Advertisement
E-Paper

বিজেপি সাংসদকে বরণ তৃণমূল নেতাদের

ফুলের তোড়া দিয়ে বিজেপি সাংসদকে বরণ করলেন তৃণমূলের আইনজীবী সেলের নেত্রী। সাংসদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন জেলা তৃণমূল নেতা। কয়েক দিন আগে নিজের বাড়ি লাগোয়া আদালতে গিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌতম দেবকে ক্ষোভের মুখোমুখি হতে হয়েছে। সেখানে বিজেপির সাংসদকে ‘ফুল’ দিয়ে স্বাগত জানানোর ঘটনা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:১৪
সুরেন্দ্র সিংহ অহলুয়ালিয়াকে সংবর্ধনা। বৃহস্পতিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

সুরেন্দ্র সিংহ অহলুয়ালিয়াকে সংবর্ধনা। বৃহস্পতিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

ফুলের তোড়া দিয়ে বিজেপি সাংসদকে বরণ করলেন তৃণমূলের আইনজীবী সেলের নেত্রী। সাংসদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন জেলা তৃণমূল নেতা।

কয়েক দিন আগে নিজের বাড়ি লাগোয়া আদালতে গিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌতম দেবকে ক্ষোভের মুখোমুখি হতে হয়েছে। সেখানে বিজেপির সাংসদকে ‘ফুল’ দিয়ে স্বাগত জানানোর ঘটনা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই। উপরন্তু, গৌতমবাবু নিজে বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য।

মাসখানেক ধরে শিলিগুড়ি আদালতে কর্মবিরতি চলতে থাকায়, বৃহস্পতিবার আইনজীবীদের সমস্যা শুনতে মহকুমা আদালত চত্বরে গিয়েছিলেন দার্জিলিঙের সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাকক্ষে সাংসদের আধ ঘণ্টার বক্তৃতায় এ দিন আইনজীবীদের বারেবারে হাততালি দিয়েছেন অনেকেই। শিলিগুড়ির আইনজীবীদের দাবি মেটাতে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী সদানন্দ গৌড়া, তাঁর অনুরোধে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে যে চিঠি লিখেছেন তার প্রতিলিপিও পড়ে শুনিয়েছেন তিনি। চিঠির বয়ান শুনেও তুমুল হাততালি। সবার পরে সাংসদকে নিয়ে আদালত চত্বর ঘুরেও দেখিয়েছেন আইনজীবীরা। সমস্যা মেটাতে আগামী ১০ জানুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি শিলিগুড়িতে আসছেন। প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করতে আইনজীবীদের প্রতিনিধি দলে থাকতে সাংসদকে আমন্ত্রণও জানিয়েছে বার অ্যাসোসিয়েশন।

শিলিগুড়ি আদালত চত্বরটি যে এলাকায় রয়েছে তার কাউন্সিলর মন্ত্রী গৌতমবাবু। শিলিগুড়ি মহকুমা আদালত চত্বরে দ্রুত স্থায়ী ভবন নির্মাণ এবং ভক্তিনগর থানা এলাকাকে শিলিগুড়ি আদালতের বিচারবিভাগীয় এক্তিয়ারে আনার দাবিতে, গত ৮ ডিসেম্বর থেকে কর্মবিরতি শুরু করেছে বার অ্যাসোসিয়েশন। কর্মবিরতি শুরুর ৪ সপ্তাহ পরেও সমস্যা নিয়ে আলোচনায় বসতে উদ্যোগী না হওয়ায় মন্ত্রী গৌতমবাবুর বিরুদ্ধে ক্ষোভও দানা বেঁধেছিল আইনজীবীদের মধ্যে।

রাজ্য বার কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান তথা তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্য সহ সভাপতি অরুণ সরকার প্রকাশ্য সভায় মন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। মন্ত্রী আলোচনায় উদ্যোগী না হওয়ায় একজন তৃণমূল সমর্থক হিসেবে নিজেকে ‘মর্মাহত ও লজ্জিত’ বলে দাবি করেছিলেন। এরপরে গত সোমবার মন্ত্রী গৌতমবাবু বার অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে আলোচনায় বসলেও, কয়েকজন সদস্যকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে শোনা গিয়েছিল।

এ দিন অবশ্য সভার শুরুতেই সাংসদ অহলুওয়ালিয়াকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান বার অ্যাসোসিয়েশনের সহ সাধারণ সম্পাদক সুস্মিতা বসু। তৃণমূলের লিগাল সেলের জেলা কমিটিরও সহ সম্পাদিকার পদে রয়েছেন সুস্মিতা দেবী। তিনি অবশ্য পরে দাবি করেছেন, বার অ্যাসোসিয়েশনের পদাধিকারী হওয়াতেই সাংসদকে বরণ করেছেন, এর পেছনে কোনও রাজনৈতিক কারণ নেই। তবে, তৃণমূলের জেলা নেতা অরুণবাবুর মুখেও এ দিন সাংসদের প্রশস্তি শোনা গিয়েছে। সাংসদের বক্তব্য শেষ হওয়ার পরে, মাইকে অরুণবাবু বলেন, “কাউকে ডেকে আনতে হয়েছে। আর সাংসদ নিজে থেকে আইনজীবীদের সমস্যা খোঁজ নিয়ে আদালতে এসেছেন সাংসদকে ধন্যবাদ।”

অহলুওয়ালিয়া অবশ্য এ দিন বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের দলমত নির্বিশেষে প্রধান বিচারপতির কাছে দাবি জানানোর পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, “রাজনীতি করতে আসিনি। জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি শিলিগুড়ির আইনজীবীদেরও প্রতিনিধি। আইনমন্ত্রী হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লিখে শিলিগুড়ির আইনজীবীদের দাবি বিবেচনার আর্জি জানিয়েছেন। আশা করছি প্রধান বিচারপতির সফরের পরে সমস্যা মিটবে।”

সাংসদকে বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি দলে থাকার অনুরোধ জানানো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন একাংশ। কর্মসমিতিতে আলোচনা না করে কেন তড়িঘড়ি সাংসদকে প্রতিনিধি দলে থাকার আমন্ত্রণ জানানো হল তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কয়েকজন আইনজীবী। বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে অবশ্য মন্ত্রী গৌতমবাবুকেও প্রতিনিধি দলে থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে জানানো হয়েছে। তবে এ দিন গৌতমবাবু বলেন, “এখনও আমন্ত্রণ পাইনি। এটা বারের নিজস্ব বিষয়। প্রয়োজন হলে আমি নিজে সর্বস্তরে দেখা করে কথা বলব। বার অ্যাসোসিয়েশনের সভায় আমি নিজের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছি। আশা করি, তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই।” বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক চন্দন দে বলেন, “অহলুওয়ালিয়া নিজেও আইনজীবী। সাংসদের ভূমিকাকে স্বাগত জানিয়েছি। এতে রাজনীতি নেই। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীও আশ্বাস দিয়েছেন। প্রতিনিধি দলে থাকতে তাঁকেও অনুরোধ জানানো হবে।”

siliguri bjp tmc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy