Advertisement
E-Paper

স্কুলে বন্ধ মিড ডে মিল, ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা

সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশ রয়েছে স্কুলে মিড ডে মিল কোনও ভাবেই বন্ধ করা যাবে না। অথচ কাউন্সিলররা পদ হারানোর পরেই শিলিগুড়ির অন্তত ২৫ টি প্রাথমিক স্কুলে বন্ধ হয়ে পড়েছে মিড ডে মিল। এক মাসেরও বেশি ওই স্কুলগুলিতে মিড ডে মিল বন্ধ হয়ে পড়ায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা। তার মধ্যে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের চারটি স্কুলও রয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৪৬

সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশ রয়েছে স্কুলে মিড ডে মিল কোনও ভাবেই বন্ধ করা যাবে না। অথচ কাউন্সিলররা পদ হারানোর পরেই শিলিগুড়ির অন্তত ২৫ টি প্রাথমিক স্কুলে বন্ধ হয়ে পড়েছে মিড ডে মিল।

এক মাসেরও বেশি ওই স্কুলগুলিতে মিড ডে মিল বন্ধ হয়ে পড়ায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা। তার মধ্যে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের চারটি স্কুলও রয়েছে। ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর-ও ছিলেন গৌতমবাবু। পুরসভার তরফে ইতিমধ্যেই স্কুলগুলিকে নিদের্শিকা পাঠানো হয়েছে দ্রুত মিড ডে মিল চালুর জন্য। তার পরেও স্কুলগুলির একাংশে তা চালু না হওয়ায় স্কুল এবং পুর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছেন অভিভাবকেরা। কাউন্সিলররাই মূলত ওয়ার্ড এডুকেশন কমিটির সভাপতি হিসাবে এলাকার স্কুলগুলির মিড ডে মিলের আয়োজনের দিকটি দেখতেন।

১৮ অগস্ট পুরসভায় ৩ সদস্যের প্রশাসক বোর্ড বসার পর কাউন্সিলররা পদ থেকে সরে যাওয়ায় সেই দায়িত্ব স্কুলগুলিকেই নিতে হবে। স্কুলগুলির একাংশ তা নিতে গড়িমসি করাতেই মিড ডে মিল বন্ধ হয়ে পড়েছে। মিড ডে মিল বন্ধ থাকায় ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতির ক্ষেত্রেও প্রভাব পড়ছে বলে শিক্ষকদের একাংশ জানিয়েছেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের বিষয়টি দেখা উচিত। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে পুর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।”

মহকুমাশাসক দীপাপ প্রিয়া বলেন, “এ ভাবে মিড ডে মিল বন্ধ করে রাখা যায় না। পুর কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলছি।” পুরসভার সচিব সপ্তর্ষি নাগ জানান, যে সমস্ত স্কুলে মিড ডে মিল বন্ধ হয়ে পড়েছে ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। স্কুলগুলির সঙ্গে ফের কথা বলা হবে।

পুরসভার শিক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১ নম্বর ওয়ার্ডে ৪টি স্কুল, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ৩ টি স্কুলে, ১২ নম্বর ওয়ার্ডের ১টি স্কুল, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ৪টি স্কুলে ১৯ অগস্ট থেকেই মিড ডে মিল বন্ধ হয়ে পড়েছে। মিড ডে মিল বন্ধ রয়েছে ২২ নম্বর ওয়ার্ডের ৫টি স্কুলে, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ৪টিস্কুলে, ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে ৩টি স্কুলে। ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের ১ টি স্কুলে। অভিভাবক মঞ্চের সম্পাদক সন্দীপন ভট্টাচার্য বলেন, “কাউন্সিলর নেই বলে এ ভাবে খুশি মতো মিডে মিল বন্ধ করা যায় না। দ্রুত যাতে ওই সমস্ত স্কুলে মিড ডে মিল চালু হয় সে জন্য পুরসভা এবং প্রশাসনকে তৎপর হতে হবে। কচিকাঁচারা অনেক ক্ষেত্রে না খেয়ে সকালে স্কুলে যায়। মিড ডে মিল বন্ধ থাকায় তাদের নিয়ে সমস্যায় পড়বে অভিভাবকেরা। অনেকেই আমাদের কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ করেছেন।”

বন্ধ হয়ে থাকা স্কুলগুলির মধ্যে ১ নম্বর ওয়ার্ডে দেশবন্ধু প্রাথমিক স্কুলের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক মনোজ কুমার ধানুকা, স্বামী স্বরূপানন্দ প্রাথমিক স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা আরতি মজুমদাররা জানান, স্কুলের মিড ডে মিলের জন্য তারা অ্যাকাউন্টপ খুলে নথিপত্র পুরসভায় শীঘ্রই জমা করবেন।

১২ নম্বর ওয়ার্ডের শিশু শিক্ষা নিকেতন স্কুলের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক অশোক কুমার ভগৎ, বাণী মন্দির জিএসপি স্কুলের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক প্রদীপ কুমার ঘোষরা জানান, রান্নার গ্যাসের সংযোগ ব্যবস্থা না হওয়ায় তারা চালু করতে পারছেন না। শিলিগুড়ি বয়েজ প্রাথমিক স্কুলের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক সুশীল কুমার চক্রবর্তী জানান, তাঁরা মিড ডে মিল চালুকরতে চেষ্টা করছেন।

অনেক স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা দায়িত্বে থাকা শিক্ষকরা মিড ডে মিলের রান্নার ঝামেলা নিতে চাইতেন না। অনেক ক্ষেত্রে স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যা কম থাকায় তাদের পক্ষে মিড ডে মিলের আয়োজন করা সম্ভব হত না। কাউন্সিলররা তাই ওয়ার্ডের দুই তিনটি স্কুলের রান্না এক জায়গায় করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে মিড ডে মিল সরবরাহ করার ব্যবস্থা করতেন।

ছাত্রছাত্রীর উপস্থিতি অনুসারে স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা দায়িত্বে থাকা শিক্ষক বিল তৈরি করে সই করে দিতেন। ওয়ার্ড এডুকেশন কমিটির সভাপতি তথা কাউন্সিলর এবং সম্পাদক তথা একটি নির্দিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাতে সই করতেন। ওয়ার্ডের স্কুলগুলির মিড ডে মিলের বিল সংগ্রহ করে একযোগে পুরসভায় জমা করতেন কাউন্সিলররা। তাঁদের হাতেই মিড ডে মিলের খরচের টাকা নগদ দেওয়া হত। এ ভাবেই মিড ডে মিলের আয়োজনের দিকটি চলছিল। কাউন্সিলররা পদ হারালে ওয়ার্ড এডুকেশন কমিটির সভাপতির পদ থেকেও তাতে সরে যেতে হয়। সে কারণে মিড ডে মিলের ওই দায়িত্ব তাঁরা আর নিতে পারেন না। তাতে অন্তত ৩০ টি স্কুলের মিড ডে মিলের রান্না আচমকা বন্ধ হয়ে যায়। এর মধ্যে কিছু স্কুল মিড ডে মিল চালু করতে উদ্যোগ গ্রহণ করে। বাকিগুলিতে এখনও মিড ডে মিল বন্ধ রয়েছে।

mid day meal siliguri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy