Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ভিন্‌ রাজ্যে যাচ্ছে আলু, নালিশ

ট্রাক পিছু ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ করলেই সরকারি বিধিনিষেধ ভেঙে আলুর ট্রাক অসমে পৌঁছে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। গত বছরের মতো এ বছরেও মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন টাস্ক ফোর্সের নির্দেশে ভিন্‌ রাজ্যে আলু পাঠানোয় নিষেধাজ্ঞা বলবত্‌ হয়েছে।

নিলয় দাস
ফালাকাটা শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৪ ০১:৫২
Share: Save:

ট্রাক পিছু ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ করলেই সরকারি বিধিনিষেধ ভেঙে আলুর ট্রাক অসমে পৌঁছে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। গত বছরের মতো এ বছরেও মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন টাস্ক ফোর্সের নির্দেশে ভিন্‌ রাজ্যে আলু পাঠানোয় নিষেধাজ্ঞা বলবত্‌ হয়েছে। অসম সংলগ্ন কোচবিহার বক্সিরহাটের ‘চেকপোস্টে’ আলু বোঝাই ট্রাক আটক করেছে পুলিশ। যদিও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, কিছু পুলিশকর্মী ট্রাক পিছু টাকা দাবি করছেন। সেই মতো তাঁদের হাতে টাকা দিলেই রাতের বেলায় ট্রাকগুলি অসমে যেতে দেওয়া হচ্ছে। এই ঘটনাতেই ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা।

সরকারি সূত্রে খবর, বহু জায়গায় খোলা বাজারে আলুর দাম কেজি প্রতি ২২ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। সেই দাম নিয়ন্ত্রণেই প্রশাসনিক কড়াকড়ি শুরু হয়েছে। কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, “আলুর দাম মাত্রাতিরিক্ত বাড়ায় মুখ্যমন্ত্রী ভিন্‌ রাজ্যে আলু পাঠানোয় নিষেধাঞ্জা জারি করেছেন। সেই মতো ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।”

ডুয়ার্স অথবা ধূপগুড়ি থেকে আলু বারবিশা হয়ে বক্সিরহাটের চেকপোস্ট দিয়ে অসমে যায়। বক্সিরহাট থানার পুলিশের বিরুদ্ধেই টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। বক্সিরহাট থানার ওসি জয়দেব ঘোষ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, “সরকারি নির্দেশ মেনে কাজ করছি। কোনও রকম তোলাবাজি হচ্ছে না।” কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নিতে শুরু করেছেন। তবে তিনি বলেন, “টাকা নিয়ে ট্রাক ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন। ব্যবসায়ীরা আমাকে কিছুই জানাননি।”

সরকারি নির্দেশ নিয়ে বিভ্রান্তির কারণেই তোলাবাজি চলছে বলে অভিযোগ। আলু রফতানি বন্ধের নির্দেশ কৃষি বিপণন দফতরের মাধ্যমে না পাঠিয়ে, পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখায় পাঠানো রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। গত কয়েক দিন ধরেই আলুর ট্রাক বক্সিরহাটের চেকপোস্টে আটকে দেওয়া হয় বলে ব্যবসায়ীরা জানান। কিছু ট্রাক চেকপোস্ট থেকে ফিরেও গিয়েছে। তবে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, গত শনিবারও রাতের বেলায় বেশ কয়েকটি ট্রাককে পুলিশ কর্মীরা ছেড়ে দিয়েছেন। উত্তরবঙ্গ আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক কার্তিক দাস বলেন, “আলু রফতানি বন্ধের নির্দেশ কেউ দেখাতে পারছেন না। অসমে আলু যাবে বলে চালান দেখানোর পর সে অনুযায়ী আমরা বিপণন দফতরকে কর দিচ্ছি। তার পরেও পুলিশ টাকা দাবি করছে। রাতে কিছু ট্রাক ছেড়ে দিচ্ছে বলে জানতে পেরেছি।”

ব্যবসায়ীদের দাবি, কৃষি বিপণন দফতর যদি প্রথমেই ব্যবস্থা নিয়ে, রফতানির চালান না দিত তবে কোনও ব্যবসায়ীই আলু বোঝাই ট্রাক পাঠাতেন না। তা না হওয়ায় টাকার বিনিময়ে ট্রাক ছেড়ে দেওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ। গত বছর খোলা বাজারে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে রাজ্যেপ পদক্ষেপে সুফল মিলেছিল বলে ক্রেতাদের দাবি। যদিও, চলতি বছরে সরকারি নির্দেশকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে রাতের অন্ধকারে ভিনরাজ্যে আলুর ট্রাক চলে গেলে, দাম নিয়ন্ত্রণে কতটা সুফল পাওয়া যাবে তা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

potato complain niloy das falakata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE