কৃষকদের মধ্যে উৎসাহ তৈরী হয়েছে ‘বঙ্গশ্রী’ নিয়ে। নিজস্ব চিত্র।
পঞ্জাব নির্ভরতা কমাতে আলু বীজ তৈরি হচ্ছে বাংলায়। ফি বছর আলু চাষের মরসুম এলেই পঞ্জাবের আলু বীজের কদর বাড়ে। কৃষকদের ধারণা পঞ্জাবের বীজ থেকে উৎকৃষ্ট মানের আলু হয়। সেই নির্ভরতা কাটাতে পশ্চিম বঙ্গ সরকারের কৃষি দফতর ‘হাইটেক আলু বীজ’ তৈরির চিন্তাভাবনা শুরু করে। তিন বছর আগে শুরু হয় সেই ‘হাইটেক আলু বীজের’ পরীক্ষামূলক চাষ। যারপোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে ‘বঙ্গশ্রী’।
হুগলি জেলা রাজ্যের মধ্যে বৃহৎ আলু উৎপাদক জেলা।যেখানে প্রায় ৯০ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়। আলু উৎপাদন হয় ২৫-৩০ লক্ষ মেট্রিক টন। হুগলি জেলাতেও ‘বঙ্গশ্রী’ উৎপাদন হচ্ছে। জেলার পান্ডুয়া, বলাগড়, পোলবা, ধনিয়াখালি, হরিপাল, তারকেশ্বর ও পুরশুড়া ব্লকে সরকারি খামারে ও ব্যাক্তিগত উদ্যোগে আলু বীজ তৈরি হচ্ছে।
হুগলি জেলা কৃষি উপ অধিকর্তা জয়ন্ত পাড়ুই বলেন,‘‘পলি হাউস তৈরী করে বীজ আলু চাষ করা হচ্ছে। খুব যত্ন করে তৈরী এই বীজ নিরোগ। ক্ষতিকারক পোকার আক্রমণ রুখতেও সক্ষম। উৎপাদনও ভালো। তাই কৃষকদের মধ্যে উৎসাহ তৈরী হয়েছে ‘বঙ্গশ্রী’ নিয়ে। আমাদের লক্ষ আগামী চার পাঁচ বছরে অন্তত পঞ্চাশ শতাংশ চাষি যাতে জমিতে ‘বঙ্গ শ্রী ব্যবহার করতে পারে। চাষিদের বলব ‘বঙ্গশ্রী’ বীজ ব্যবহার করতে। এর দাম পঞ্জাব বীজের থেকে অনেক কম।’’
পঞ্জাবের বীজ নিয়ে এই সময় কালো বাজারি হয়। অনেক সময় দেখা যায় স্থানীয় আলুকে পঞ্জাবের বীজ বলে চালিয়ে দেওয়া হয়। তাতে মার খায় উৎপাদন। চাষির ক্ষতি হয়। গতবার বীজের ব্যাপক চাহিদা থাকায় প্রতি পঞ্চাশ কিলোগ্রামের বস্তা পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। ফলে চাষের খরচ বেড়েছে। অথচ আলু ওঠার পর দাম পাননি চাষি।
আলু চাষ এমনিতেই অনিশ্চয়তায় ভরা। বীজ পোঁতার পর গাছে রোগ, পোকার আক্রমণ, ধসা রোগ, প্রাকৃতিক দূর্যোগে ঝু্ঁকি থাকে। আবার অতি উৎপাদনেও দাম না পাওয়ার আশঙ্কা থাকে। জেলা কৃষি দপ্তর থেকে তাই বিকল্প চাষের কথা বলা হয়। বাদাম চাষ অনেক লাভজনক। কিন্তু সেই চাষে এখনও তেমন উৎসাহ পাননি হুগলি জেলার আলু চাষিরা। পোলবা সুগন্ধার আলু চাষি দিলীপ ময়রা বলেন, ‘‘সরকারি আলু বীজ চাহিদা মত পাওয়া যায় না। তাই বাধ্য হয়ে পঞ্জাব বীজ চাষ করতে হয়।’’ চাহিদার তুলনায় জোগান কমের কথা মেনে নিয়েছে জেলা কৃষি দফতরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy