দলের অনুষ্ঠান চলাকালীনই তৃণমূলের মালদহের কার্যকরী সম্পাদক প্রতিভা সিংহের মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার ঘটনার ৫ দিন পরেও অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা শেখ ইয়াসিনকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। রতুয়ায় ওই ঘটনা নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের একাংশই। এই অবস্থায়, মঙ্গলবার বদলি করা হল রতুয়া থানার ওসি পরিমল সাহাকে। তাঁকে জেলা গোয়েন্দা বিভাগে পাঠানো হয়েছে। মোথাবাড়ির ফাঁড়ির ইনচার্জ রাজু খোন্দকারকে রতুয়া থানার ওসির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এটা রুটিন বদলি। পরিমল সাহাকে রতুয়া থানা থেকে সরিয়ে জেলা গোয়েন্দা বিভাগে পাঠানো হয়েছে।” তবে পরিমলবাবু বিশদে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, “বদলির চিঠি পেয়েছি।”
রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যান পালন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী অবশ্য আগেই ওসির কাজকর্মে বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন। ওই ঘটনার পরেই কৃষ্ণেন্দুবাবু অভিযোগ করেছিলেন, “গোলমাল হতে পারে এই আশঙ্কায় রতুয়া থানার ওসিকে আগাম জানানো হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রতিভাদেবীকে যখন মাটিতে ফেলে শেখ ইয়াসিন ও তার দলবল পেটাচ্ছিল, তখন দূরে দাঁড়িয়ে ওসি মুচকি মুচকি হাসছিলেন বলেও কৃষ্ণেন্দুবাবু অভিযোগ করেছিলেন। বদলির খবরের পরে মন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া, “রতুয়ার ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী নিজে হস্তক্ষেপ করেছেন। দোষীদের মুখ্যমন্ত্রী কঠোর শাস্তি দেওয়ার কথা বলেছেন। যাঁর নেতৃত্বে দলের কাযর্কারী সভাপতিকে মারধর করা হল, তাঁকে পাঁচদিন পরেও রতুয়া থানার পুলিশ ধরতে পারল না।” কৃষ্ণেন্দুবাবুর অভিযোগ, “ওসির অপদার্থতার জন্যই সেদিনের এই ঘটনাটি ঘটেছিল।”
গত ১৩ জুন রতুয়া থানার পিছনের মাঠে তৃণমূলের জেলা সভাপতি সভা ডেকেছিলেন। সেই সভায় মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু অনুগামী বলে পরিচিত প্রতিভাদেবী মঞ্চ থেকে ব্লকের নেতাদের নেমে যাওয়ার জন্য মাইকে ঘোষণা করেন। এর পরেই রতুয়া থানার ওসির সামনে তাঁকে ইয়াসিন ও পাঁচ-ছয় জন মঞ্চ থেকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে রড দিয়ে মাথা ফাটিয়ে শাড়ি ছিঁড়ে ফেলে বলে তিনি অভিযোগ করেন। ঘটনার পরে পুলিশ মূল অভিযুক্ত শেখ ইয়াসিনের ঘনিষ্ঠ তিনজনকে গ্রেফতার করে। কিন্তু, মূল অভিযুক্ত গ্রেফতার না হওয়ায় ওসির ভূমিকা নিয়ে ফের মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে অভিযোগ করেন জেলার নেতাদের একাংশ।