দর্জির দোকানে কাজ করে সংসারের হাল অনেকটাই ধরেছিলেন এক তরুণী। সোমবার দিনভর টানা কাজের পর এলাকায় কৃষিমেলা গিয়েছিলেন। কথা ছিল, বাবার সঙ্গেই বাড়ি ফিরবেন। ফেরার সময় সঙ্গে ছিলেন ওই তরুণীর বাবার পরিচিত এক পপকর্ণ ব্যবসায়ীও। মাঝ রাস্তায় দুষ্কৃতীরা তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করা হয় ওই তরুণীকে। তাঁর বাবা ও ওই ব্যবসায়ীকে ব্যাপক মারধর করে রাস্তায় ফেলে রেখে যায় তারা।
গত সোমবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ ইসলামপুর থানার মিলনপল্লির ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের ফার্ম গেট এলাকায় এই ঘটনার পরে মূল অভিযুক্ত শিবা দাস নামে এক যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজা বলেন, “ঘটনায় গণধর্ষণের মামলা রুজু হয়েছে। মূল অভিযুক্তকে ধরা হয়েছে।”
পুলিশ জানিয়েছে, শিবার বিরুদ্ধে এলাকাতে গন্ডগোল সহ ইসলামপুর থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশ গণধর্ষণ, মারধর, চুরি, ষড়যন্ত্রের ধারায় মামলা করেছে। বৃহস্পতিবার ধৃতকে আদালতে তোলা হয়। সরকারি আইনজীবী সৌমিত্র সিংহ সরকার জানান, ধৃতকে বিচারক তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। শিবার অবশ্য দাবি, “আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। ওই যুবতীকে আমি চিনিই না।”
তরুণীর পরিবারের লোকজনের দাবি, ওই চার জনের মধ্যে তিন জন এলাকার যুবক। বাকি এক জনকে চেনা যায়নি। জাতীয় সড়কের কিছু দূরে তরুণীকে ফেলে রেখে তারা পালায়। পরে নির্যাতিতার বাবা ও পরিচিত ব্যক্তি তাঁকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরের দিন পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। বুধবার তরুণীর মেডিক্যাল টেস্টও ইসলামপুর হাসপাতালে করানো হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, তরুণীর বাবা কিছুই কাজ করেন না। এক ভাই স্থানীয় গমের মিলে কাজ করেন। আরেক ভাই যখন যা কাজ পান তা করেন। তরুণীর দর্জির দোকানের উপার্জন দিয়ে সংসারের অনেক খরচ বহন করেন। তরুণী বলেন, “শহরের মধ্যে জাতীয় সড়কের উপরে ঘটনাটি ঘটেছ। আমাকে জোর করে তুলে নিয়ে গণধর্ষণ করা হয়েছে। তিন জনকে চিনতে পেরেছি। তাদের নাম পুলিশকে জানিয়েছি। অভিযুক্তদের কড়া শাস্তি চাই। মেলায় গিয়ে এমন হবে স্বপ্নেও কল্পনা করিনি।”
নির্যাতিতার বাবা বলেন, “আমাদের মারধর করে টাকা পয়সা কেড়ে নেয় ওই যুবকেরা। মেয়েকে চোখে সামনে তুলে নিয়ে যায়। আমরা এগোতে চাইলে মারধর করা হতে থাকে। আমরা মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। কিছু ক্ষণ পর এলাকার লোকজনকে ডাকাডাকি করি। থানায় গিয়ে পুলিশকেও জানাই। পুলিশকর্মীরাও আসেন। তার পরে এলাকার রাস্তার পাশে একটি নির্জন এলাকায় মেয়েকে পাওয়া যায়।” ঠান্ডায় সে সময়ে রাস্তাতেও লোকজন প্রায় ছিল না।
প্রাথমিক তদন্তের পর ইসলামপুর থানার আইসি মকসুদুর রহমান জানান, রাতে প্রচন্ড ঠান্ডা থাকায় রাস্তায় লোকজন কম ছিল। ওই যুবকেরা তরুণীর পড়শি বলে জানা যাচ্ছে। জাতীয় সড়কের মধ্যে ঘটনা ঘটায় কোনও গাড়ির চালক এবং এলাকার লোকজন কিছু দেখেছে কি না, তা দেখা হচ্ছে।
নাবালিকা উদ্ধার। এক স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে গোয়ালপোখর থানার ধরমপুর এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। ওই ছাত্রীর বাড়ি মুর্শিদাবাদ। ওই ছাত্রী বুধবার মুর্শিদাবাদের ইসলামপুরে যাওয়ার বদলে ভুল করে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের বাসে উঠে পড়ে। গোয়ালপোখরে তাকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy