মেলা দেখতে গিয়ে আহত হন সাধারণ মানুষ। —নিজস্ব চিত্র।
প্রতিমা বিসর্জনকে কেন্দ্র করে মেলা কমিটি ও পুজো কমিটির মধ্যে সংঘর্ষে জখম হলেন তিন মহিলা ও চার শিশু-সহ ১২ জন। রবিবার রাতে ফালাকাটার কুঞ্জনগর গ্রামের ঘটনা। দুই কমিটির মাথায় দুই তৃণমূল নেতা থাকায় বিষয়টি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের চেহারা নিয়েছে। তবে কোনও পক্ষই এখনও পুলিশে অভিযোগ করেনি। ফালাকাটার তৃণমূল বিধায়ক অনিল অধিকারী বলেন, “দু’পক্ষই বিষয়টি নিজেদের মধ্যে মিটিয়ে নিতে চাইছে। সে জন্য আমাকে চাইছে তাঁরা। দেখা যাক কী ভাবে মেটানো যায়।”
দশমী উপলক্ষে গত চল্লিশ বছর ধরে কুঞ্জনগর গ্রামে মেলা হয়। গত চার বছর ধরে গ্রামের তৃণমূলের নেতারা মেলা কমিটির মাথায় রয়েছেন। রবিবার রাতে ঢাক বাজানো নিয়ে গোলমাল বাঁধে। একটি পুজো কমিটি ঢাক বাজালে মেলা কমিটি আপত্তি করে বলে অভিযোগ। রবিবার এলাকার ফুটবল মাঠে দশমী উপলক্ষে মেলা বসেছিল। আশেপাশের গ্রাম এলাকার প্রায় ১৩ টি প্রতিমা এনে রাখা হয় মাঠে। রাত ১০ টা নাগাদ পাশের চুয়াখোলা গ্রামের পুজো কমিটির লোকজনের সঙ্গে মেলা কমিটির সদস্যদের মধ্যে বচসা শুরু হয়। পরে তা সংঘর্ষের আকার নেয়। বাঁশ, লাঠি নিয়ে একে অপরের উপর হামলা শুরু করে দু’পক্ষ। মেলায় মহিলা ও শিশুরা দু পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যায়। ঢিল ছোঁড়াছুড়ির ঘটনার সময় তাঁরাও জখম হন। চুয়াখোলার বাসিন্দা জখম গৃহবধূ অনিতা বিশ্বাস বলেছেন, “মেলা দেখতে গিয়ে গণ্ডগোলের মাঝে পড়ে যাই। সে সময় আমার মুখে ঢিল ছোঁড়া হয়।” রাতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। জখমদের ফালাকাটা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। পরে সোমবার দুপুরেও ফের সংঘর্ষ হয়। পাথরের ঘায়ে মাথা ফাটে চার জনের। চুয়াখোলা গ্রামের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী তথা পুজো কমিটির কর্তা শ্যামল দাস বলেন, “ঢাক বাজানো নিয়ে গণ্ডগোলের সূত্রপাত হয়। সেখান থেকে মারপিট শুরু হয়। আমাদের প্রচুর লোক জখম হয়েছেন। বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার জন্য আলোচনা চলছে। তাই থানায় অভিযোগ জানানো হয়নি।” অন্য দিকে, মেলা কমিটির সম্পাদক তথা এলাকার তৃণমূল নেতা দুলাল ধরের অভিযোগ, সোমবার ফালাকাটা থানায় যাওয়ার পথে চুয়াখোলায় রাস্তায় তাঁকে মারধর করা হয়। দুলালবাবুর কথায়, “থানায় যাচ্ছিলাম। সে সময় আচমকা হামলা করা হয়। তাও আমরা চাইছি বিষয়টি মিটে যাক।” এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন আলিপুরদুয়ার জেলার সিপিএম নেতা মৃণাল রায়। তিনি বলেন, “কেউ যাতে আইনের রাস্তায় না যান, সে জন্য তৃণমূল নেতৃত্ব জখমদের চাপ দিচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে। ফের তা নিয়ে সালিশি করে মেটানোর রাস্তা খুঁজছেন নেতারা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy