Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
ঘটছে দুর্ঘটনাও

যানজটে নাভিশ্বাস রায়গঞ্জের পথে

যানবাহনের চাপ বাড়লেও গত এক দশকে রায়গঞ্জ শহরে রাস্তা সম্প্রসারণ হয়নি। উল্টে শহরের বিভিন্ন এলাকার রাস্তার দুধারের ফুটপাত বেআইনিভাবে জবরদখলের অভিযোগ উঠেছে ব্যবসায়ীদের একাংশের বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতিতে প্রতিদিন শহরের যান নিয়ন্ত্রণের কাজ করতে গিয়ে ট্রাফিক পুলিশের কর্মীদের নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিদিনই শহরের বিভিন্ন এলাকায় যানজট ও ছোটখাটো দুর্ঘটনা লেগেই থাকছে বলেও ট্রাফিক পুলিশের দাবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৩৯
Share: Save:

যানবাহনের চাপ বাড়লেও গত এক দশকে রায়গঞ্জ শহরে রাস্তা সম্প্রসারণ হয়নি। উল্টে শহরের বিভিন্ন এলাকার রাস্তার দুধারের ফুটপাত বেআইনিভাবে জবরদখলের অভিযোগ উঠেছে ব্যবসায়ীদের একাংশের বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতিতে প্রতিদিন শহরের যান নিয়ন্ত্রণের কাজ করতে গিয়ে ট্রাফিক পুলিশের কর্মীদের নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিদিনই শহরের বিভিন্ন এলাকায় যানজট ও ছোটখাটো দুর্ঘটনা লেগেই থাকছে বলেও ট্রাফিক পুলিশের দাবি। পাশাপাশি, ট্রাফিক পুলিশের কর্মীর অভাবে শহরের বিদ্রোহীমোড় থেকে কসবামোড় পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তায় গত একবছর ধরে যান নিয়ন্ত্রণের কাজ থমকে রয়েছে। তাই মালদহগামী ওই রাস্তায় দিনভরই অত্যন্ত দ্রুতগতিতে যানবাহন চলাচল করছে। পাশাপাশি একাধিক বাস ও ট্রেকার রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলা ও নামানোর কাজ করায় যানজটও লেগেই থাকছে বলেও অভিযোগ। উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজা বলেন, “শহরে যান নিয়ন্ত্রণের কাজে ট্রাফিক পুলিশের সমস্যাগুলি খোঁজ নিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিচ্ছি। শহরে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ফুটপাত জবরদখল মুক্ত হওয়াও জরুরি।

রায়গঞ্জ পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান রণজ কুমার দাসের দাবি, পুরসভা মাঝেমধ্যে শহরের বিভিন্ন এলাকার রাস্তার দুধারের ফুটপাতে বেআইনি জবরদখল উচ্ছেদ অভিযান চালায়। কিন্তু কিছুদিন পরে ফের সেইসব ব্যবসায়ীরা ফুটপাত দখল করে ব্যবসা শুরু করেন। তিনি বলেন, প্রশাসনের সহযোগিতায় পুরসভার চেয়ারম্যান মোহিত সেনগুপ্তের নেতৃত্বে খুব শীঘ্রই পুরসভা স্থায়ীভাবে ফুটপাত দখলমুক্ত অভিযানে নামবে।

রায়গঞ্জ শহরের শিলিগুড়ি মোড়, শাস্ত্রী সঙ্ঘ মোড়, অশোকপল্লি মোড়, বিদ্রোহী মোড়, সঙ্গীত সদন মোড়, রেলগেট, মোহনবাটি, কলেজ মোড় ও বিধাননগর মোড়ে যান নিয়ন্ত্রণের কাজে ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। রায়গঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের সহকারি আধিকারিক বিনোদ মল্লিক জানান, বর্তমানে একজন সাব ইন্সপেক্টর, তিন জন সহকারি সাব ইন্সপেক্টর, ১৯ জন কনস্টেবল ও ২০ জন সিভিক পুলিশ শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়ে যান নিয়ন্ত্রণের কাজ সামলান। তাঁর দাবি, শহরের যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে আরও ২০ জন পুলিশকর্মী দরকার।

রায়গঞ্জ ট্রাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, গত প্রায় পাঁচ বছর ধরে ট্রাফিক পুলিশের একজন সাব ইন্সপেক্টর, ৭ জন সহকারি সাব ইন্সপেক্টর ও ৬ জন কনস্টেবলের পদ ফাঁকা পড়ে রয়েছে। ট্রাফিক পুলিশের কর্মীর অভাবে গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বিদ্রোহীমোড় থেকে কসবা পর্যন্ত যান নিয়ন্ত্রণের কাজ থমকে রয়েছে। ট্রাফিক পুলিশের অভিযোগ, গত এক দশকে শহরে যানবাহনের সংখ্যা দ্বিগুন হলেও রাস্তা সম্প্রসারণ হয়নি। শহরের শিলিগুড়ি মোড় থেকে বিদ্রোহী মোড় পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তার দুধারের ফুটপাত বেআইনিভাবে দখল করে ব্যবসা চালাচ্ছেন ব্যবসায়ীদের একাংশ। এই পরিস্থিতিতে প্রতিদিন শহরে প্রায় দু’লক্ষ মোটরবাইক, পাঁচ হাজার রিকশা ও চার হাজার পেট্রল ও ডিজেল চালিত যানবাহনের চলাচল নিয়ন্ত্রণে রাখা ট্রাফিক পুলিশের পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন শহরের বিভিন্ন এলাকায় যানজটের পাশাপাশি প্রতিমাসে গড়ে ১০টি করে পথ দুর্ঘটনা ঘটছে।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, শহরের শিলিগুড়ি মোড় থেকে বিদ্রোহীমোড় পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকার রাস্তার দুধারের ফুটপাত দখল করে ব্যবসায়ীরা পসরা সাজিয়ে রাখার জেরে পথচারীরা রাস্তার উপর দিয়ে হাঁটাচলা করতে বাধ্য হচ্ছে। ফলে দিনভর শহরে যানজট লেগেই থাকছে। পাশাপাশি ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটছে। রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন ও পশ্চিম দিনাজপুর চেম্বার অব কমার্সের দুই সম্পাদক অতনুবন্ধু লাহিড়ীর ও জয়ন্ত সোমের দাবি, সংগঠনের তরফে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসায়ীদের ফুটপাত দখল করে ব্যবসা না করার জন্য সতর্ক করা হলেও কোনও লাভ হয়নি। তিনি বলেন, “বাসিন্দাদের নিরাপত্তা ও যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে প্রশাসন ও পুরসভা ফুটপাত দখলমুক্ত অভিযানে নামলে আমাদের কোনও আপত্তি নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

raiganj
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE