ডিজে তথা ডিস্ক জকি সাউন্ডবক্স বাজানোকে কেন্দ্র করে বরযাত্রী ও বাসিন্দাদের একাংশের বিবাদে ধুন্ধুমার কান্ড বাঁধল বিয়েবাড়িতে। শুক্রবার ভোর রাতে মালদহের চাঁচলের সুকান্তপল্লি এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। দু’পক্ষই লাঠি নিয়ে পরস্পরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেছে। সংঘর্ষে ৩ মহিলা বরযাত্রী সহ ১১ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। হামলার সময় কয়েকজন বাসিন্দা বরযাত্রী মহিলাদের অলঙ্কার ছিনতাই সহ শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
জখমদের প্রথমে চাঁচল হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। ডিজে বক্স বাজানোর প্রতিবাদ করায় তাঁদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে বলে বাসিন্দারা দাবি করেছেন। দু’তরফে পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছে। চাঁচলের আইসি তুলসীদাস ভট্টাচার্য এই প্রসঙ্গে বলেন, “ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। দু’পক্ষের অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুকান্তপল্লির বাসিন্দা অশোক পোদ্দারের মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল বৃহস্পতিবার। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বরযাত্রীর সংখ্যা ছিল শতাধিক। ভোররাতে নব বর-বধূকে নিয়ে চাঁচলের মায়াপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার সময় ডিজে বক্স বাজানো শুরু হয় বলে অভিযোগ। সেই সঙ্গে চলতে থাকে মহিলা সহ পুরুষদেরও নাচ, হাততালি, শিসও। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভোররাতে তার স্বরে গান বাজানায় সকলেরই ঘুমের দফারফা হয়ে যায়। যদিও, বরযাত্রী দলের অভিযোগ, নিছকই নিজেদের আনন্দের জন্য ডিজে বক্স বাজানো শুরু হলেও, স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দাও এসে হুল্লোড় শুরু করেন। বরযাত্রীদের সঙ্গে মিশে নাচের সময়ে রানা দাস সহ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা মহিলাদের হাত ধরে টানাটানি করতে শুরু করেন। সে সময়ে অশান্তি এড়াতে ডিজে বক্স বন্ধ করা হলে, স্থানীয় বাসিন্দারা আরও একঘন্টা বক্স বাজানোর দাবি তোলেন বলে অভিযোগ। তারপরেই বরযাত্রীদের উপর চড়াও হয়ে তাঁদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ জানানো হয়েছে। বরযাত্রী দলের মহিলাদের মারধর করে অলঙ্কার ছিনিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের পাল্টা অভিযোগ, গভীর রাত পর্য়ন্ত বিয়ে বাড়িতে ডিস্ক জকি বাজানো হলেও কেউ কিছু বলেনি। কিন্তু ফের ভোররাতে বাজানো শুরু হতেই রানা দাস সহ কয়েকজন বাসিন্দা প্রতিবাদ জানাতে গেলে বরযাত্রীদের একাংশ মারধর করে। ভয় পেয়ে রানাবাবু পাশের এক বাড়িতে আশ্রয় নিলে সে বাড়ির বেড়া ভেঙে ঢুকে তাঁদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এক বাসিন্দার মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় বলে অবিযোগ। রানাবাবুর অভিযোগ, “সারা রাত ঘুম হয়নি। আমার ৬ মাসের ছেলে অসুস্থ। তাই ভোরে ফের ডিজে বাজানোয় তা বন্ধ করার কথা বলতে গেলে আমাকে সহ কয়েকজনকে মারধর করা হয়। এখন উল্টে আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে।”
যদিও বরযাত্রী বাবলু দাসের পাল্টা অভিযোগ, “রানা দাস সহ কয়েকজন বাসিন্দা শুধু মারধর করেছে তাই নয়, মহিলাদের অলঙ্কার ছিনতাই করে। তাঁদের শ্লীলতাহানি করারও চেষ্টা করে। পুলিশকে সব জানিয়েছি।” স্থানীয় বাসিন্দা এবং বরযাত্রীদের গোলমালে বিড়ম্বনায় নববধূর পরিবারের সদস্যরা। বধূর মা কৃষ্ণাদেবী বলেন, “কী হয়েছে জানি না। তবে মেয়ে বারবার ফোন করে খোঁজখবর নিচ্ছে। কী যে করি!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy