Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

‘মমতা জিন্দাবাদ’, কোর্ট চত্বরে স্লোগান ধৃতদের

বহিষ্কারেও অস্বস্তি যাচ্ছে না। মালদহে বিদ্যুৎ বণ্টন দফতরের সহকারী ইঞ্জিনিয়ারকে কলার ধরে শাসানো ও মারধরে অভিযুক্ত যুব নেতা বিশ্বজিৎ রায়কে (বুলেট) ঘটনার রাতেই বহিষ্কার করা হয় তৃণমূল থেকে। তিনি এখনও অধরা। তবে তাঁর অনুগামী যে ছ’জনকে পুলিশ ধরেছে, রবিবার আদালত চত্বরে তারা চিৎকার করে বলে, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ, তৃণমূল কংগ্রেস জিন্দাবাদ, বন্দে মাতরম।” শুনে বিরোধীদের নালিশ, “বহিষ্কার যে লোক দেখানো তা এই ঘটনাই প্রমাণ করে।”

ধৃতদের কোর্টে হাজির করানো হচ্ছে। সে সময়ই তারা ‘তৃণমূল কংগ্রেস জিন্দাবাদ’ বলে চিৎকার করতে থাকে। মালদহে মনোজ মুখোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।

ধৃতদের কোর্টে হাজির করানো হচ্ছে। সে সময়ই তারা ‘তৃণমূল কংগ্রেস জিন্দাবাদ’ বলে চিৎকার করতে থাকে। মালদহে মনোজ মুখোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ: শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:৪৫
Share: Save:

বহিষ্কারেও অস্বস্তি যাচ্ছে না।

মালদহে বিদ্যুৎ বণ্টন দফতরের সহকারী ইঞ্জিনিয়ারকে কলার ধরে শাসানো ও মারধরে অভিযুক্ত যুব নেতা বিশ্বজিৎ রায়কে (বুলেট) ঘটনার রাতেই বহিষ্কার করা হয় তৃণমূল থেকে। তিনি এখনও অধরা। তবে তাঁর অনুগামী যে ছ’জনকে পুলিশ ধরেছে, রবিবার আদালত চত্বরে তারা চিৎকার করে বলে, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ, তৃণমূল কংগ্রেস জিন্দাবাদ, বন্দে মাতরম।” শুনে বিরোধীদের নালিশ, “বহিষ্কার যে লোক দেখানো তা এই ঘটনাই প্রমাণ করে।”

শুক্রবার দুপুরে ইংরেজবাজারে বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির বিভাগীয় ম্যানেজারের ঘরে ঢুকে বুলেট ও তাঁর অনুগামীরা তাণ্ডব চালায় বলে অভিযোগ। এই ঘটনার পরেও বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির তরফে ‘অভিযোগ করার মতো কিছু ঘটেনি’ বলে দাবি করা হয়। রাতে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বুলেটকে ছ’বছরের জন্য বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত জানান। তা জানার পরেই রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় দফতরের তরফে। শনিবার রাতে ৭ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

ইংরেজবাজারের বাসিন্দা ওই সাত জন এ দিন পুলিশের ভ্যান থেকে আদালত চত্বরে নেমেই ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ’, ‘তৃণমূল কংগ্রেস জিন্দাবাদ’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। মালদহ জেলা আদালতের ভারপ্রাপ্ত সিজেএম অমিতাভ দাসের এজলাসে ধৃতদের হাজির করানো হলে বিচারক ধৃতদের এক দিনের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। দলের কর্মীদের এই আচরণে ফের অস্বস্তিতে শাসক দল। তৃণমূলের মালদহ জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেছেন, “আগেও বলেছি, দল এমন ঘটনাকে প্রশয় দেয় না। পুলিশ নিজের কাজ করছে।” তবে আদালত চত্বরে তৃণমূলের নাম নেওয়া প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, “এ বিষয়ে কিছু জানি না।”

সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, “বহিষ্কারের নামে নাটক করা হচ্ছে। তৃণমূলের এমন বহিষ্কার আগেও দেখা গিয়েছে।” জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি বলেন, “মানুষকে দেখানোর জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। পরে মিটিং মিছিলে এই নেতাদের দেখা যাবে।” বিজেপির জেলা সভাপতি শিবেন্দুশেখর রায়ের কটাক্ষ, “সরকরি কর্মীদের হেনস্থা ও মারধর তৃণমূল নেতাদের রুটিন হয়ে গিয়েছে। তাদের বহিষ্কার করে দলে নেওয়াও রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।” শুক্রবার অভিযোগ দায়ের হওয়ার কিছুক্ষণ আগে পর্যন্ত ইংরেজবাজার থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরে দলীয় কার্যালয়ে বুলেটকে দেখা গিয়েছে বলে বাসিন্দারা জানান। তবে বহিষ্কারের ঘোষণার পর থেকে তার কার্যালয়ের ছবিটাই বদলে গিয়েছে। যেখানে প্রতিদিন সকাল বিকেল ভিড় থাকত, সেই কার্যালয় এখন তালাবন্দি। শনিবার থেকে, অফিসের উপরে বুলেটের রেস্তোরাঁর দরজাতেও তালা। তার দাদা অমিতাভ রায় বলেন, “আমাদের কিছু বলার নেই। আইন আইনের কাজ করছে।” মালদহের এসপি প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মূল অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি অম্লান ভাদুড়ির দাবি, “পুলিশ তাদের মতো তদন্ত চালাচ্ছে। এ বিষয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। তবে গত শুক্রবার বিদ্যুৎ দফতরে আমাদের সংগঠনের কোনও কর্মসূচি ছিল না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

malda mamata court area slogan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE