Advertisement
E-Paper

হুদহুদের প্রভাবেই বৃষ্টি, দেরি শীতে

হুদহুদের ‘ঠেলায়’ দরজায় কড়া নেড়েও ফিরে গিয়েছে শীত। সাধারণত অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরুতেই সরকারি ভাবে উত্তরবঙ্গ এবং সিকিমে বর্ষা বিদায় ঘোষণা করা হয়। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর প্রভাবেই এই এলাকায় বৃষ্টি হয়।

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৪ ১৪:২৬
মঙ্গলবার বৃষ্টি হয় (বাঁ দিকে) জলপাইগুড়ি ও (ডান দিকে) শিলিগুড়িতে। ছবি দু’টি তুলেছেন সন্দীপ পাল ও বিশ্বরূপ বসাক।

মঙ্গলবার বৃষ্টি হয় (বাঁ দিকে) জলপাইগুড়ি ও (ডান দিকে) শিলিগুড়িতে। ছবি দু’টি তুলেছেন সন্দীপ পাল ও বিশ্বরূপ বসাক।

হুদহুদের ‘ঠেলায়’ দরজায় কড়া নেড়েও ফিরে গিয়েছে শীত। সাধারণত অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরুতেই সরকারি ভাবে উত্তরবঙ্গ এবং সিকিমে বর্ষা বিদায় ঘোষণা করা হয়। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর প্রভাবেই এই এলাকায় বৃষ্টি হয়। মৌসুমী বায়ু বিদায় নেওয়ার পরেই উত্তুরে হাওয়া ঢুকতে শুরু করে এবং তার প্রভাবে শীত জাঁকিয়ে বসতে শুরু করে। যদিও এ বারে হুদহুদের প্রভাবে দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমী বায়ু এখনও উত্তরবঙ্গ এবং সিকিমের উপরে ঘোরাফেরা করছে বলে জানানো হয়েছে। যার ফলে উত্তুরে হাওয়া আসতে শুরু করলেও, এলাকায় ঢুকতে পারছে না। আবহাওয়া দফতরের বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছে, দক্ষিণী বায়ু কোনও এলাকায় আগে থেকে সক্রিয় থাকলে, সেখানে উত্তুরে হাওয়া ঢোকা সম্ভব নয়। সরকারি ভাবেও বর্ষা বিদায় ঘোষণা এখনও হয়নি। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এমন চলতে থাকলে শীতের আমেজ পেতে উত্তরবঙ্গবাসীকে আগামী মাসের অপেক্ষা করতে হবে।

এ দিকে, হুদহুদের প্রভাবেই মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি এবং শিলিগুড়িতে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হয়েছে। এ দিন সকাল থেকেই দুই শহরের আকাশে কালো মেঘ ছিল। সকাল সাড়ে দশটা থেকে জলপাইগুড়িতে মাঝারি বৃষ্টি শুরু হয়। ঘণ্টা দেড়েক বৃষ্টি চলে। দুপুরের পর বৃষ্টি শুরু হয় শিলিগুড়িতেও। কখনও ঝিরঝিরি কখনও বা বড় বড় ফোঁটায় বৃষ্টি হয়েছে। সিকিমেও এ দিন সকাল থেকে একই রকম পরিস্থিতি ছিল। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় সিকিমে মাঝারি থেকে ভারী ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কলকাতার আবহাওয়া দফতর সূত্রেও আগামী দু’দিন উত্তরবঙ্গে হালকা ও মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস ঘোষণা করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর জানিয়েছেন, ট্রপিকাল সাইক্লোন ‘হুদহুদ’ ক্রমশ শক্তিক্ষয় করে বারাণসী সহ পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে গভীর নিম্নচাপ তৈরি করেছে। উত্তরপ্রদেশের পশ্চিম এলাকায় অথবা বিহারে কোনও নিম্নচাপ তৈরি হলে উত্তরবঙ্গ এবং সিকিমও তার ‘পেরিফেরি’ তথা এলাকায় পড়ে যায়। এই নিম্নচাপের টানেই মৌসুমী বায়ু এসে উত্তরবঙ্গ এবং সিকিমে বৃষ্টি দিতে শুরু করেছে। নিম্নচাপটি ক্রমশ শক্তিক্ষয় করে উত্তর-পূর্ব দিকে সরে যেতে শুরু করেছে বলে আবহাওয়া দফতরের খবর। পুরোপুরি শক্তিক্ষয় না হওয়া অথবা ওই এলাকা থেকে সরে না যাওয়া পর্যন্ত বৃষ্টি পরিস্থিতি চলবে বলে জানানো হয়েছে।

সিকিমের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, “হুদহুদের কারণে তৈরি হওয়া নিম্মচাপের জেরেই সিকিমে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টা এই পরিস্থিতি চলবে। দক্ষিণ পশ্চিমী মৌসুমী বায়ু এখনও এই এঞ্চল থেকে চলে না যাওয়ায় উত্তুরে হাওয়া এখনও সক্রিয় হয়ে ওঠেনি। তার ফলে শীত আসতেও দেরি হচ্ছে।” এই পরিস্থিতি পরিবর্তন হলে তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে।

সরকারি ভাবে শীত আসতে দেরি হলেও, চলতি সপ্তাহের পর থেকেই কিছুটা তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে বলে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে। এ বছরে এমনিতেই অক্টোবর মাসে উত্তরবঙ্গের তাপমাত্রা তুলনামুলক ভাবে বেশি ছিল। পুজোর পরেও, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩০ থেকে ৩৩ ডিগ্রির আশেপাশে ঘোরাফেরা করেছে। বিশ্ব উষ্ণায়ন ওই ঘটনার জন্য দায়ী ছিল বলে ভূগোলবিদরা জানিয়েছিলেন। তবে গত সপ্তাহ থেকে উত্তুরে হাওয়া সিকিম এবং উত্তরবঙ্গে ঢুকতে শুরু করেছিল। যদিও, হুদহুদের ধাক্কায় সেই হাওয়া ফের পিছু হটেছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।

hudhud rain winter anirban roy siliguri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy