Advertisement
০৮ মে ২০২৪

ফের ডাকাতি মালদহে, এ বার পুলিশের বাড়িতে

জেলায় ডাকাতির আতঙ্কের মধ্যেই এক পুলিশ কর্মীর বাড়িতে ডাকাতি ঘটনা ঘটে গেল। মানিকচক থানার সাহেবনগর গ্রামে ঘঠনাটি ঘটেছে। এই ঘটনায় গ্রামবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১২টা নাগাদ তিনজনের একটি দুষ্কৃতী দল গ্রিলের তালা ভেঙে বাড়িতে ঢুকে মিনিট দশেক ধরে তান্ডব চালায় বলে অভিযোগ। রাত জেগে গ্রাম পাহারা দেওয়ার পরেও ডাকাতির ঘটনা ঘটায় নিরাপত্তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ।

বিধ্বস্ত ঘরে বসে রয়েছেন পুলিশকর্মীর স্ত্রী। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়।

বিধ্বস্ত ঘরে বসে রয়েছেন পুলিশকর্মীর স্ত্রী। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৫ ০২:০৭
Share: Save:

জেলায় ডাকাতির আতঙ্কের মধ্যেই এক পুলিশ কর্মীর বাড়িতে ডাকাতি ঘটনা ঘটে গেল। মানিকচক থানার সাহেবনগর গ্রামে ঘঠনাটি ঘটেছে। এই ঘটনায় গ্রামবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১২টা নাগাদ তিনজনের একটি দুষ্কৃতী দল গ্রিলের তালা ভেঙে বাড়িতে ঢুকে মিনিট দশেক ধরে তান্ডব চালায় বলে অভিযোগ। রাত জেগে গ্রাম পাহারা দেওয়ার পরেও ডাকাতির ঘটনা ঘটায় নিরাপত্তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ।

তাঁদের অভিযোগ, জেলার বিভিন্ন গ্রামে ডাকাতির হুমকি দিয়ে চিঠি আসছে। অথচ পুলিশ বিষয়টিকে হালকা ভাবে নিচ্ছে। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রাতেই খবর পাওয়া মাত্র পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ সঠিক নয়।’’

পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হুমকি চিঠি পাওয়ার পর সন্ধ্যা নামলেই গ্রামের পুরুষেরা মশাল, লাঠি নিয়ে গ্রাম পাহারা দেওয়ার কাজ শুরু করেছেন। গত চারদিন ধরে ইংরেজবাজার ও মানিচকের বিস্তৃর্ণ এলাকা জুড়ে পাহারার কাজ চলছে। কলকাতা পুলিশের এক কনস্টেবল শেখ আনসারুল কর্মসূত্রে বাড়িতে থাকেন না। বাড়িতে তাঁর স্ত্রী জাসমিনা বিবি দুই ছেলে মেয়ে নিয়ে থাকেন। দুষ্কৃতীরা গ্রিল ভেঙে বাড়ির ভিতরে ঢুকে মারধর করে জাসমিনা বিবি’র কাছ থেকে আলমারির চাবি কেড়ে নেয়। নগদ ছয় হাজার টাকা ও দেড় ভরি সোনার অলঙ্কার নিয়ে দুষ্কৃতীরা চম্পট দেয়। মহিলার চিত্‌কারে গ্রামবাসীরা ছুটে আসায় দুষ্কৃতীরা পালায়।

জাসমিনা বিবি বলেন, “মুখে কালো কাপড় বাঁধা তিনজন দুষ্কৃতী ঘরে ঢুকেছিল। মারধর করে সব ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়েছে।” পুলিশের দাবি, সারারাত এলাকাগুলিতে টহল দেওয়া হয়েছে। গ্রামের মানুষেরাও পাহারায় ছিল। তার পরেই কীভাবে ঘটনা ঘটল তাই খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে। স্থানীয় কেউ এরসঙ্গে জড়িত কি না দেখা হচ্ছে।

গত শুক্রবার ইংরেজবাজারের শোভানগরের মাদিয়া বাধাগাছ গ্রামের ছয়টি পরিবার ডাকাতির হুমকি দিয়ে লাল খামে মোড়া চিঠি পায়। গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শুরু হয়ে যায় রাত পাহারা। গ্রামবাসীদের হাতে ধরা পড়ে যায় তিন দুষ্কৃতী। তাদেরকে মারধর দিয়ে বাইক পুড়িয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয় গ্রামবাসীরা। ফের ইংরেজবাজারের চন্ডীপুরে ও মানিকচকের মিরদাঁদপুরের দামোদর পুরে পিকআপ ভ্যানে করে দুষ্কৃতীরা গ্রামবাসীদের লক্ষ্য করে বোমা মারে বলে অভিযোগ। ঘটনায় একজন মারা যান। আহত হয় এক কিশোর সহ চারজন। একের পর এক ঘটনা ঘটায় ইংরেজবাজারের শোভানগর, বিনোদপুর, মিল্কি এবং মানিকচকের চৌকিমিরদাঁদপুর গ্রামপঞ্চায়েতের বাসিন্দাদের মধ্যে ডাকাতির আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

গত সোমবার মানিকচক থেকে মালদহ ফেরার পথে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক মোদির গাড়ি থামায় বিনোদপুরের নিয়ামতপুরের বাসিন্দারা। গ্রামবাসীদের হাতে হাঁসুয়া, লাঠি এবং বেশ কয়েকজনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে বলে দাবি করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। গ্রামবাসীরা উত্তেজিত হয়ে পুলিসের উপরে ইট বৃষ্টি শুরু করে। পুলিশের বাসিন্দাদের গোলমাল হয়। ১৫ জন গ্রেফতারও হন। পুলিশ দুষ্কৃতীদের না ধরে বাসিন্দাদের হেনস্থা করছে বলে অভিযোগও ওঠে যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

police officer house robbery malda
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE