Advertisement
০৫ মে ২০২৪

পানীয়ে মাদক হাসপাতালে অজ্ঞান করে লুঠ রোগীর পরিজনদের

রোগীর পরিবারের লোকজন অপেক্ষা করেন হাসপাতাল চত্বরে। তাঁদের মাদক মিশ্রিত ঠান্ডা পানীয় খাইয়ে টাকা, মোবাইল লুঠের ঘটনা ঘটল মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সোমবার রাত ১১টা নাগাদ মাদক মিশ্রিত পানীয় খাওয়ার পরে সাত জন অচৈতন্য হয়ে পড়লে এক দুষ্কৃতী প্রায় ৫০ হাজার টাকা ও তিনটি মোবাইল ফোন নিয়ে পালায়। মঙ্গলবার সকালে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সাইকেল স্ট্যান্ডের মধ্যে ওই সাত জনকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। সকলেই পরে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ঘটনার পর হাসপাতাল চত্বরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন রোগীর আত্মীয়েরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৪ ০১:২০
Share: Save:

রোগীর পরিবারের লোকজন অপেক্ষা করেন হাসপাতাল চত্বরে। তাঁদের মাদক মিশ্রিত ঠান্ডা পানীয় খাইয়ে টাকা, মোবাইল লুঠের ঘটনা ঘটল মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

সোমবার রাত ১১টা নাগাদ মাদক মিশ্রিত পানীয় খাওয়ার পরে সাত জন অচৈতন্য হয়ে পড়লে এক দুষ্কৃতী প্রায় ৫০ হাজার টাকা ও তিনটি মোবাইল ফোন নিয়ে পালায়। মঙ্গলবার সকালে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সাইকেল স্ট্যান্ডের মধ্যে ওই সাত জনকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। সকলেই পরে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ঘটনার পর হাসপাতাল চত্বরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন রোগীর আত্মীয়েরা।

জেলা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী বলেন, “পুলিশকে মামলা করে দুষ্কৃতীদের খুঁজতে বলেছি। পুলিশ এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নিরাপত্তা বাড়াতে বলা হয়েছে।” মন্ত্রীর দাবি, কালো জামা পরা এক দুষ্কৃতী রোগীর পরিবারের আত্মীয় সেজে রাতে অন্য রোগীর পরিবারের সঙ্গে ছিলেন। সেই দুষ্কৃতীই মাদক মিশ্রিত ঠান্ডা পানীয় সকলকে খাইয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। তবে দলটিতে আরও লোকজন ছিল বলে মনে হচ্ছে।

জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশ তল্লাশি শুরু করেছে।” মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার মহম্মদ আব্দুর রসিদ বলেন, “এরকম ঘটনা আগে কোনওদিন ঘটেনি। হাসপাতালের রোগীর পরিবারের লোকজন আতঙ্কিত। নিরাপত্তার বিষয়টি দেখা হচ্ছে।”

মেডিক্যাল কলেজে রোগীর আত্মীয়দের থাকার জন্য একটি বিশ্রামাগার রয়েছে। তবে সেখানে ১০০ জনের বেশি থাকা যায় না। তাই অনেকেই জরুরি বিভাগে ঢোকার গেটের পাশে মেঝেতে, প্রশাসনিক ভবনের নীচে সাইকেল স্ট্যান্ডের ভিতরে মেঝেতে রাত কাটান। গত শনিবার অস্ত্রোপচার করে রতুয়ার কাতলামারির বাসিন্দা ইশাক আলির পুত্রবধূর পুত্র সন্তান হয়েছে। নাতিকে দেখতে বিকেলে ইশাক আলি ও পুত্রবধূর বাবা লোকমান আলি মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এসেছিলেন। রাত হয়ে যাওয়ায় তাঁরা আর ফেরেননি। দুই জনই সাইকেল স্ট্যান্ডে ছিলেন।

লোকমান আলির স্ত্রী হামেশা বিবি কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, “স্বামীর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা ও মেয়ের শ্বশুরমশাইয়ের কাছে থেকে ৭ হাজার টাকা লুঠ করে নিয়েছে। রাতে দুই জনকে এক ব্যক্তি ঠান্ডা পানীয় খাইয়েছিল। তার পরেই ওরা জ্ঞান হারায়।”

পুলিশ সূত্রের খবর, কালিয়াচকের আলিপুরের রফিকুল খান, চাঁচলের জামিল হককেও মাদক মিশ্রিত পানীয় খাইয়ে সর্বস্ব লুঠ করেছে দুষ্কৃতী। বালুরঘাটের পাগান আলির কাছে দুষ্কৃতীরা ১৫০০ হাজার টাকা নিয়েছে। আরও দুই জনের লুঠ হয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ঠান্ডা পানীয়ের মধ্যে বেশি পরিমাণে ঘুমের ওষুধ মেশনো ছিল। তা খেয়েই ওই সাত জন বেহুঁশ হয়ে পড়েন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

unconscious robbery malda medical college
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE