দুর্ঘটনার আশঙ্কা। শিলিগুড়িতে বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।
তিনতলা বাড়িটার দু’পাশে আটটি স্তম্ভ। বাড়ির মূল কাঠামো থেকে বর্ধিত অংশ এবং বারান্দা স্তম্ভগুলির উপরেই ভর করে রয়েছে। স্তম্ভের সব ক’টির গায়ে একাধিক জায়গায় সিমেন্টের আস্তরণ ক্ষয়ে গিয়ে লোহা বেরিয়েছে। বৃষ্টি হলেই তিন তলার ছাদ এবং বারান্দা থেকে সিমেন্টের চাঙর খসে পড়ছে। সম্প্রতি এই প্রবণতা আরও বেড়েছে বলে অভিযোগ। খসে পড়া চাঙর আটকাতে দোতলায় টিন দিয়ে শেড তৈরি করতে হয়েছে। বাড়ির পেছনের দেওয়াল ফাটিয়ে গজিয়েছে বটগাছ। নোনা ধরা দেওয়াল থেকে খসে পড়ছে পলেস্তরা। এমনই দশা রাজ্য হাউজিং বোর্ডের শিলিগুড়ির আঞ্চলিক দফতরের। তিন তলা বাড়ির নীচের তলায় অফিস। দোতলায় দোকানঘর। তিন তলায় অতিথিশালা। বোর্ডের নিজস্ব এই বাড়িটি নব্বইয়ের দশকের শুরুতে নির্মাণ হয়। তারপর সে ভাবে সংস্কারের কাজ হয়নি।
সরকারি জমিতে আবাসন নির্মাণ করে কখনও কম মূল্যে কখনও বা বাণিজ্যিক ভাবে বিক্রি করে সংস্থাটি। সাম্প্রতিক সময়ে শিলিগুড়িতেই অন্তত তিনটি আবাসন তৈরি করেছে সংস্থাটি। সব মিলিয়ে ৪০ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ রয়েছে বোর্ডের। কোটি কোটি টাকা যে বোর্ড বিনিয়োগ করে, তার আঞ্চলিক দফতরের এমন হাল কেন থাকবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আধিকারিকরাও। উত্তরবঙ্গে ৬ জেলার কাজকর্ম দেখভাল করা হয় শিলিগুড়ির প্রধাননগরে আঞ্চলিক অফিস থেকে।
দীর্ঘদিন ধরেই আঞ্চলিক অফিসটি পরিকাঠামো সমস্যার সঙ্গে প্রশাসনিক কাজকর্মেও পিছিয়ে পড়েছে। দফতরের শীর্ষ পদে স্থায়ীভাবে কোনও কর্তা নেই। একজন যুগ্ম অধিকর্তা এবং উপ অধিকর্তা আছেন, এগুলিই তাঁদের মূল দায়িত্ব নয়। অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে তাঁরা এই দায়িত্ব পালন করেন। দু’তিন মাসের ব্যবধানে আধিকারিকরা অফিস আসেন বলে জানা গিয়েছে। তার ফলে বোর্ডের কাজকর্মেও শিথিলতা দেখা দিয়েছে। ভবনের দোতলায় থাকা নানা দোকানের মালিকদের অভিযোগ, ভবনের দুর্দশা নিয়ে অভিযোগ জানাতে গেলে আধিকারিকদের অফিসে পাওয়া যায় না। সমস্যার কথা জানেন বোর্ডের যুগ্ম অধিকর্তা চন্দন সরকারও। তাঁর কথায়, “বাড়ির অবস্থার কথা জানি। দ্রুত সংস্কারের কাজ হবে। তার টেন্ডার ডাকা হয়েছে। মঙ্গলবার এই নোটিস প্রকাশিত হবে।” দফতরের প্রশাসনিক কাজকর্ম সম্পর্কে তিনি বলেন, “দ্রুত শিলিগুড়ি গিয়ে খোঁজ নিচ্ছি।”
ভবনের দোতলায় একটি ভ্রমণ সংস্থার অফিস রয়েছে। সংস্থার কর্ণধার জাকির হোসেন বলেন, “গত দু’বছর ধরে চাঙর খসে পড়ছে। পিলার থেকে দেওয়ালে ক্ষত তৈরি হয়েছে। প্রতি দিন চাঙর খসে দোকানের সামনে পড়ছে। কয়েকজন আহতও হয়েছে। কোনও দিন না বাড়িটাই ধসে পড়ে।” দফতরের কর্মীরা এ নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তবে তারা জানান, পিলারের নীচে আগাছার জঙ্গল তৈরি হয়েছে। সাপ, বিষাক্ত পোকা বাসা বেধেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy