জলপাইগুড়ির হোমের পথে শিশু কিশোররা। —নিজস্ব চিত্র।
রাজস্থানে কাজে যাওয়া ২০ জন নাবালককে উদ্ধার করল জলপাইগুড়ি জেলা শিশু সুরক্ষা সমিতি। উদ্ধার করে আনা শিশু কিশোররা সকলেই রাজস্থানের জয়পুরের কোনও কারখানা অথবা দোকানে কাজ করত বলে জানা গিয়েছে। রবিবার রাতে ওই নাবালকদের ট্রেনে করে নিউ জলপাইগুড়িতে নিয়ে আসা হয়। সমিতির তরফে এ দিন রাতেই উদ্ধার নাবালকদের জলপাইগুড়ি কোরক হোমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসকে ‘অপারেশন স্মাইল’ অভিযানের মাস হিসেবে চিহ্নিত করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই অভিযানে ভিনরাজ্যে কাজ করা ‘শিশু শ্রমিক’দের বাড়িতে ফেরানোর অভিযান শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সেই অভিযানের অংশ হিসেবেই রাজস্তানে কাজ করা নাবালকদের ফিরিয়ে এনেছে সমিতি। সূত্রের খবর উদ্ধার হওয়া শিশু কিশোররা সকলেই আলিপুরদুয়ার জেলা ও লাগোয়া এলাকার বাসিন্দা। সকলেরই বয়স ১০ থেকে ১৮-এর মধ্যে।
অপারেশন স্মাইলের অংশ হলেও, জেলা শিশু সুরক্ষা সমিতির তরফে জানানো হয়েছে, গত ডিসেম্বর মাসেই রাজস্তানে কাজ করতে যাওয়া এই শিশুদের তালিকা হাতে আসে। সেই মতো রাজস্থানে যায় সমিতির দল। সেখানকার পুলিশের সহযোগিতায় সকলকে উদ্ধার করা হয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক সাস্মিতা ঘোষ বলেন, “বিভিন্ন সূত্র থেকে রাজস্তানে কাজ করতে যাওয়া নাবালকদের তালিকা পাই। সেই মতো খোঁজখবর শুরু হয়। নিশ্চিত হওয়ার পরে অভিযান শুরু হয়।” এ দিন কোরকে হোমে শিশু কিশোরদের পাঠানোর পরে, সকলের বাড়িতে খবর দেওয়া হবে। শিশু সুরক্ষা াধিকারিক বলেন, “যদি, কোনও ক্ষেত্রে দেখা যায় শিশু তার নিজের বাড়িতে সুরক্ষিত নয়, বা ফের কাজে পাঠিয়ে দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, তবে তাদের হোমে রাখার ব্যবস্থা করা হবে।” সমিতি জানিয়েছে, গত এক বছরের মধ্যে এই নাবালকরা রাজস্থানে পৌঁছয়। এদের মধ্যে বেশিরভাগই রাজস্থানে সেলাইয়ের কাজ করত বলে জানা গিয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে ভিনরাজ্যে শিশুরা কাজে পৌঁছলেও বাকি ক্ষেত্রে কাদের মধ্যে কাজে গিয়েছিল তা খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। চলতি সপ্তাহের শুরুতে রাজস্থানের জয়পুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে শিশুদের উদ্ধার করা হয়েছে। এ দিন রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ শিশু কিশোররা নিউ জলপাইগুড়ি পৌঁছলে সকলকে লাল গোলাপ দিয়ে স্বাগত জানানো হয়। খগেনহাট এলাকার এক বালকের কথায়, “বাড়ি থেকে এক কাকুর সঙ্গে রাজস্থানে কাজে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে একটি কাপড়ের কারখানায় কাজ করতাম। সেলাইয়ের কাজ করতে হতো।” প্রাথমিক স্কুলে পড়া ছাড়িয়ে রাজস্থানে কাজে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাকে। উদ্ধার করে আনা শিশু কিশোরদের পড়াশোনা করাতেও প্রশাসনকে উদ্যোগী হতে হবে বলে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা দাবি করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy