তৃণমূল ছাত্র পরিষদের হাত থেকে মেখলিগঞ্জ কলেজ ছিনিয়ে নিল অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ। তৃণমূলের দাবি, বামেদের ভোট পেয়েই এই কলেজে জিতেছে এবিভিপি।
ওই জয়ে গোটা কোচবিহার জেলায় বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে খুশির হাওয়া ছড়িয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার ওই কলেজের ২০টি আসনে ভোট হয়। কলেজ সূত্রের খবর, তার মধ্যে এবিভিপি ১২টি আসনে এবং টিএমসিপি ৮ টি আসনে জয়ী হয়েছে। এসএফআই এবং ডিএসও একটি আসনও পায়নি। বিজেপির তরফে দাবি করা হয়েছে, নিরপেক্ষ ভাবে ভোট হলে প্রতিটি কলেজেই এমন ফল হবে। তৃণমূলের অবশ্য দাবি, বামেদের ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছে এবিভিপি। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “বামেরা ওই কলেজে একটি আসনও পায়নি। বিষয়টি দলীয় পর্যায়ে গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হবে।”
এর আগে পুরুলিয়ার একটি কলেজের ছাত্র সংসদ দখল করেছিল এবিভিপি। আর একটি কলেজে তারা একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল। রঘুনাথপুর কলেজে টিএমসিপির সঙ্গে লড়াই করে অল্পের জন্য ছাত্র সংসদ হাতছাড়া হয় এবিভিপির। রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের ধারণা, এ রাজ্যের ছাত্র রাজনীতিতে ক্রমশ নিজেদের ছাপ রাখতে শুরু করেছে গেরুয়া শিবির। খাস কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জুট অ্যান্ড ফাইবার টেকনোলজি ক্যাম্পাস নিজেদের দখলে নিয়েছে এবিভিপি। মনোনয়ন তোলায় হুমকি থেকে শুরু করে আরও নানা বাধা সত্ত্বেও রাজ্যের কিছু কলেজে এবিভিপির সাফল্য তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনীতির পর্যবেক্ষকেরা। এবিভিপির রাজ্য সম্পাদক সুবীর হালদার বলেছিলেন, “যেখানেই টিএমসিপির সন্ত্রাসকে মোকাবিলা করে আমরা মনোনয়ন দিতে পারছি, সেখানেই জিতছি। সব জেলার ক্ষেত্রেই তা-ই ঘটছে।”
মেখলিগঞ্জ বরাবর বাম তথা ফরওয়ার্ড ব্লকের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত। গত বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে তৃণমূল হাওয়ার মধ্যেই মেখলিগঞ্জে জয়ী হন ফরওয়ার্ড ব্লকের পরেশ অধিকারী। রাজ্যে পরিবর্তনের পরে অবশ্য ওই কলেজ বামেদের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকে ওই এলাকায় বিজেপির শক্তি বাড়তে থাকে। এবারে টিএমসিপি এবিভিপির কঠিন লড়াইয়ের সামনে পড়ে।
কলেজ সূত্রের খবর, ওই কলেজের ২০ টি আসনের মধ্যে এবিভিপি এবং টিএমসিপি সব আসনেই প্রার্থী দেয়। এসএফআই ১৭ টি আসনে প্রার্থী দেয়। ডিএসও ২ টি আসনে প্রার্থী দেয়। ফরওয়ার্ড ব্লকের ছাত্র সংগঠন এবার তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে কোচবিহার জেলার কোনও কলেজেই ছাত্র নির্বাচনে অংশ নেয়নি। মেখলিগঞ্জের ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক পরেশ অধিকারী বলেন, “কোনও কলেজেই গণতন্ত্র বলে কিছু নেই। সে কারণেই এবার জেলাগত ভাবে কলেজ নির্বাচনে না লড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আমরা লড়লে ফল অন্য রকম হতো। আমাদের ভোট কোনও না কোনও দিকে গিয়েছে।”
এসএফআইয়ের কোচবিহার জেলা সম্পাদক দেবজ্যোতি গোস্বামী বলেন, “আমরা ওই কলেজে এককভাবে লড়াই করেছি। ফ্রন্টগত জোট করে লড়লে মেখলিগঞ্জ কলেজ আমাদের দখলে আসত। আগামী দিনে ওই ব্যাপারে ভাবতে হবে।”
ছাত্র ব্লকের ভোট বিজেপির দিকেই গিয়েছি বলে দাবি তৃণমূলের সংগঠনের মেখলিগঞ্জ ব্লক সভাপতি লক্ষ্মীকান্ত সরকারের। তাঁর দাবি, “ছাত্র ব্লক এবং এসএফআইয়ের ভোট এবিভিপি পেয়েছে।” তিনি বলেন, “তলে তলে সব জোট হয়েছে। তাই এমন ফল হয়েছে। এই অনৈতিক জোটের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে।” বিজেপির কোচবিহার জেলা সাধারণ সম্পাদক নিখিল রঞ্জন দে অবশ্য বলেন, “যুব সমাজ পরিবর্তনের পরিবর্তন চাইছেন, তা এবার মেখলিগঞ্জ কলেজ ভোটের ফলে ফের স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। এখানে অন্য কোনও বিষয় ভেবে লাভ নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy