বক্সা ফিডার রোডে যানবাহনের চাপ থাকে রোজই।—নিজস্ব চিত্র।
শোভাগঞ্জ থেকে শহরের চৌপথীর দিয়ে আলিপুরদুয়ার-কুমারগ্রাম রোড চলে গিয়েছে কালজানি সেতু পর্যন্ত। ১ নম্বর অসম গেট থেকে বক্সা ফিডার রোড গিয়ে শেষ হয়েছে। আলিপুরদুয়ার চৌপথীতে মূলত দু’টি প্রধান রাস্তা শহরে যাতায়াতের জন্য ব্যবহার হয়ে থাকে। বিশেষত, বড় গাড়ির ক্ষেত্রে ওই দুটি রাস্তাই ভরসা। তা ছাড়া, নবগঠিত আলিপুরদুয়ার জেলা শহরের যানবাহন চলাচলের জন্য বিকল্প রাস্তা নেই। কালজানি সেতুর কাছে ছোটখাট দুর্ঘটনায় গাড়ি রাস্তায় উল্টে গেলে আলিপুরদুয়ার থেকে কোচবিহার অথবা ফালাকাটা যাতায়াত সমস্যা হয়ে পড়ে।
শহরবাসীর অভিযোগ, সরকারি গড়িমসিতেই আলিপুরদুয়ারে যাতায়াতের জন্য বিকল্প রাস্তা তৈরি হয়নি। শোভাগঞ্জ থেকে চৌপথী পর্যন্ত আলিপুরদুয়ার কুমারগ্রাম রোডের সম্প্রসারণের কাজ সম্পূর্ণ করা নিয়েও টালবাহানা চলছে বলে অভিযোগ। ওই আলিপুরদুয়ার চৌপথী থেকে শোভাগঞ্জ পর্যন্ত আলিপুরদুয়ার-কুমারগ্রাম রোডের সম্প্রসারণের কাজ দীর্ঘদিন আগে শুরু হয়েছে। আলিপুরদুয়ার চৌপথি থেকে বাটা মোড়, জামতলা হয়ে কালজানি পর্যন্ত যাওয়া ওই রাস্তা চওড়া না হওয়ায় নিত্য দিন যানজট হচ্ছে। পূর্ত দফতরের কর্তাদের দাবি, টাকার অভাবে ওই রাস্তার কাজ বন্ধ রয়েছে। অর্থাভাবেই কালজানি সেতু পর্যন্ত রাস্তা চওড়ার কাজ হাত দেওয়া যায়নি বলে পূর্ত দফতর সূত্রের দাবি।
একে তো রাস্তা নেই। উপরন্তু, যতটা রয়েছে সেখানেও ট্রাক, বাস দাঁড়িয়ে যায়। উপায় কী? শহরে ট্রাক টার্মিনাস তৈরি হয়নি। ফলে, ট্রাকগুলি মাল ওঠানামা করায় রাস্তার ধারে দাঁড়িয়েই। এতে শহরের যানজট ক্রমশ বাড়ছে। আলিপুরদুয়ার শহরের কংগ্রেসের বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায় বলেন, “আলিপুরদুয়ার শহরে প্রায় তিন দিক ঘিরে রয়েছে কালজানি নদী। তার উপর একটি মাত্র সেতু। বিকল্প সেতু তৈরির জন্য চেষ্টা চলছে। শহরের বখরিবাড়ি মোড় থেকে দ্বীপচর এলাকা হয়ে কোচবিহারের দিকে সেতু তৈরির জন্য চেষ্টা চলছে। বিকল্প সেতু হলে কোচবিহারের সঙ্গে আলিপুরদুয়ারের দূরত্ব আরও প্রায় পাঁচ কিলোমিটার কমবে। বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সড়ক নিগমকে বলা হয়েছে।”
শহরের মধ্যে বড় বাজার থেকে বেলতলা মোড় পর্যন্ত বিকল্প রাস্তা হিসাবে প্রশাসন চিহ্নিত করেছে। কিন্তু যতটা প্রয়োজন রাস্তা ততটা চওড়া হয়নি বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। তা ছাড়া ওই রাস্তাটি শুরু হয়েছে শহরের বড়বাজার এলাকা থেকে। শেষ হয়েছে পাশের বিবেকানন্দ ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ভোলারডাবরি এলাকায়। পর্যাপ্ত রাস্তা না থাকলে কী হবে, যানবাহন বেড়েই চলেছে।
যেমন, শহরে অটোর সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। শহরের ট্রাফিক বিধির তোয়াক্কা না করে রাস্তার মোড়গুলি দখল করে দাঁড়িয়ে থাকে অনেক অটো। ছোট যাত্রীবাহী গাড়িও যথেচ্ছ রাস্তার মোড় জুড়ে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। পুলিশ-প্রশাসন তা দেখলেও কোনও ব্যবস্থা নেয় না কেন, সেটা বুঝতে পারেন না বাসিন্দারা অনেকেই। অনেকের অভিযোগ, নিশ্চয়ই কোনও ‘বোঝাপড়া’ রয়েছে, সে জন্যই বেআইনি পার্কিং হঠাতে অভিযান হয় না। ফলে অলিগলি থেকে বের হতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন বাসিন্দারা। অভিযোগ, চৌপথি এলাকার ৫০ মিটারের মধ্যে গাড়ি দাঁড় করানো নিষেধ থাকলেও ট্রাফিক পুলিশের সামনেই দীর্ঘক্ষণ যাত্রীর অপেক্ষায় রাস্তা দখল করে দাড়িয়ে থাকছে অটো ও বড় গাড়ি। এতেই শহরের ব্যস্ততম এলাকায় তৈরি হচ্ছে যানজট। দাবি, বার বার বিভিন্ন সংগঠনের তরফে পুলিশ প্রশাসনকে বিষয়টি জানালেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
আলিপুরদুয়ার চেম্বার অফ কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডস্ট্রিজের সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিত্ দে জানান, যত দ্রুত সম্ভব শহরে যাতায়াতের জন্য বিকল্প রাস্তার কাজ করাতে হবে। শহরে সুষ্ঠু পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। পুরসভার পক্ষ থেকে অবশ্য পরিকাঠামোর মান বাড়ানোর চেষ্টা চলছে বলে দাবি করা হয়েছে। কিন্তু ভুক্তভোগী বাসিন্দাদের অনেকেরই অভিজ্ঞতা অন্য কথা বলছে। অন্তত, জঞ্জাল সাফাই, ‘ডাম্পিং গ্রাউন্ড’ নিয়ে কতদিন ধরে টালবাহানা চলছে সেই প্রসঙ্গেই উদ্বিগ্ন শহরবাসীদের অনেকেই।
(চলবে)
কেমন লাগছে আমার শহর? নিজের শহর নিয়ে আরও কিছু বলার থাকলে আমাদের জানান।
ই-মেল পাঠান district@abp.in-এ। Subject-এ লিখুন ‘আমার শহর-শহরের নাম’।
অথবা চিঠি পাঠান, ‘আমার শহর-শহরের নাম’,
আনন্দবাজার পত্রিকা, ১৩৬/৮৯ চার্চ রোড, শিলিগুড়ি ৭৩৪০০১
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy