Advertisement
১১ মে ২০২৪

নদীর ধারে মিলল দুই নিখোঁজের দেহ

সরস্বতী পুজোর রাত থেকে নিখোঁজ দুই যুবকের দেহ চার দিন বাদে নদীর চর থেকে উদ্ধার হল। বৃহস্পতিবার ডুয়ার্সের বীরপাড়া শহরের পাশে বিরকিটি নদীর ধার থেকে দুই জনের দেহ উদ্ধার হয়। দুই যুবকের মাথায় ভারি কিছু দিয়ে আঘাত করে খুন করে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বীরপাড়া শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:১৩
Share: Save:

সরস্বতী পুজোর রাত থেকে নিখোঁজ দুই যুবকের দেহ চার দিন বাদে নদীর চর থেকে উদ্ধার হল। বৃহস্পতিবার ডুয়ার্সের বীরপাড়া শহরের পাশে বিরকিটি নদীর ধার থেকে দুই জনের দেহ উদ্ধার হয়। দুই যুবকের মাথায় ভারি কিছু দিয়ে আঘাত করে খুন করে। দুষ্কৃতীরা নদীর ধারে রেখে আসে বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ মনে করছে। খুনিদের খোঁজ চালাতে বৃহস্পতিবার দুপুরে জলপাইগুড়ি থেকে পুলিশ কুকুর নিয়ে আসা হয়। তবে দেহটি চার দিনের পুরনো হয়ে যাওয়ায় সে ভাবে পুলিশ কুকুর কাজে আসেনি। আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডেভিড ইমন লেপচা বলেছেন, “রবিবার রাতে তাঁরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে কোথায় গিয়েছিলেন। কাদের সঙ্গে বচসায় খুন হতে হয়েছে তা নিয়ে আমরা পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চালাচ্ছি।”

মৃত দুই যুবকের বাড়ি বীরপাড়া চা বাগানের বাঘা লাইনে মৃতদের নাম রাজু ওঁরাও (৩৬) এবং অপর জন সচিন খড়িয়া (২৬)। রাজু ওই বাগানের শ্রমিক সচিন দিনমজুর তাদের বাড়ির কাছে সরস্বতী পুজো হচ্ছিল। মণ্ডপে মাইক বাজিয়ে রাতে নাচ করছিল যুবকরা। পাড়ার যুবকদের সঙ্গে তাঁরাও নাচ করেন। রাত ১১ টা নাগাদ তাঁরা দুজন এক সঙ্গে সেখান থেকে বেরিয়ে লাগোয়া বীরপাড়া শহরের দিকে হাঁটা পথে রওনা হন। তার পরে থেকে আর তাঁরা বাড়ি ফেরেননি। সোমবার তারা বাড়ি ফিরবেন বলে আশায় ছিলেন দুই জনের পরিবারের লোকজন। তবে সোমবার সকালে সচিন ও রাজু বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন খোঁজখবর শুরু করেন। দিনভর সম্ভাব্য জায়গাগুলিতে খোঁজ চালিয়ে তাঁদের কোন খোঁজ না মেলায় মঙ্গলবার দুই পরিবারের পক্ষে বীরপাড়া থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করেন।

তবে বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টা নাগাদ বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটার দূরে ডিমডিমা চা বাগান লাগোয়া বিরকিটি নদীর ধারে কয়েকজন দুর্গন্ধ পেয়ে থার্মোকলের বাক্সে উঁকি দিতে প্রথমে একটি দেহ দেখতে পান। বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রথমে বাক্স থেকে সচিনের দেহটি উদ্ধার করেন। সে সময় কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীরা বালির উপর কয়েকটি আঙ্গুল দেখতে পান বালি কিছুটা খুড়ে উদ্ধার দ্বিতীয় দেহটি দেখেন। মাথায় আঘাতের চিহ্ন লক্ষ্য করে দুই জনকে খুন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত হন দুই পরিবারের লোকজন দেহ দুটি শনাক্ত করেন। দুপুরে পুলিশ কুকুর পৌঁছনোর পর প্রায় দু কিলোমিটার দূরে ডিমডিমা চা বাগানের মাঝ পর্যন্ত পর্যন্ত কুকুর গন্ধ শুঁকে এগোয়। তবে তাতে তদন্ত এগোবে না বলে মনে করছে পুলিশ অফিসারেরা।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ওই রাতে দুই জন মদ খাবার জন্য বাগানের বাইরে আসে গভীর রাতে নদীর আশেপাশে কোথাও মদের আসর বসেন। সেখানে সঙ্গীদের সঙ্গে বচসা হয়। এর পর তাদের মেরে নদীর চরে ফেলে আসা হয়। তবে তাঁরা কাদের সঙ্গে সে রাতে ছিল তা অবশ্য পুলিশ জানতে পারেনি। এদিকে, রাজু বা সচিনের পরিবারের লোকজন ধন্দে রয়েছেন। রাজুর পরিবারে স্ত্রী সহ এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে ওই রাতে তার ছেলে রাকেশ বাবা ও সচিন কে এক সঙ্গে বিরপাড়া শহরে যেতে দেখেন রাকেশের কথায়, তাঁরা দুইজন মণ্ডপের সামনে নাচানাচি করে হাঁটাপথে বাগানের বাইরে যায় এর পর আর আর ফেরেনি বাবারা। সচিনের বাবা মানিকের কথায়, “দুই ছেলে ছিল। এক জন বছর খানেক আগে রোগে ভুগে মারা গিয়েছে। আরেক ছেলে এবার খুন হল। ওঁর সঙ্গে কারও তো শত্রুতা নেই। কারা আমার ছেলেকে এভাবে খুন করতে পারে তার কোন আন্দাজ পাচ্ছি না। পুলিশ দোষীদের খুঁজে শাস্তি দিক।” দুজনের দেহ তল্লাশি চালিয়ে অবশ্য কোন টাকা বা মোবাইল ফোন মেলেনি রাজুর মোবাইল ফোন ছিল না। সচিন মোবাইল ব্যবহার করলেও ওই দিন রাতে সে তাঁর ফোন বাড়িতে রেখে এসেছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

missing youths duars birpara
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE