Advertisement
E-Paper

সকাল-দুপুরে বদলাচ্ছে আলুর দাম, ক্ষোভ

শিলিগুড়ির চম্পাসারির পাইকারি বাজারে কেজি প্রতি আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। অথচ বিধান মার্কেটের সবজি বাজারে সেই আলু ২৮ থেকে ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন একশ্রেণির বিক্রেতা। সুভাষপল্লি, রথখোলা, হায়দরপাড়া, মহাবীরস্থান, তিনবাতি মোড়, ঘোঘোমালি সর্বত্রই চড়া দাবে বিকোচ্ছে আলু।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৪ ০২:১৫

শিলিগুড়ির চম্পাসারির পাইকারি বাজারে কেজি প্রতি আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। অথচ বিধান মার্কেটের সবজি বাজারে সেই আলু ২৮ থেকে ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন একশ্রেণির বিক্রেতা। সুভাষপল্লি, রথখোলা, হায়দরপাড়া, মহাবীরস্থান, তিনবাতি মোড়, ঘোঘোমালি সর্বত্রই চড়া দাবে বিকোচ্ছে আলু। একশ্রেণির সবজি বিক্রেতা জবরদস্তি বাড়তি দাম দিতে ক্রেতাদের বাধ্য করলেও পুলিশ-প্রশাসনের তরফে কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ। প্রশাসনের কাছে আলুর দাম নিয়ে যে রিপোর্ট জমা পড়ে, তাতেও দাম কমিয়ে দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ।

যেমন পাইকারি দাম ২০ টাকা কেজি হলেও গত মঙ্গলবার সকালে, চম্পাসারি বাজার, বিধান মার্কেট, হায়দারপাড়া বাজারে ২৮ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে জ্যোতি আলু বিক্রি হয়েছে। অথচ ওই বাজারেই দুপুরের দিকে ২৫ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করেছেন সেই সবজি বিক্রেতারাই। একই ঘটনা দেখা গিয়েছে এ দিন বুধবারেও। চা শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকে ধর্মঘটের কারণে এ দিন পাইকারি বাজারে কেনা বেচা হয়নি। কিন্তু খুচরো বাজারে একই প্রবণতা ছিল বলে অভিযোগ। এ দিন দুপুরে নিউ জলপাইগুড়ি বাজারে ২৬ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হয়েছে। ক্রেতাদের অভিযোগ, সকালে সেই একই আলু নুন্যতম ২৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। সকালের ক্রেতাদের থেকে বেশি নিয়ে দুপুরে কেন কম নেওয়া হচ্ছে সেই প্রশ্নে বিক্রেতারা কোনও স্পষ্ট জবাব দিতে পারেননি। আলু বিক্রেতাদের কয়েকজন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্য সরকারের তরফে দাম নিয়ন্ত্রণ কিংবা নজরদারির কোনও ব্যবস্থা নাথাকায় যা খুশি দামে আলু বিক্রি করার সাহস পাচ্ছেন।

শিলিগুড়ির পাইকারি বাজার থেকে বড়জোর ৩০০ মিটার দূরেই চম্পাসারি মোড়ের বাজার। ওই বাজারে গিয়ে দেখা গেল জ্যোতি আলু নুন্যতম ২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, ভুটান আলুর দর নুন্যতম ৩৫ টাকা। বিধান মার্কেট এবং ক্ষুদিরাম পল্লির বাজারে আলুর দাম ছিল আরও চড়া। জ্যোতি আলুর দাম দুপুরে বিধান মার্কেটে কেজি প্রতি ২৬ টাকা টাওয়া হয়েছে, ভূটান আলুর জন্য ক্রেতাদের দিতে হয়েছে ৪০ টাকাও। বাসিন্দাদের অভিযোগ এ দিন সকালে আলুর দাম আরও বেশি ছিল। কেজি প্রতি ২৮ টাকায় জ্যোতি আলু বিক্রি হয়েছে ওই বাজারে। তবে, গত কয়েকদিনে পাইকারি বাজারে যে আলুর দামে হেরফের হয়নি তা আলু ব্যবসায়ী সংগঠন জানিয়েছে। শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজারের ফল ও সব্জি কমিশন এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী সদস্য তপনকুমার সাহা বলেন, “গত দেড় সপ্তাহে পাইকারি বাজারে আলুর দাম প্রায় একই রয়েছে। পাইকারি বাজারে জ্যোতি আলুর দর ২০ টাকার বেশি ছিল না। কয়েকদিন আগে ১-২ টাকা কমও ছিল।”

আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে টাস্ক ফোর্স গঠন করেছে রাজ্য সরকার। প্রতিটি জেলাতেও টাস্ক ফোর্সের ধাঁচে কমিটি গড়া হয়েছে। সেই কমিটির বিভিন্ন বাজারে গিয়ে নজরদারি চালানোর কথা থাকলেও, শিলিগুড়ির বাজারগুলিতে পুজোর আগে দু’একবার অভিযান হলেও, তার পরে আর হয়নি বলে জানা গিয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ির বিভিন্ন বাজারের আলুর দর নিয়ে প্রতিদিন মহকুমাশাসকের কাছে রিপোর্ট জমা পড়ে। সে রিপোর্টেও আলুর দাম কমিয়ে দেখানো হচ্ছে বলে সরকারি কর্মীদের মধ্যেই অভিযোগ উঠেছে। মহকুমা শাসক দ্বীপাপ প্রিয়া বলেন, “আলুর দাম ফের বেড়ে যাওয়ার অভিযোগ পেয়েছি। সরকারি রিপোর্টে তার কতটা প্রতিফলিত হয়েছে তাও দেখব। সকাল দুপুর এবং বিকেলে আলাদা করে দাম জানাতে বলা হয়েছে। বাজারগুলিতে হঠাৎ করে পরিদর্শন শুরুর নির্দেশ দেওয়া হবে।”

পাইকারি বাজারের দামের সঙ্গে খুচরো বাজারের পার্থক্যের কারণ নিয়ে অবশ্য খুচরো ব্যবসায়ীরা একেক রকম ব্যাখ্যা দিয়েছেন। চম্পাসারির আলু ব্যবসায়ী দুলাল ঘোষ বলেন, “পাইকারি বাজার থেকে আলু নিয়ে আসার পরে বাছাই করতে হয়। অনেক পচা, ফাটা আলু থাকে, সেগুলি ফেলে দিতে হয় তাই দাম বেড়ে যায়।” ক্ষুদিরামপল্লি বাজারের সব্জি বিক্রেতা সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক হরি কুণ্ডুর যুক্তি, “পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। সে কারণেই দাম বেড়েছে।” তা বলে পাইকারি বাজারে ২০ টাকা কেজি কিনে ৩ কিলোমনিটার দূরে ২৮ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হবে? এর কোনও স্পষ্ট জবাব দেননি ওই খুচরো বিক্রেতা। পাইকারি দর থেকে কতটা বেশি দাম নেওয়া যায় তার একটা ঊর্ধ্বসীমা রয়েছে। নজরদারি না থাকাতেই শিলিগুড়ির বাজারগুলিতে সে নিয়ম মানা হচ্ছে না বলেই বাসিন্দাদের দাবি।

potato price siliguri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy