Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

হিলি সীমান্তে তিন দিন বন্ধ বহির্বাণিজ্য

রফতানি পণ্যের ওজন কম, এই অভিযোগে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের আপত্তিতে তিন দিন বন্ধ দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে বর্হিবাণিজ্য।

হিলি সীমান্তে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের সারি। ছবি: অমিত মোহান্ত।

হিলি সীমান্তে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের সারি। ছবি: অমিত মোহান্ত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হিলি শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৪১
Share: Save:

রফতানি পণ্যের ওজন কম, এই অভিযোগে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের আপত্তিতে তিন দিন বন্ধ দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে বর্হিবাণিজ্য।

মঙ্গলবার সকালে বাংলাদেশের পানামা বন্দরে পণ্যের ট্রাক ওয়েব্রিজ বা ধর্মকাঁটায় ওঠার পরেই ওজন কমের অভিযোগ তুলে পণ্য নেওয়া বন্ধ করে দেন ওপারের ব্যবসায়ীরা। তাঁদের অভিযোগ ছিল, দীর্ঘদিন ধরে বরাতের চেয়ে পণ্য কম আসছে। হিলির ব্যবসায়ীদের জানিয়ে বিষয়টির সুরাহা না হওয়ায় মাল নেওয়া বন্ধ বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের আমদানি সংস্থার প্রতিনিধি হাকিম মন্ডল।

হিলি এক্সপোর্টার অ্যান্ড কাস্টমস ক্লিয়ারিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অশোক মণ্ডল ও পারের পানামা বন্দরে ওজনে কমবেশির কথা স্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, “পানামা বন্দরে ওয়েব্রিজের ওজনের কাঁটার গোলমাল থাকতে পারে। হিলি দিয়ে পণ্য রফতানির আগেই মাঝ রাস্তায় ট্রাক থেকে মাল চুরি হচ্ছে।”

মঙ্গলবারের পর বুধবার দুপুরের মধ্যে বালুরঘাটের পতিরাম থেকে ঠাকুরপুরা হয়ে হিলির লস্করপুর পর্যন্ত রাস্তার ধারে অন্তত এক হাজারের উপর ট্রাকের দীর্ঘ লাইন পড়ে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এর মধ্যে কাঁচামালের ৬৪টি ট্রাক ছিল। তা নিয়ে সমস্যায় পড়েন রফতানিকারীরা। হিলির রফতানীকারকেরা পক্ষ থেকে ওপারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনার পর কেবলমাত্র কাঁচামালের ট্রাকই তাঁরা নিতে রাজি হয়। এ দিন বিকেলে বেশ কিছু পেঁয়াজ ও আদার ট্রাক পানামা বন্দরে গিয়ে মাল খালাস করে। হিলি আমদানি ও রফতানি সংস্থার সভাপতি বিকাশ মণ্ডল বলেন, “হিলি দিয়ে রোজ ১৩-১৪ কোটি টাকার রফতানি বাণিজ্য হয়। বহির্বাণিজ্য বন্ধে চরম ক্ষতির মুখে পড়ে ব্যবসায়ীরা। আজ, শুক্রবার দু’দেশের ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠক হবে। হিলির বিডিও থাকবেন।”

এ দিন রফতানি ব্যবসায়ীদের একাংশ জানান, হিলি চেকপোস্টে পৌঁছনোর আগে পতিরাম, খোরনা, খাঁপুর, নাজিরপুর, পাইকপাড়া-সহ বিভিন্ন জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাক থেকে মাল চুরি হচ্ছে। হিলি সীমান্তে পণ্যভর্তি ট্রাক ওজন করার সরকারি ব্যবস্থা নেই। অশোকবাবুর অভিযোগ, “ট্রাক থেকে মাল চুরির জায়গাগুলি সম্পর্কে স্থানীয় থানা এবং পুলিশ সুপারকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছিল। কাজ হয়নি। চুরির সঙ্গে এক শ্রেণির ট্রাকচালক ও কর্মী যুক্ত বলে আমাদের সন্দেহ।”

চালকেরা অবশ্য অভিযোগ মানতে চাননি। সীমান্ত এলাকায় গাড়ি নিয়ে থাকা সুশান্ত বর্মন ও ইলিয়াস মল্লিকেরা বলেন, “আমরা হিলি চেকপোস্টে ঢোকার আগে এ পারের বেসরকারি ধর্মকাঁটায় ওজন করিয়ে ওপারে নিয়ে গেলে ওজন কম হচ্ছে বলে দাবি করা হচ্ছে। ও পারের পানামা বন্দরের ধর্মকাঁটাতে গণ্ডগোল রয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। অহেতুক ট্রাকের চালক, খালাসিদের চোর সাব্যস্ত করা হচ্ছে।” তাঁরা জানান, পণ্যের ওজন কম থাকায় ও পারের ব্যবসায়ীরা তা চালকদের কাগজে লিখে দিতে বলেন। তা না করায় মালপত্র নেওয়া বন্ধ করেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা।

হিলি দিয়ে বর্হিবাণিজ্য বন্ধ হয়ে পড়ায় পণ্যবোঝাই ট্রাকের ভিড়ে হিলি অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে এলাকা। জেলা পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, “রফতানিকারীদের অভিযোগ খতিয়ে দেখে হচ্ছে। অবশ্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

hili
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE