর কিশোরী মূকাভিনয় করে অবাক করে দিলেন উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের। সহ আবাসিকদের মূকাভিনয় দেখে উচ্ছ্বসিত দর্শকাসনে থাকা ৪২ জন মূক ও বধির কিশোর কিশোরীও। মূকাভিনয়ের বিষয় ছিল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি।

শিশুদিবস উপলক্ষে শুক্রবার দুপুরে মূক ও বধির আবাসিকদের নিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উপর মূকাভিনয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন সমাজকল্যাণ দফতরের অধীনস্থ রায়গঞ্জের সূর্যোদয় মূক ও বধির আবাসিক হোম কর্তৃপক্ষ। ওই অনুষ্ঠান দেখতে হোম চত্বরে হাজির হন জেলাশাসক স্মিতা পান্ডে, জেলা দায়রা বিচারক অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি পূর্ণেন্দু দে, জেলা পরিষদ সদস্য গৌতম পাল, জেলা শিশুকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান সুনীলকুমার ভৌমিক সহ প্রশাসনের একাধিক কর্তা। শুধু মূকাভিনয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজনই নয়, এদিন মূক ও বধিরদের শিশুদিবসের আনন্দে সামিল করতে হোমের তরফে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় নতুন পোশাক। পাশাপাশি, ব্যবস্থা করা হয় বিশেষ খাওয়া দাওয়ারও। অন্য দিকে, জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের তরফে অনন্যাদেবী ও সম্পাদক প্রদীপ গঙ্গোপাধ্যায় মূক ও বধিরদের মধ্যে বই, খাতা ও জলের বোতল বিলি করেন। স্থানীয় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজার রামনাথ বর্মন ব্যাঙ্কের তরফে মূক ও বধিরদের জন্য হোম কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেন একটি কম্পিউটার ও পানীয় জল শোধন করার একটি যন্ত্র।

দর্শকেরা মূক ও বধিরদের মূকাভিনয় দেখে আবেগ বিহ্বল হয়ে পড়েন। অনেকেই বলেন, মূক ও বধিররা শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও যেভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উপর মূকাভিনয় করে নিজেদের দক্ষতা দেখাল, তা প্রশংসা করার ভাষা নেই। জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ জানান, মূক ও বধির আবাসিকদের জন্য সবরকম সহযোগিতা করতে তাঁরা প্রস্তুত।

হোমের অধ্যক্ষ পার্থসারথি দাস বলেন, “প্রতিবন্ধীরা সমাজে অনেক বঞ্চনার শিকার হয়। কিন্তু সঠিক প্রশিক্ষণ, যত্ন ও পড়াশোনার সুযোগ পেলে তারা যে সাধারণ ছেলে মেয়েদের চাইতে কোনও অংশে পিছিয়ে থাকবে না, সেই বার্তা দিতেই তাদের দিয়ে মূকাভিনয় মঞ্চস্থ করানো হল। গত এক মাস ধরে হোম কর্তৃপক্ষ এই আবাসিকদের বেছে নিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। তিনি জানান, মূক ও বধির আবাসিকদের একঘেয়েমি কাটিয়ে তাদের সাময়িক আনন্দ দিতেই হোমের নিজস্ব তহবিলের টাকায় শিশুদিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এদিন হোমের নিজস্ব মঞ্চে মূক ও বধির ১৪ জন কিশোর ও ৬ জন কিশোরী মূকাভিনয় পরিবেশন করে।

হোম সূত্রের খবর, বাড়ি থেকে হারিয়ে যাওয়ার পর পুলিশ উদ্ধার করে আদালতের নির্দেশে সূর্যোদয় হোমে মূক ও বধির কিশোর কিশোরীদের রাখার ব্যবস্থা করে। বর্তমানে ওই হোমে ৬২ জন মূক ও বধির আবাসিকের মধ্যে ৩৭ জন কিশোর ও ২৫ জন কিশোরী রয়েছে। হোমের দু’টি হস্টেলে কিশোর ও কিশোরীদের পৃথকভাবে রাখা হয়। হোমে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনারও ব্যবস্থা রয়েছে।

raiganj play handicapped religious harmony
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy