ছুটির পর এক স্কুল ছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগ উঠল এলাকার পরিচিত এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। শিলিগুড়ির রথখোলার ঘটনা। গত বুধবার শিলিগুড়ি থানায় ছাত্রীর পরিবারের তরফে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সেই মতো পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। তবে এখনও ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করতে বা অভিযুক্তকে ধরতে পারেনি তারা। অভিযুক্তর নামে এ আগেও ভুয়ো পরিচয় দিয়ে একাধিক জায়গায় বিয়ের অভিযোগ রয়েছে। ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, গত বুধবার স্কুল ছুটির পর ছাত্রীটি রিকশার জন্য অপেক্ষা করছিল। সে সময় ছাত্রীর ইচ্ছের বিরুদ্ধে জোর করে তাকে অপহরণ করে অভিযুক্ত ব্যক্তি। তার বাড়ি কলেজপাড়াতে হলেও বর্তমানে বরদাকান্ত স্কুলের উল্টো দিকে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন। সেই সূত্রে এলাকার বাসিন্দা ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গে অভিযুক্তের যোগাযোগ ছিল। ছাত্রীর বাড়িতেও যাতায়াত ছিল। এমনকী ছাত্রীর বাবার একটি হার্ডওয়ারের দোকান রয়েছে। সেখানেও ওই ব্যক্তি মাঝে মধ্যেই যেতেন। বুধবার ছুটির পর মেয়েকে আনতে যেতে দেরি করেন বাবা। স্কুলে গিয়ে মেয়ের সহপাঠীদের কাছ থেকে তিনি জানতে পারেন তাদের পরিচিত ওই ব্যক্তির সঙ্গে বাইকে মেয়ে চলে গিয়েছে। তখন ভেবেছিলেন দেরি দেখে হয়ত মেয়ে তাদের পরিচিত ওই ব্যক্তির সঙ্গে বাড়িতেই গিয়েছে। কিন্তু ফিরে এসে বাড়িতে না পেয়ে মেয়েকে খোঁজা শুরু করেন। পরে ওই যুবকই ফোন করে হুমকি দেয় সে ছাত্রীকে অপহরণ করেছে। রাতে পুলিশে অভিযোগ জানান ছাত্রীর পরিবারের লোকেরা।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন বলেন, “অভিযোগ পেয়েই পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে অপরহণের অভিযোগে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। শীঘ্রই কয়েকটি জায়গায় পুলিশের দল পাঠানো হচ্ছে।”
পুলিশেরই একটি সূত্র জানিয়েছে, অভিযুক্তর ব্যক্তির বিরুদ্ধে পরিচয় ভাড়িয়ে আগেও একাধিক বিয়ের অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি আইনজীবী পরিচয় দিয়ে তাঁদের মতো পোশাক পরে তাকে ঘুরে বেড়াতেও দেখেছেন অনেকে। এমনকী মাটিগাড়ায় তার নামে একটি খুনের মামলাও রয়েছে। দ্রুত ছাত্রীকে উদ্ধার এবং অভিযুক্তকে ধরার দাবিতে শিলিগুড়ি থানায় এ দিন স্মারকলিপিও দেয় ডিওয়াইএফ। ছাত্রীর পরিবারের তরফে একটি সেবরকারি আইনি পরিষেবা সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। সংগঠনের অন্যতম কর্মকর্তা অমিত সরকার জানান, অভিযুক্তকে ধরার ব্যাপারে তারাও পুলিশ কমিশনারকে বলেছেন। অভিযুক্তের কাছে একাধিক সিম কার্ড রয়েছে। বিভিন্ন সময় আলাদা মোবাইল নম্বর ব্যবহার করছে। ছাত্রীর বাবা বলেন, “বিয়ের মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফুঁসলিয়ে ওই ব্যক্তি মেয়েকে অপহরণ করেছে। তাকে বিক্রি করে দেওয়ার বা অসৎ কোনও কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে বলেই মনে হচ্ছে। ওই ব্যক্তি ফোন করে জানায়, মেয়েকে অপহরণ করেছে। আমারা বা পুলিশ কিছু করতে পারবে না বলে হুমকি দিয়েছে। পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থানা নিলে মেয়ে বিপদে পড়তে পারে।” পরিবারের লোকেরাই জানান, ফোনে হুমকি দেওয়ার পর অভিযুক্ত ব্যক্তি কোথা থেকে ফোন করেছে তা খুঁজতে চেষ্টা করেন তারা। বেসরকারি মোবাইল সংস্থায় কর্মরত পরিচিতদের সুবাদে তাঁরা জানতে পারেন সে সময় ময়নাগুড়ি এলাকায় ছিল ওই ব্যক্তি। তা পুলিশকেও জানানো হয়েছে।