গুলিতে আহত পুলিশকর্মী তাশি শেরপা।
রাতের নজরদারি ভ্যানে বসা নিয়ে বচসার জেরে দুই কনস্টেবল স্বয়ংক্রিয় রাইফেল থেকে গুলি চালিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে জখম হয়েছেন দুই পুলিশ কনস্টেবল। বুধবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ ভক্তিননগর থানার এনজেপি ফাঁড়ির ৩১-ডি জাতীয় সড়কের তিনবাতি লাগোয়া এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ সূত্রের খবর, গুলিবিদ্ধ পুলিশ কনস্টেবলদের নাম তাশি শেরপা এবং কার্লস ওঁরাও। এরমধ্যে তাশির দুই পায়ে গুলির আঘাত রয়েছে। কার্লসের কাঁধের কাছে দুই হাতে গুলি লেগেছে। তাশি রাজ্য সশস্ত্র বাহিনীর ১০ ব্যাটিলিয়নের কর্মী। কার্লস শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্মী।
ঘটনার পর দু’জনকেই শিলিগুড়ি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ঘটনার জেরে ওই এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। এলাকা নিমেষের মধ্যে সুনসান হয়ে যায়। যে কয়েকটি দোকান খোলা ছিল, সেগুলিও বন্ধ হয়ে যায়। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার জগমোহন শুধু বলেছেন, “ঠিক কী কারণে গোলমাল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে তাশি শেরপা মানসিকভাবে কয়েকদিন ধরে বিপর্যস্ত ছিলেন।”
পুলিশ সূত্রের খবর, ভ্যানে বসা নিয়ে বচসা চলাকালীন প্রথমে তাশি কার্লসকে লক্ষ করে এলোপাথাড়ি গুলি চালান। তাঁকে থামাতে গাড়ির অন্য আরেক পুলিশ কনস্টেবল মানস চন্দ অভিযুক্ত তাশির পায়ে ২-৩ রাউন্ড গুলি চালিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন বলে তদন্তকারী অফিসারেরা জানিয়েছেন। মোট ৭/৮ রাউন্ড স্বয়ংক্রিয় রাইফেল থেকে গুলি চলছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, দিনে রাতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় নজরদারির দায়িত্বে থাকা ওই ভ্যানগুলিকে ‘কুইক রেসপন্স টিম’ বলা হয়। শিলিগুড়ি থানা ভবনের ১০০ ডায়াল থেকে এঁদের নির্দিষ্ট এলাকায় নজরদারির দায়িত্ব ঠিক করে দেওয়া হয়। এর জন্য বিভিন্ন থানার, সশস্ত্র বাহিনীর পুলিশ অফিসার এবং কনস্টেবলদের কাজে লাগানো হয়। রাতে ওই এলাকায় দায়িত্ব দেওয়া একটি বড় পুলিশ ভ্যানকে। ভ্যানটির দায়িত্বে ছিলেন অরূপ সিংহ নামের এক সহকারি সাব ইন্সপেক্টর। গাড়ির মাঝের আসনে ছিলেন শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের দুই কনস্টেবল মানস কুমার চন্দ এবং কার্লস ওঁরাও। পিছনের আসনে ছিলেন দশম সশস্ত্র বাহিনীর দুই কনস্টেবল তাশি শেরপা এবং আবদুল কাদের।
(বাঁ দিকে) কার্লোস ওঁরাও। (ডান দিকে) মানস চন্দ।
ওই এলাকায় নজরদারি চলার সময় তাশির সঙ্গে কার্লসের গোলমাল শুরু হয়। আগে বা পিছনে বসা নিয়ে দু’জনের কথা কাটাকাটি শুরু হয়ে যায়। তিনবাতি এলাকার একটু পরেই হঠাৎ বচসা চরমে ওঠে। সেই সময় তাশি পিছন থেকে কার্লসকে লক্ষ করে গুলি চালানো শুরু করেন বলে অভিযোগ। ভ্যানটি রাস্তায় দাঁড়িয়ে পরে। গাড়ি থেকে নামার পরেও তাশি গুলি চালান বলে অভিযোগ। এলোপাথাড়ি ছোড়া গুলি কার্লসের দু’হাতে লাগে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে মানস চন্দ তাশির দুই পা লক্ষ করে গুলি চালাতে থাকেন বলে অভিযোগ। এ দিন হাসপাতালের বেডে শুয়ে কার্লস বলেন, “কথা কাটাকাটির জেরে তাশি আমাকে গুলি করেছে। আমি কোনও গুলি চালাইনি।” তাশির বিছানায় শুয়ে অস্পষ্টভাবে শুধু বলেছেন, “আমাকেই গুলি করা হয়েছে। আমি কিছু জানি না।”
—নিজস্ব চিত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy