মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির কংগ্রেস বিধায়কের তফসিলি জাতির শংসাপত্র জাল বলে অভিযোগ করল তৃণমূল কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি থানায় তথ্য প্রমাণ-সহ ১১ পাতার একটি অভিযোগপত্র জমা করেছেন নকশালবাড়ি ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি গৌতম কীর্তনীয়া। তাঁর অভিযোগ, শঙ্কর মালাকার তফসিলি জাতিভুক্ত নন। তিনি ওবিসি সম্প্রদায় ভুক্ত। ২০১০ সালে প্রভাব খাটিয়ে তৎকালীন মহকুমা প্রশাসনের আধিকারিকদের কাজে লাগিয়ে ওই শংসাপত্র পেয়েছেন। তৎকালীন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচাযের্র নির্দেশে তাঁকে আবেদনের ১০ দিনের মধ্যে ওই শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে।
এই অভিযোগকে অবশ্য গুরুত্ব দিতে চাননি শঙ্করবাবু। তিনি বলেন, “মালাকার উপাধির বহু মানুষ তফসিলি জাতিভুক্ত রয়েছেন। যিনি অভিযোগ করেছেন তাঁকে চিনি না। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই এমন অভিযোগ তোলা হচ্ছে। আমি তফসিলি জাতিভুক্ত কি না, তা দেখার দায়িত্ব সরকারের, প্রশাসনের। যাঁরা আমাকে শংসাপত্র দিয়েছেন তাঁরা দেখুন।” তিনি প্রভাব খাটিয়ে শঙ্করবাবুকে তফসিলি জাতির শংসাপত্র পাইয়ে দিয়েছেন বলে যে অভিযোগ উঠেছে তা অস্বীকার করেছেন অশোকবাবুও। তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে হাস্যকর অভিযোগ তোলা হচ্ছে। ২০১১ সালে নির্বাচনের সময় আমিই অভিযোগ তুলেছিলাম শঙ্করবাবু তফসিলি জাতির শংসাপত্র পেলেন কী ভাবে। সে সময় নির্বাচন কমিশনের কাছে তিনি নথিপত্র দেখিয়েছিলেন বলে শুনেছি।”
গৌতম কীর্তনীয়া তাঁর অভিযোগপত্রে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেছেন। তথ্য জানার অধিকার আইনে আবেদন করে তিনি শঙ্করবাবুর আবেদনপত্র সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে সংগ্রহ করেছেন। তাঁর অভিযোগ, শঙ্করবাবুর আবেদনের প্রেক্ষিতে তাঁর জাতি প্রমাণের নথি সরেজমিনে দেখেননি দায়িত্বে থাকা আধিকারিক। শঙ্করবাবু দেশের কোথায় জন্মেছেন তা উল্লেখ করেননি। তাঁর প্যানকার্ড, পাসপোর্ট, রেশন কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, বিমা এবং স্কুলের শংসাপত্রে বিভিন্ন জন্ম তারিখ থাকা সত্ত্বেও তা উপেক্ষা করা হয়েছে। তফসিলি জাতি’র শংসাপত্র পেতে পরিবারের বাইরে ওই সম্প্রদায়ের অন্তত পাঁচ জনের যে সুপারিশ দিতে হয় তাও তিনি দেননি। বরং পরিবারের লোকদের দিয়েই সেই সুপারিশ করানো হয়েছে। যে স্কুলে তিনি পড়াশোনা করেছেন সেই স্কুল থেকে তফসিলি জাতির ছাত্র হিসাবে তিনি কোনও অনুদান পাননি। অন্যান্য নিয়ম মানার ক্ষেত্রেও এ ভাবে কারচুপি করা হয়েছে। ২০১১ সালের নির্বাচনে শঙ্করবাবু তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা যা দেখিয়েছিলেন তফসিলি জাতির শংসাপত্র পেতে তার চেয়ে বেশি যোগ্যতা কী করে দেখালেন তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন গৌতমবাবু।
জাল শংসাপত্র তৈরি ছাড়াও আয়ের সঙ্গে তাঁর সম্পত্তির সামঞ্জস্য নেই বলে সম্প্রতি বাগডোগরা থানাতে আরেকটি অভিযোগ করেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, শঙ্করবাবু নির্বাচনের সময় ২০১১ সালে হলফনামা দিয়ে স্ত্রী এবং পরিবারের আয় দেখিয়েছিলেন। অথচ তিনি ২০১২ সালে বাগডোগরার গোঁসাইপুরে প্রায় ৮ বিঘা ২ কাঠা জমি কেনেন স্ত্রীর নামে। বসতি জমিকে কৃষি জমি দেখিয়ে তিনি তা কেনেন বলে অভিযোগ। ওই জমির দাম প্রায় কোটি টাকার উপরে। তিনি সেই টাকা কোথায় পেলেন, প্রশ্ন অভিযোগকারীর। গৌতমবাবুর দাবি, “এসজেডিএ দুর্নীতি কাণ্ডে শঙ্করবাবুকে জেরা করেছে পুলিশ। দুর্নীতির অর্থেই তিনি ওই জমি কিনেছেন।” শঙ্করবাবু বলেন, “এমন অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে চাই না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy