প্রায় সাত মাস বন্ধ থাকার পরে মঙ্গলবার ফের চালু হল জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্র। প্রথম দিনে নিলামে উঠল প্রায় সাড়ে ২৩ হাজার কেজি চা। দাম দেড়শো টাকা কেজি ছুঁয়ে গেল। মরশুমের প্রথম দিন চায়ের আমদানি তেমন না হলেও খুশি নিলাম কেন্দ্রের কর্তারা। তাঁরা জানান, সপ্তাহে একদিন প্রতি মঙ্গলবার সকালে নিলামের কাজ চলবে। সংস্থার সচিব নিরঞ্জনকুমার বসু বলেন, “শুরু ভালই ছিল। ভাল দাম উঠেছে। তবে আরও বেশি পরিমাণ চা নিলামের জন্য পাঠানো প্রয়োজন। আমরা চা উৎপাদনকারী বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছি। দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত কি দাঁড়ায়?”
নিলাম কেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন মাত্র ৪ জন বিক্রেতা নিলামে অংশগ্রহণ করেন। ক্রেতা হাজির ছিলেন ১৩ জন। মোট ২৩ হাজার ৩৮২ কেজি চা নিলামে ওঠে। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ নিলাম শুরুর কিছু সময়ের মধ্যে দাম চড়তে শুরু করে। বেলা ১২টার মধ্যে ৬১ শতাংশ বিক্রি হয়ে যায়। মাঝারি মানের চায়ের কেজি প্রতি দাম ১২৪ টাকা ৪৯ পয়সার উঠে থেমে গেলেও একটি বড় সংস্থার চা দেড়শো টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। গত বছর নিলাম কেন্দ্র খোলে ২৩ এপ্রিল। প্রথম দিন ১ হাজার ৬৮৩ কেজি চা নিলামে উঠেছিল। এবার প্রায় দুমাস পরে চায়ের ভরা মরশুমে নিলাম কেন্দ্রের দরজা খুললেও চা উৎপাদনকারী সংস্থাগুলির তেমন সাড়া মেলেনি। নথিভূক্ত ৬৮ জন বিক্রেতার মধ্যে হাজির হয়েছেন মাত্র ৪ জন।
নিলাম কেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, চায়ের যোগান কমে যাওয়ায় গত বছর নভেম্বর মাসের পরে নিলাম কেন্দ্র খোলা রাখা সম্ভব হয়নি। নিলাম কেন্দ্রের অফিস ইনচার্জ প্রতাপ রাউত জানান, চায়ের আমদানি না বাড়লে ক্রেতার সংখ্যা বাড়বে না। নিলাম কেন্দ্র সচল রাখাও সম্ভব হবে না। কিন্তু এখানে সেটাই হচ্ছে না কেন? ওই প্রশ্নের উত্তর নিলাম কেন্দ্রের কর্তাদের কাছে নেই। প্রতাপবাবু বলেন, “জলপাইগুড়িতে গুদামে ৩৫ কেজি চা রাখতে খরচ হয় মাত্র ৮ টাকা ৩০ পয়সা। শিলিগুড়িতে অনেক বেশি। এখানে দাম ভাল উঠছে দ্রুত দাম পেয়ে যাচ্ছেন। বিক্রেতারা তাঁর পরেও কেন চা কম আসছে সেটাই বুঝতে পারছি না।”
প্রতি মাসে চায়ের আমদানি কমছে নিলাম কেন্দ্রে গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে চা এসেছে ১ লক্ষ ৫১ হাজার ৯০৮ কেজি। অক্টোবর মাসে ৭০ হাজার ৮৮০ কেজি এবং নভেম্বর মাসে ১০ হাজার ১৭২ কেজি। একই ভাবে প্রতি বছর বিক্রেতার সংখ্যা কমছে ২০১২-২০১৩ সালে ৬৭ জন বিক্রেতা নিলামে অংশ নেন। পরের বছর সেটা কমে ৩৩ জন হয়েছে।
২০০৫ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি নিলাম কেন্দ্র চালু হওয়ার পর থেকে ওই সমস্যা চলছে। ২০০৮-২০০৯ সালের পরে এমন পরিস্থিতি দাঁড়ায় যে নিলাম কেন্দ্রের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। অনেক চেষ্টার পরে ২০১২ সালে ফের খোলে। এবার শেষ পর্যন্ত কতজন ক্রেতা-বিক্রেতা নিলামে অংশ নেন সেটাই এখন দেখার। তবে সংস্থার কর্তারা কারণ খুঁজে না পেলেও চা উৎপাদনকারী সংস্থার কর্তারা এদিনও জানান, অন্তত তিন বছরের জন্য বিক্রয় কর ছাড়ের ব্যবস্থা করা না হলে নিলাম কেন্দ্রের হাল ফিরবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy