প্রতীকী ছবি।
পুরুষ-মহিলার আনুপাতিক হার হোক বা শতাংশের নিরিখে ভোটার কিংবা ১৮-১৯ বছর বয়সি ভোটার—পশ্চিমবঙ্গে সবেতেই বাড়বাড়ন্ত। জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) এবং সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে উত্তপ্ত আবহের মধ্যে প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকা এই সব কিছুতেই বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে।
চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুযায়ী বাংলায় পুরুষ ও মহিলার আনুপাতিক হার ১০০০:৯৫৬। অর্থাৎ হাজার জন পুরুষ-পিছু মহিলা ৯৫৬। জনগণনার আনুপাতিক হারকে পিছনে ফেলে দিয়েছে এটা। ২০১১-র জনগণনা অনুযায়ী এই হার ছিল ১০০০:৯৫০। ২০১৯ সালের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুযায়ী পুরুষ-মহিলার অনুপাত ১০০০:৯৪৯। ২০১৮-য় ১০০০:৯৪২। শেষ তিন বছরে এই বৃদ্ধির হার সাত।
গত তিন বছরে জনসংখ্যার নিরিখে ভোটার বৃদ্ধির হার একই থাকলেও এ বার তা বেড়েছে। এখন জনসংখ্যার সঙ্গে শতাংশের নিরিখে প্রতি ১০০ জনে ভোটার ৭০ জন। ২০১৭, ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে জনসংখ্যার নিরিখে ভোটার বৃদ্ধির হার ছিল ০.৬৯%। তিন বছর পরে তা আরও বেড়ে হল ০.৭০%। ২০১৬-য় এই হার ছিল ০.৬৮%।নতুন তালিকায় ১৮-১৯ বছরের ভোটারের হার ৩.০৮%। ২০১৯ সালে ছিল ২.৯৬%।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৩১টি বাদে বৃহস্পতিবার রাজ্যের ২৬৩টি বিধানসভা কেন্দ্রের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়। মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের (সিইও) দফতরের ওই তালিকা অনুযায়ী রাজ্যে ভোটার ছ’কোটি ৩৯ লক্ষ ১৭ হাজার ৮২৫ জন। পুরুষ তিন কোটি ২৬ লক্ষ ৭২ হাজার ৫৯৯ জন। মহিলা তিন কোটি ১২ লক্ষ ৪৩ হাজার ৯৮৪ জন। ২৬৩টি কেন্দ্রে নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করেন ২৪ লক্ষ ৭১ হাজার ৬৩২ জন। তালিকায় উঠেছে ২০ লক্ষ ৬৯ হাজার ১৬২ জনের নাম। ২.৮৯% নাম নতুন নথিভুক্ত হয়েছে। দু’লক্ষ ৭৪ হাজার ৭৫৫টি নাম বাদ।
সংযোজনে অন্যান্য জেলাকে টেক্কা দিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। সেখানে নতুন ভোটার হতে তিন লক্ষ ৯৬ হাজারের কিছু বেশি আবেদন জমা পড়েছিল। দু’লক্ষ ৬৮ হাজারের কিছু বেশি নাম সংযোজিত হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর। দ্বিতীয় মুর্শিদাবাদ। ওই জেলা প্রশাসনের হিসেব অনুযায়ী আবেদন এসেছিল প্রায় দু’লক্ষ ৭৪ হাজার। নতুন ভোটার হয়েছেন দু’লক্ষ ৪৮ হাজার জন। তৃতীয় হাওড়া। জেলা প্রশাসনের তথ্য বলছে, আবেদন এসেছিল এক লক্ষ ৬৪ হাজারের কিছু বেশি। তালিকায় উঠেছে এক লক্ষ ৪৫ হাজার নাম।
শতাংশের বিচারে আবেদন গ্রহণের ক্ষেত্রে একেবারে সামনের সারিতে আছে বীরভূম। সেখানে নতুন ভোটার হতে চেয়ে আবেদন করেছিলেন অন্তত ৯১ হাজার জন। নতুন ভোটার হয়েছেন ৮৬ হাজারের কিছু বেশি আবেদনকারী। সংখ্যার নিরিখে বেশি আবেদন গৃহীত হলেও শতাংশের বিচারে বেশ পিছনের দিকে রয়েছে দুই সীমান্তবর্তী জেলা উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়া। নদিয়ায় এক লক্ষ ৯৩ হাজার আবেদনের মধ্যে গৃহীত হয়েছে এক লক্ষ ৩৬ হাজারটি। মুর্শিদাবাদ ও মালদহে শতাংশের নিরিখে আবেদন গৃহীত হয়েছে অনেক বেশি। মালদহে অন্তত এক লক্ষ ৪০ হাজার আবেদন এসেছিল। তার মধ্যে অন্তত এক লক্ষ ২৫ হাজার নাম তালিকায় সংযোজিত হয়েছে।
আবেদন সত্ত্বেও অনেক নাম তালিকায় সংযোজিত হল না কেন? নির্বাচন কমিশনের কর্তারা বলছেন, ‘‘আবেদনের সঙ্গে জমা পড়া নথিপত্র বার বার যাচাই করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী হয়েছে সংযোজন, বিয়োজন এবং সংশোধন।’’ এ দিন চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হলেও নতুন পরিচয়পত্র পেতে আরও প্রায় তিন সপ্তাহ লাগবে বলে কমিশনের খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy