তৃণমূল ও বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন জখম হয়েছেন। সোমবার রাতে কোচবিহারের বক্সিরহাট থানার ফলিমারি এলাকায় ওই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। জখমদের মধ্যে বিজেপির ৫ সমর্থককে অসমের তামারহাট হাসপাতালে এবং তৃণমূলের এক সমর্থককে বক্সিরহাট হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সংঘর্ষের পরে গোটা এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, সম্প্রতি এলাকায় ডান এবং বাম দলগুলি থেকে কর্মী সমর্থকরা তাদের দলে আসতে থাকায়, প্রতিহিংসাবশত তৃণমূল হামলা চালিয়েছে। হামলার পরে জখমদের জেলার কোনও হাসপাতালে ভর্তি করতেও তৃণমূল বাধা দেওয়ায় তাঁদের লাগোয়া অসমের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে বিজেপির অভিযোগ। অন্যদিকে তৃণমূলের অভিযোগ, দলের এক সমর্থককে একা পেয়ে বিজেপির সমর্থকরকাই হামলা চালিয়েছে। অসম থেকে দুষ্কৃতীদের এনে বিজেপি হামলা চালিয়েছে বলে তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ।
কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত বলেন, “গোলমালের খবর এসেছে। এলাকায় বাহিনী মোতায়েন রয়েছে।” জেলার পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবালও জানিয়েছে, পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে।
বিজেপির অভিযোগ, লোকসভা ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকা বিরোধী শিবিরের তো বটেই শাসক দলের বহু সমর্থক দল বদলে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। ফলিমারি এলাকাতেও ২৪ মে তৃণমূল এবং আরএসপি, সিপিএম ছেড়ে তিন শতাধিক কর্মী সমর্থক বিজেপিতে যোগ দেন। সোমবার রাত সাড়ে ৭টা নাগাদ সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া কাশেম আলি, আলি শেখ, গণি শেখ, আসরাফুল তালুকদার পৃথকভাবে ফলিমারির খামারপাড়া বাজারে গেলে তাঁদের উপর হামলা হয় বলে অভিযোগ। তৃণমূলের মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীরা তাদের ঘেরাও করে দলবদলের কৈফিয়ৎ তলব করে, তা নিয়ে বাদানুবাদের জেরে ধারাল অস্ত্র ও লাঠি নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা হয় বলে অভিযোগ। বিজেপির জেলা সম্পাদক নিখিল রঞ্জন দে বলেন, “বিজেপিতে যোগ দেওয়ার অপরাধে তৃণমূল পরিকল্পিত হামলা চালিয়েছে। এমনকী জখমদের জেলার কোনও হাসপাতালে ভর্তি করানো যাবে না বলে রাস্তা আটকে দেওয়া হয়। বাধ্য হয়েই ৫ জনকে ঘুরপথে অসমের তামারহাট হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে। তাদের মধ্যে কাশেম আলি ও আলি শেখের অবস্থা আশঙ্কাজনক।”
তৃণমূল অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে গোলমালের জন্য বিজেপিকেই দায়ী করেছে। তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ,সোবান তালুকদার নামে দলের এক সমর্থককে বাজারে একা পেয়ে বিজেপি সমর্থকরা মারধর শুরু করে। তাঁকে বাঁচাতে এলে আরও কয়েকজন সমর্থককেও মারধর করা হয়। সে সময় অসম থেকে আনা দুষ্কৃতীদলের লোকদের নিয়ে বিজেপির সমর্থকরা এলাকায় তৃণমূল কর্মীসমর্থকদের ওপর হামলা চালায় বলে দাবি করা হয়েছে। সোবান তালুকদার ও জ্যোতিমর্য় সাহা সহ দলের অন্তত ২০ জন গুরুতর জখম হয়েছেন। তাদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে থাকা বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসতে বাঁধা দেওয়া হচ্ছে বলে তৃণমূলের তরফেও পাল্টা অভিযোগ করা হয়েছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “এদিন অসমের দুষ্কৃতীদের সঙ্গে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে অশান্তি করতে আমাদের কর্মীদের ওপর হামলা চালায় বিজেপি। এতে বামেদেরও মদত রয়েছে। মানুষ এসব বরদাস্ত করবেন না। সবকিছু পুলিশে জানিয়েছি।” বক্সিরহাট ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি স্বপন সাহা অভিযোগ করে বলেন, “আমাদের একজনও বিজেপিতে যাননি। বামেদের কিছু লোক বিজেপির সঙ্গে যৌথভাবে হামলা চালাচ্ছে। এদিন অন্তত ২০ জন জখম হয়েছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy