Advertisement
E-Paper

স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার নালিশ, গ্রেফতার স্বামী

দাউদাউ করে জ্বলছেন মহিলা। বাড়িময় ছুটে বেড়াচ্ছেন। তীব্র চিৎকার করে চলেছেন নাগাড়ে--‘বাঁচাও-বাঁচাও’। আর্তনাদ করে ছুটছিলেন মহিলা। কিন্তু তা দেখেও বাড়ির কেউ এগিয়ে আসেননি তাঁকে বাঁচাতে। পড়শি ও স্থানীয় ক্লাবের ছেলেরা গিয়ে বালি ছিটিয়ে, বস্তা চাপা দিয়ে তাঁকে কোনওমতে হাসপাতালে নিয়ে যান।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ মে ২০১৪ ০১:৪৩
মৃতার সন্তানদের কোলে নিয়ে এক আত্মীয়। নিজস্ব চিত্র।

মৃতার সন্তানদের কোলে নিয়ে এক আত্মীয়। নিজস্ব চিত্র।

দাউদাউ করে জ্বলছেন মহিলা। বাড়িময় ছুটে বেড়াচ্ছেন। তীব্র চিৎকার করে চলেছেন নাগাড়ে--‘বাঁচাও-বাঁচাও’।

আর্তনাদ করে ছুটছিলেন মহিলা। কিন্তু তা দেখেও বাড়ির কেউ এগিয়ে আসেননি তাঁকে বাঁচাতে। পড়শি ও স্থানীয় ক্লাবের ছেলেরা গিয়ে বালি ছিটিয়ে, বস্তা চাপা দিয়ে তাঁকে কোনওমতে হাসপাতালে নিয়ে যান। শুক্রবার রাত সাড়ে ন-টা নাগাদ কালিয়াচক থানার কালিকাপুরের ঠাকুরপাড়ায় ঘটনা।

শনিবার সকাল সাতটা নাগাদ ওই মহিলার মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ওই মহিলাকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে বলে অভিযোগ। পরে অবশ্য তাঁর বাপের বাড়ির পক্ষ থেকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ পেয়ে মহিলার স্বামীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

কালিয়াচক থানার দাবি, হাসপাতালে সরকারি চিকিৎসকের উপস্থিতিতে ওই মহিলার মৃত্যুকালীন জবানবন্দিতে তিনি অবশ্য নিজেই গায়ে আগুন দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। মালদহের পুলিশ সুপার রাকেশ কুমার বলেন, “তদন্তে সব কিছুই খতিয়ে দেখা হবে।” এ ব্যাপারে মৃতার বাবা সুভাষ রায় বলেন, “আমার সন্দেহ মেয়েকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মেয়ের অন্ত্যেষ্টি মিটলে প্রয়োজনে আদালতের দ্বারস্থ হব।”

পুলিশ জানায়, ওই মহিলার নাম দেবী রায় (২৫)। তাঁর স্বামী উত্তম রায়। পাঁচ বছর আগে মানিকচকের নূরপুরের হাজারিপাড়ার সুভাষ রায়ের বড় মেয়ের সঙ্গে কালিয়াচকের কালিকাপুরের ঠাকুর পাড়ার পেশায় মিনি ট্রাকের চালক উত্তমের বিয়ে হয়েছিল। তাঁদের চার বছরের এক ছেলে ও ৬ মাসের একটি মেয়ে রয়েছে। মেয়ে অগ্নিগদ্ধে হয়েছে শুনে রাতেই মানিকচক থেকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান তাঁর বাবা সুভাষ রায়, মা নিভাদেবী সহ পরিবারের লোকজন। নিভাদেবীর অভিযোগ, “দু-ভরি সোনা ও ৩০ হাজার টাকা নগদ দিয়ে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলাম। বিয়ের পর থেকেই জামাই প্রতি মাসে মেয়েকে দিয়ে কখনও টাকা, কখনও সোনার গয়না চেয়ে পাঠাত। সব সময় জামাইয়ের দাবি মেটাতে পারিনি। টাকা না পেয়ে জামাই মেয়েকে প্রচন্ড মারধর করত। জামাইয়ের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মেয়ের বেশ কয়েক বার শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে আমাদের বাড়িতে এসেছিল। বুঝিয়ে মেয়েকে শ্বশুরবাড়িতে ফেরত পাঠানোয় এমন সর্বনাশ হবে ভাবিনি।”

ওই মহিলার বাবা সুভাষবাবু জানান, তাঁরা খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। কিন্তু, মেয়ের শ্বশুরবাড়ির কাউকে সেখানে দেখতে পাননি। সুভাষবাবুর প্রশ্ন, “মেয়ে আগুনে পুড়ল। বাড়ির কেউ বাঁচানোর চেষ্টা করল না? হাসপাতালে দেখা গেল না কেন?” এ দিন অভিযুক্তের দুই দিদি অর্চনা ও কল্পনা বাড়িতে ছিলেন। তাঁরা প্রায় এক সুরে দাবি করেন, “স্বামী-স্ত্রীর গোলমাল কোন সংসারে হয় না। তা বলে রাগ করে গায়ে আগুন দেবে? ভাইয়ের বউ নিজেই গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়েছে।” তা হলে বাড়ির কেউ কেন তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করেননি? সে প্রশ্নের জবাব অবশ্য মেলেনি।

kaliachak domestic violence
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy