Advertisement
E-Paper

স্কুল কর্তৃপক্ষকে চাপ কাউন্সিলরের, ক্ষোভ

ছাত্রীরা সময় মতো স্কুলে না-যাওয়ায় বিদ্যালয়ের মূল ফটক বন্ধ করে দিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। তারপরে দেরি করে এলেও কেন তাঁদের ঢুকতে দেওয়া হবে না, সেই প্রশ্ন তুলে শুক্রবার শিলিগুড়ি জ্যোৎস্নাময়ী স্কুলে দেরিতে আসা ওই ছাত্রীরা এবং অভিভাবকদের একাংশ লাগোয়া রাস্তা অবরোধ করেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৪ ০২:৩৪
প্রধান শিক্ষিকার ঘরে কাউন্সিলর। শুক্রবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

প্রধান শিক্ষিকার ঘরে কাউন্সিলর। শুক্রবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

ছাত্রীরা সময় মতো স্কুলে না-যাওয়ায় বিদ্যালয়ের মূল ফটক বন্ধ করে দিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। তারপরে দেরি করে এলেও কেন তাঁদের ঢুকতে দেওয়া হবে না, সেই প্রশ্ন তুলে শুক্রবার শিলিগুড়ি জ্যোৎস্নাময়ী স্কুলে দেরিতে আসা ওই ছাত্রীরা এবং অভিভাবকদের একাংশ লাগোয়া রাস্তা অবরোধ করেন। খবর পেয়ে পুলিশ যায়। স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই ছাত্রীদের বাড়ি ফিরে যেতে বললেও পরে এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর প্রশান্ত চক্রবর্তী গিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে ‘চাপ দিয়ে’ এ দিন ছাত্রীদের স্কুলে ঢোকার ব্যবস্থা করেন বলে অভিযোগ। গোটা ব্যাপার নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রধান শিক্ষিকা শুক্লা দাস। তিনি বলেন, “দুই বছর ধরে এই নিয়ম চলছে। এ দিনও যারা দেরি করে এসেছিল তাদের চলে যেতে বলা হয়েছে। অথচ তাদের ক্লাস করতে দেওয়ার জন্য কাউন্সিলর বারবার চাপ দেন।”

কাউন্সিলরের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, স্কুলের নিয়ম শৃঙ্খলা ঠিক রাখার জন্যই নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলে ঢোকার বিষয়টি ছাত্রীদের জানিয়েও দেওয়া রয়েছে। গত বছর থেকে এই নিয়ম চলে আসছে। অথচ কাউন্সিলর কেন এ ভাবে নিয়ম ভেঙে কর্তৃপক্ষকে চাপ দিয়ে ওই ছাত্রীদের নির্দিষ্ট সময়ের পরে স্কুলে ঢোকানোর জন্য বারবার বলবেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষিকারা। মিনিট ১৫ অবরোধ চলার পরে কাউন্সিলরের বারবার অনুরোধে কর্তৃপক্ষ ওই ছাত্রীদের স্কুল করার ছাড়পত্র দেন। এর পরেই অবরোধ ওঠে।

কাউন্সিলর প্রশান্তবাবু যদিও বলেন, “চাপ দেওয়ার ব্যাপার নেই। ছাত্রীরা পথ অবরোধ করছেন শুনেই গিয়েছিলাম। ছাত্রীদের নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলে যেতে কর্তৃপক্ষ যে কড়াকড়ি করতে চাইছেন, তা ভাল ব্যাপার। আমিও ছাত্রী এবং অভিভাবকদের সে কথাই বলেছিলাম। তবে তাঁরা অবরোধ তুলতে না চাওয়ায় কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে এ দিনের সমস্যা মেটাতে চেষ্টা করেছি। অন্য কোনও ব্যাপার নেই।”

স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, ১০টা ৫৫মিনিটে প্রথম ক্লাস শুরু হয়। তখন গেট বন্ধ করে দেওয়াই নিয়ম। যাঁরা দেরি করে আসবেন তাঁদের ফিরে যেতেই বলা হয়। ছাত্রীরাও তা জানেন। কিছু অভিভাবক তা নিয়ে অযথা সমস্যা তৈরি করতে চাইছেন বলে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি। তাঁদের বক্তব্য, তা ছাড়া ১০টা ৩৫ মিনিটে প্রার্থনা হয়। সেই সময়েই ছাত্রীদের আসা উচিত। প্রধান শিক্ষিকা বলেন, “কাউন্সিলর কেন স্কুলের নিয়ম ভাঙতে বলবেন? পরবর্তীতে কোনও ভাবেই তা মানা হবে না।”

স্কুল সূত্রেই জানা গিয়েছে, এ দিন স্কুলে যেতে দেরি করেছিলেন অন্তত ২৫ জন ছাত্রী। তাঁরা অধিকাংশ একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়েন। কর্তৃপক্ষ গেট বন্ধ করে দেওয়ায় তারা স্কুলের সামনে রাস্তা অবরোধ করেন। অভিভাবকদের একাংশ তাতে মদত দেন বলে অভিযোগ। অভিভাবক মঞ্চের সম্পাদক সন্দীপন ভট্টাচার্য বলেন, “স্কুলের নিয়মকানুনের ক্ষেত্রে কাউন্সিলরের হস্তক্ষেপ কখনই কাম্য নয়। স্কুলের নিয়ম মানতেই হবে, এটা আমরাও চাই। তবে যে ছাত্রীরা দেরিতে স্কুলে এসে ঢুকতে পারছেন না, তাঁরা ফিরে যেতে গিয়ে যাতে সমস্যায় না পড়েন, সে কথাও ভাবতে হবে। সম্প্রতি ইভটিজারদের দাপট-সহ মেয়েদের নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তাই ক্যাম্পাসে ছাত্রীদের ঢুকতে দিয়ে অভিভাবক ডেকে বাড়িতে ফেরানো বা অন্য কোনও বিকল্প শাস্তির কথা ভাবা যেতে পারে।”

প্রধান শিক্ষিকা অবশ্য জানিয়েছেন, ছাত্রীরা দেরিতে স্কুলে এলে অভিভাবকদেরই সেই দায়িত্ব নিতে হবে। তবে কোনও ছাত্রী সমস্যায় পড়লে স্কুল কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই পাশে দাঁড়াবেন। অভিভাবকদের একাংশের অভিযোগ, ছাত্রীদের স্কুলে আসার সময় নিয়ে কড়া মনোভাব দেখানো হচ্ছে। অথচ শিক্ষিকাদের অনেকে সাড়ে ১১টার পর আসেন। কর্তৃপক্ষ অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁদের দাবি, শিক্ষিকারা ১১টা বেজে ৫ মিনিটের মধ্যে স্কুলে ঢুকবেন সেটাই নিয়ম। সকলেই তা মেনে চলেন।

school council agitation siliguri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy