Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

নদীতে যুবকের দেহ, ক্ষোভে পুড়ল সেতু

রেলিংবিহীন সেতু থেকে নদীতে পড়ে এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল কোচবিহার শহর লাগোয়া গুড়িয়াহাটি এলাকা। সোমবার ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে একদল উত্তেজিত জনতা ওই কাঠের সেতুটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম কানু দাস (২৫)। তাঁর বাড়ি গুড়িয়াহাটি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের রামকৃষ্ণ পল্লী এলাকায়। জানা গিয়েছে, রাসমেলা চত্বরের একটি দোকানে কাজ নিয়েছিলেন তিনি।

জ্বলছে সেতু। সোমবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

জ্বলছে সেতু। সোমবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৩১
Share: Save:

রেলিংবিহীন সেতু থেকে নদীতে পড়ে এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল কোচবিহার শহর লাগোয়া গুড়িয়াহাটি এলাকা। সোমবার ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে একদল উত্তেজিত জনতা ওই কাঠের সেতুটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়।

পুলিশ জানায়, মৃতের নাম কানু দাস (২৫)। তাঁর বাড়ি গুড়িয়াহাটি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের রামকৃষ্ণ পল্লী এলাকায়। জানা গিয়েছে, রাসমেলা চত্বরের একটি দোকানে কাজ নিয়েছিলেন তিনি। রবিবার রাতে বাড়ি ফেরার জন্য সাইকেলে রওনা দিয়েছিলেন। সোমবার সকালে সেতুর নীচে মরা তোর্সা নদীর জলে তাঁর দেহ ভেসে থাকতে দেখেন বাসিন্দারা।

এর পরেই সেতুর রেলিং না থাকায় ওই ঘটনা ঘটেছে বলে চাউর হয়ে যায়। মৃতের আত্মীয় টোটন দাসের অভিযোগ, “রেলিং না থাকায় সাইকেল নিয়ে সেতু পার হওয়ার সময় ওই ঘটনা ঘটে।” সেতুতে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। পুলিশ ও দমকলকর্মীদের লক্ষ করে ইট ছোঁড়া হয়। ঘটনাস্থলে গিয়ে জনতার একাংশের ক্ষোভের মুখে পড়েন এলাকার তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। পরে কোতোয়ালি থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, “অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা করে তদন্ত হচ্ছে। সেতুতে কারা আগুন ধরিয়ে দেন তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দমকল কর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশের সামনেই একদল জনতা ইট ছুড়ে আগুন নেভাতে বাধা দেয়। ফলে শুরুতে আগুন নেভানো যায়নি। সেতুর একাংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথবাবু সেখানে গেলে কয়েকজন বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। তিনি বলেন, “আমি বিধায়ক হওয়ার পরেই বাসিন্দাদের দাবি মেনে সেতুটি সংস্কার করার ব্যবস্থা করি। নতুন কাঠের রেলিং,পাটাতন বসানো হয়। কাঠ চুরি করে নিয়ে যাওয়ায় সমস্যা হয়। ইতিমধ্যে ওই সেতুটি পাকা করার জন্য উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরে প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছে।” ওই যুবকের মৃত্যু নিছক দুর্ঘটনায় হয়েছে কিনা সে ব্যাপারেও সংশয় প্রকাশ করেছেন রবীন্দ্রনাথবাবু। তৃণমূলের অভিযোগ, ঘটনায় জড়িতরা সবাই বিজেপি’র কর্মী-সমর্থক।

বিজেপির কোচবিহার জেলা সম্পাদক নিখিল রঞ্জন দে বলেন, “ভিত্তিহীন অভিযোগ। সেতুটির বেহাল দশার কথা দলীয় ভাবে প্রশাসনের নানা মহলে বলা হলেও কাজ হয়নি। তরতাজা যুবকের মৃত্যুর জেরে জনতার ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হয়েছে।” কোচবিহার শহর লাগোয়া গুড়িয়াহাটি ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের পিলখানা ও ভারত কলোনি এলাকার মাঝে মরা তোর্সা নদী রয়েছে। রামকৃষ্ণ পল্লী, বাবুরহাট, চকচকা চেকপোষ্ট ও লাগোয়া বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা ওই সেতু পার হয়ে পিলখানা হয়ে কোচবিহার শহরে যান। অভিযোগ, ১৯৯৫-৯৬ সালে কোচবিহার ১ পঞ্চায়েত সমিতির তৈরি করা কাঠের ‘নজরুল সেতু’টি দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। রেলিং ও কাঠের পাটাতন না থাকায় মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটছে। বিধায়ককে সামনে পেয়ে বাসিন্দারা ক্ষোভ জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE