ফের কলেজে সংঘর্ষের ঘটনায় নাম জড়িয়ে গেল তৃণমূলের উত্তর দিনাজপুরের যুব তৃণমূল সভাপতি তথা জেলা পরিষদ সদস্য গৌতম পালের। সোমবার ইটাহারের ডক্টর মেঘনাদ সাহা কলেজে ভোট নিয়ে টিএমসিপির সঙ্গে সংঘর্ষের সময়ে এবিভিপির দুই সদস্য গুলিবিদ্ধ হন। তারপরেই এবিভিপির তরফে গৌতমবাবু এবং টিএমসিপির জেলা কার্যকরী সভাপতি ইন্দ্রনীল আচার্য সহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় অভিযোগ হয়েছে। পুলিশ অবশ্য কাউকেই গ্রেফতার করেনি। সোমবার রায়গঞ্জের সুরেন্দ্রনাথ কলেজে গোলমালের ঘটনায় টিএমসিপি সহ তিনটি ছাত্র সংগঠনের অজ্ঞাতপরিচয় চারশো জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ।
গৌতমবাবুর দাবি, সোমবার ইটাহার কলেজে মনোনয়ন তোলা নিয়ে সংঘর্ষের সময় তিনি ঘটনাস্থলেই ছিলেন না। তাঁর বক্তব্য, “ডায়েরিয়া ও পেটে ব্যথা নিয়ে ইটাহার ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি ছিলাম।” কিন্তু বিরোধীদের বক্তব্য, গৌতমবাবুকে তাঁরা সংঘর্ষের সময় কলেজের সামনেই দেখেছেন। বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর চক্রবর্তীর দাবি, “গৌতমবাবু মিথ্যা কথা বলছেন। কলেজে সংঘর্ষের সময় তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন।” সিপিআই নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায়ও বলেন, “গৌতমবাবুর নেতৃত্বেই বহিরাগতরা বোমা, পিস্তল নিয়ে বিরোধীদের হঠিয়ে কলেজ দখলের চেষ্টা করে। এখন তিনি নিজেকে বাঁচাতে মিথ্যা কথা বলছেন।”
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, গৌতমবাবুর দাবি ঠিক কি না, তা দেখা হচ্ছে। ইটাহারের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক তন্ময় পালের বক্তব্য, “গৌতমবাবু ভর্তি হয়েছিলেন কি না, তা নথি না দেখে বলা সম্ভব নয়।”
গৌতমবাবুর বিরুদ্ধে এর আগেও কলেজে হামলার অভিযোগে জামিন অযোগ্য ধারাতেই মামলা হয়েছিল। ২০১৩ সালের ২৭ অগস্ট গৌতমবাবু এই কলেজের অধ্যক্ষা স্বপ্না মুখোপাধ্যায় সহ তিন জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও এক শিক্ষাকর্মীকে নিগ্রহ করেছিলেন বলে অভিযোগ। সেই দিন কলেজে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী। পরীক্ষায় নকল করার সময় তাঁকে বাধা দেওয়ার খবর পেয়েই গৌতমবাবু সঙ্গীসাথীদের নিয়ে কলেজে ঢুকে গোলমাল পাকান বলে অভিযোগ। স্বপ্নাদেবী সহ ওই তিন শিক্ষক শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীর বিরুদ্ধেও মারধর, শ্লীলতাহানি ও সোনার হার ছিনতাইয়ের পাল্টা অভিযোগ করেন গৌতমবাবু ও তাঁর স্ত্রী। এই ঘটনার মাস কয়েক পরে গৌতমবাবু কলকাতা হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন। এখন তিনি ওই মামলায় জামিনেই মুক্ত রয়েছেন।
এ বার তাঁর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা সহ বিভিন্ন ধারায় ফের মামলা দায়ের হয়েছে। কিন্তু কেন তাঁকে বা ইন্দ্রনীলবাবুকে গ্রেফতার করা হয়নি? জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজা বলেন, “ইটাহারের ঘটনায় টিএমসিপি, এবিভিপি এবং এআইএসএফের অভিযোগের ভিত্তিতে মোট তিনটি মামলা হয়েছে। তদন্ত করে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে।”
সোমবার রায়গঞ্জের সুরেন্দ্রনাথ কলেজেও গোলমালের সময় আহত হন রায়গঞ্জ থানার আইসি গৌতম চক্রবর্তী সহ ১৫ জন পুলিশকর্মী। রায়গঞ্জের ডিএসপি (ডিআইবি) সুজিত ঘোষ বলেন, “সংঘর্ষের পুরো ঘটনাটি পুলিশের তরফে ভিডিও রেকর্ডিং করা হয়েছে। শীঘ্রই ফুটেজ খতিয়ে দেখে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy