পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী তথা মালদহ দক্ষিণ কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী আবু হাসেম খান চৌধুরী। মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ সুপার রাজেশ যাদবের সঙ্গে দেখা করে তাঁর কাছেও জেলা পুলিশের একাংশের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ জানান তিনি।
সোমবার দেওয়াল লিখনকে কেন্দ্র করে কংগ্রেস-তৃণমূলের গোলমাল এবং তিন কংগ্রেস কর্মীর গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় পুলিশ নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করেনি বলে তাঁর অভিযোগ। নির্বাচন কমিশনের কাছে ভোটের একমাস আগে জেলার জন্য তিনি আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েনের দাবিও জানান তিনি। আবু হাসেম খান চৌধুরী বলেন, “তৃণমূল সারা জেলায় সন্ত্রাস চালাচ্ছে। প্রকাশ্যে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা গুলি ছুঁড়ছে, বোমা মারছে। অথচ পুলিশ সঠিক ভূমিকা পালন করছে না। একাংশ পুলিশ অফিসার ওই কাজে মদত দিচ্ছেন। আর পুলিশ উল্টে মালদহে কংগ্রেসিদের বিরুদ্ধে মামলা করছে, গ্রেফতার করছে।” পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, “নিবার্চন কমিশনের কাছে যে কেউ অভিযোগ করতেই পারেন। আর কালিয়াচকের ঘটনার দুই পক্ষের অভিযোগ খতিয়ে দেখেই আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ দিন আবু হাসেম খান চৌধুরী ক্ষোভের সঙ্গে জানান, সোমবার বাবলা কমলপুরে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা প্রকাশ্যে গুলি চালালে তিন কংগ্রেস কর্মী গুলিবিদ্ধ হন। অথচ তৃণমূলের মিথ্যা অভিযোগে পুলিশ কংগ্রেসের জেলা পরিষদের সদস্য, পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য, ব্লক কংগ্রেস সভাপতি-সহ ২১ জন নেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। তাঁর ক্ষোভ, “ভোটের আগে সন্ত্রাস, আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে। জেলার মানুষ নিশ্চিন্তে ভোট দিতে পারবে না। একমাস আগে আধা সামরিক জেলায় না আসলে শান্তিতে ভোট হবে না। নির্বাচন কমিশনে বিষয়টি জানিয়েছি।”
এই অভিযোগ প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, “কংগ্রেস প্রাথী আবু হাসেম খান চৌধুরীই তো নিজে সমাজবিরোধীদের সঙ্গে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ওঁর সঙ্গে এমন লোকজন থাকেন, যাঁদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রয়েছে। আসলে উনি পুলিশের উপর চাপ সৃষ্টি করছেন। আর মুখে বড়বড় কথা বলছেন। ওঁর সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন।” যদিও সাবিত্রীদেবীর বক্তব্য ‘হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন আবু হাসেম খান চৌধুরী।
গত সোমবার কালিয়াচক-২ নম্বর ব্লকের বাবলা কমলপুরে তৃণমূল ও কংগ্রেসের মধ্যে গোলমাল হয়। কংগ্রেসের দখল করা দেওয়ালে তৃণমূল দেওয়াল লিখনের চেষ্টা করছিল বলে অভিযোগ। বচসা, গোলমালের পর এলাকায় গুলিও চলে। কংগ্রেসের অভিযোগ, তৃণমূলের দলীয় দফতর থেকে গুলি চালানো হলে তিন কংগ্রেসি গুলিবিদ্ধ হন। গ্রেফতার করা হয় সায়েদ আলি ও ইলিয়াস শেখকে। তারা তৃণমূল কর্মী বলে কংগ্রেস দাবি করে।
গুলিচালনার ঘটনায় ধৃতদের এ দিন আদালতে তোলা হলে মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠিয়ে দিয়েছেন। গুলিবিদ্ধ ফারুকে আজমকে কলকাতায় পাঠানো হয়েছে। ফারুকে আজমের কোমরে গুলি লেগেছে। বাকি দু’জন মালদহ মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন। এলাকায় পুলিশ টহল ছিল এ দিনও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy