Advertisement
E-Paper

পাতার দাম কমেছে, সঙ্কটে চা চাষিরা

পুজোর মুখে পাতার দাম তলানিতে নেমে আসায় দিশেহারা উত্তরবঙ্গের অন্তত ৪০ হাজার ক্ষুদ্র চা চাষি। সোমবার ময়নাগুড়িতে চা কারখানার সামনে রাস্তায় কাঁচা পাতা ফেলে শতাধিক চাষি বিক্ষোভ দেখান। দাম না-মেলায় জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন বেশ কয়েকটি বাগানে ছেঁড়া পাতা পচে নষ্ট হতে শুরু করেছে বলে চা চাষিদের অভিযোগ। পরিস্থিতি বেসামাল দেখে বাগান বন্ধের হুমকি দিয়েছে চা চাষিদের সংগঠন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৩২
ময়নাগুড়িতে চা কারখানার সামনে পাতা ফেলে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।

ময়নাগুড়িতে চা কারখানার সামনে পাতা ফেলে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।

পুজোর মুখে পাতার দাম তলানিতে নেমে আসায় দিশেহারা উত্তরবঙ্গের অন্তত ৪০ হাজার ক্ষুদ্র চা চাষি। সোমবার ময়নাগুড়িতে চা কারখানার সামনে রাস্তায় কাঁচা পাতা ফেলে শতাধিক চাষি বিক্ষোভ দেখান। দাম না-মেলায় জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন বেশ কয়েকটি বাগানে ছেঁড়া পাতা পচে নষ্ট হতে শুরু করেছে বলে চা চাষিদের অভিযোগ। পরিস্থিতি বেসামাল দেখে বাগান বন্ধের হুমকি দিয়েছে চা চাষিদের সংগঠন।

জলপাইগুড়ি জেলা ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির সম্পাদক বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “বটলিফ কারখানার মালিকরা চক্রান্ত করে পাতার দাম এতটাই নিচে নামিয়েছে, যে উৎপাদন খরচ উঠছে না। টানা দু’সপ্তাহ ধরে ওই পরিস্থিতি চলছে। এক সপ্তাহের মধ্যে পাতার দাম না বাড়লে আমরা বাগান বন্ধ রাখতে বাধ্য হব।” উত্তর দিনাজপুর জেলা ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির সম্পাদক দেবাশিস পালের অভিযোগ, “চা পর্ষদের নজরদারির অভাবে ওই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। চা পর্ষদকে বারবার জানিয়ে কোনও লাভ হচ্ছে না।” যদিও পরিস্থিতি নিয়ে এখনই কিছু মন্তব্য করতে চাননি ভারতীয় চা পর্ষদের কর্তারা। সংস্থার সহকারী অধিকর্তা অমৃতা চক্রবর্তী বলেন, “পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে যা বলার বলব।”

ক্ষুদ্র চা চাষিদের সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গে ৪০ হাজার ছোট চা বাগান রয়েছে। অন্তত ৫০ হাজার শ্রমিক এখানে কাজ করে। উত্তরবঙ্গের মোট চা উৎপাদনের প্রায় ৪০ শতাংশ এই সমস্ত বাগান থেকে আসে। গত বছর যে ৩১৫ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হয়েছে, তারমধ্যে প্রায় ১২৬ মিলিয়ন কেজি চা তৈরি হয়েছে ছোট বাগানের পাতা থেকেই। প্রতিকূল আবহাওয়ার জন্য এবার এমনিতেই ছোট বাগানগুলির কাহিল দশা। তার উপরে গত দু’সপ্তাহ দাম ক্রমশ কমে যাওয়ায় চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে।

এদিন কাঁচা পাতার কেজি প্রতি দাম ন’টাকায় নেমেছে। অথচ এক কেজি পাতার উৎপাদন খরচ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৩ টাকা। লোকসানের মুখে পড়ে দিশেহারা চাষিরা। এদিন সকালে বিক্রির জন্য আনা পাতা ময়নাগুড়ি-মালবাজার রোডের পাশে একটি বটলিফ কারখানার সামনে ফেলে দিয়ে বিক্ষোভ দেখান চাষিরা। তাঁদের অভিযোগ, কারখানার মালিকরা পাতার দাম কম দিয়ে অতিরিক্ত মুনাফা করছে।

উৎপাদন ও পরিবহণ খরচ না ওঠায় শহর সংলগ্ন ছোট অনেক বাগানে ছেঁড়া কাঁচা পাতা ডাই হয়ে পচছে। চা চাষি শোভন সরকার বলেন, “কেজি প্রতি ১৪ টাকা দাম না পাওয়া গেলে কোনও লাভ নেই। অথচ এখন তা মাত্র ন’ টাকায় নেমেছে। বাধ্য হয়ে ছেঁড়া পাতা ঘরে ফেলে রেখেছি। কয়েকদিন পড়ে শ্রমিকদের বোনাস দিতে হবে। বুঝতে পারছি না কি হবে।”

যদিও বটলিফ কারখানা মালিকদের সংগঠনের কর্তারা চা চাষিদের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁদের পাল্টা দাবি, তৈরি চায়ের দাম কমেছে। পাতার উৎপাদন বেড়ে গেলেও গুণগত মান ঠিক রাখা হচ্ছে না। ওই কারণে পাতার দাম কমেছে। সংগঠনের সভাপতি প্রবীর শীল বলেন, “ইচ্ছাকৃতভাবে দাম কমানোর কোন ব্যাপার নেই। বাজারের স্বাভাবিক নিয়মে দাম কমেছে।”

tea farmers in crisis tea leaves tea jalpaiguri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy