সন্ধ্যা নামলেই শিলিগুড়ি পুরসভার ১, ২, ৩, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কয়েকটি এলাকায় বেআইনি মদের আসর বসছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই সব এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের তরফেই নানা মহলে উদ্বেগ জানিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
প্রধাননগর থানার আওতায় থাকা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর অফিস যেখানে, সেই বিবেকানন্দ ভবনের চত্বরেও পাহারাদের নজর এড়িয়ে নেশার আসর বসছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী বাসিন্দারা।
সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের পিছনের বাগানের মধ্যে প্রচুর ফাঁকা মদের বোতল দেখে হইচই করেন বাসিন্দাদের একাংশ। পরে সাফাইকর্মীরা গিয়ে তা সরিয়ে দেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এমন ঘটনা ঘটলে তা উদ্বেগের। দ্রুত অভিযুক্তদের চিহ্নিত করতে পুলিশের সঙ্গে কথা বলব।”
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর থেকে একশো মিটার দূরত্বের মধ্যে প্রধাননগর থানা। এ ছাড়া রাত ৮ টা পর্যন্ত পঞ্চাশ মিটারের মধ্যে ট্রাফিক পুলিশের অফিসার-কর্মীরা থাকেন। তবুও কী ভাবে নেশার আসর বসছে তা বুঝে উঠতে পারছেন না অনেকেই। শিলিগুড়ি পুলিশে ডিসি অংমু গ্যামসো পাল বলেন, “বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব। সংশ্লিষ্ট থানাগুলির পুলিশের সঙ্গে কথা বলা হবে।”
এলাকার বাসিন্দারা জানান, ১ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েকটি এলাকায় খোলামেলা বেআইনি মদের আসর বসে। কুলিপাড়ার দিকে কয়েকটি চায়ের দোকানের বারান্দায়, বা পরিত্যক্ত বাড়িতে বসছে নেশার আসর। এলাকার প্রাক্তন কাউন্সিলর সঞ্জয় পাঠক সম্প্রতি কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তিনি এই ধরণের কোনও ঘটনা এলাকায় ঘটছে বলে জানেন না। তিনি বলেন, “আমাকে কেউ এ সব জানায়নি। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের প্রায় লাগোয়া তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা কার্যকরী সভাপতি অলক চক্রবর্তীর ব্যক্তিগত অফিস। তিনি অবশ্য এই ধরণের ঘটনা অভিপ্রেত নয় বলে মন্তব্য করেন। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দিয়েছেন।
এই ওয়ার্ডের উল্টো দিকে ২ নম্বর ওয়ার্ড। এখানকার এক বাসিন্দা জগদীশ সিংহের মতে, “এলাকায় মদ্যপদের এড়াতে রাতের দিকে পারতপক্ষে বার হচ্ছি না। সেই সুযোগ নিচ্ছে দুষ্কৃতীরা।’’ ওই ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর সিপিএমের মুকুল সেনগুপ্ত অভিযোগ করেন, “এলাকার বাইরে থেকে রোজই কিছু ছেলে এসে নেশার আসর বসাচ্ছে। নিবেদিতা রোড, বাঘাযতীন কলোনি এলাকায় মদ্যপদের কারণে রোজই ঝামেলা-মারামারি লেগে রয়েছে। আমরা এক আগেও পুলিশকে জানিয়েছি।”
শিলিগুড়ির বর্ধমান রোড সংলগ্ন ৪ নম্বর ওয়ার্ডে রাতের অন্ধকারে মদের আসর বসছে রোজই। রাস্তার মোড়ে প্রকাশ্যেই মদের আসর দেখছেন নিত্যযাত্রীদের অনেকেই। শিলিগুড়ির ঝংকার মোড় এলাকাতেও মদের আসর বাড়ছে বলে অভিযোগ। এলাকার প্রাক্তন কংগ্রেস কাউন্সিলর স্বপন চন্দ বলেন, “শিলিগুড়ি থানায় এ নিয়ে বহুবার অভিযোগ জানিয়েছি। তবু কাজ হয়নি। পুলিশ কোনও কাজই করছে না।”
প্রধাননগর থানার অন্য দিকে রয়েছে তিন নম্বর ওয়ার্ড। এই এলাকার গুরুঙ্গবস্তি এলাকায় মদ্যপদের আড্ডা নিয়ে উদ্বিগ্ন এলাকার প্রাক্তন কাউন্সিলর রামভজন মাহাতো। তিনি বলেন, “আমরা বিষয়টি লক্ষ্য করেছি। এটা নিয়ে আমরা শীঘ্রই পুলিশকে স্মারকলিপি দেব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy