Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

দলের একাংশ ক্ষুব্ধ ঋতব্রতর কাজকর্ম দেখে

দলের রাজ্যসভা সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের আচরণে মোটেই সন্তুষ্ট নয় বঙ্গ সিপিএমের একটা বড় অংশ। তাঁকে ঘিরে যে বিতর্ক বেধেছে, তার ফয়সালার ভার দলের রাজ্য কমিটিকে দিয়েছে সিপিএমের পলিটব্যুরো। তবে তাতে ঋতব্রতর বেকায়দায় পড়ার তেমন সম্ভাবনা নেই বলে মনে করছে দলেরই এই নেতারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:৪৪
Share: Save:

দলের রাজ্যসভা সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের আচরণে মোটেই সন্তুষ্ট নয় বঙ্গ সিপিএমের একটা বড় অংশ। তাঁকে ঘিরে যে বিতর্ক বেধেছে, তার ফয়সালার ভার দলের রাজ্য কমিটিকে দিয়েছে সিপিএমের পলিটব্যুরো। তবে তাতে ঋতব্রতর বেকায়দায় পড়ার তেমন সম্ভাবনা নেই বলে মনে করছে দলেরই এই নেতারা। তাঁদের মতে, রাজ্যে দলের কয়েক জন শীর্ষনেতার আশ্রয়ে ও প্রশ্রয়ে ঋতব্রতর দায়িত্ব আর গুরুত্ব দুই-ই ধীরে ধীরে বেড়েছে। এবং এঁদেরই ‘আশীর্বাদে’ এ বারও হয়তো সামান্য ভর্ৎসনা করেই ছে়ড়ে দেওয়া হতে পারে ঋতব্রতকে।

সিপিএমের এই রাজ্যসভা সদস্য কোন বিদেশি ব্র্যান্ডের ঘড়ি ও পেন ব্যবহার করেন, তা নিয়ে কটাক্ষ করে সম্প্রতি প্রচার শুরু হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। খোঁজ নিয়ে দেখা যায় সিপিএমের নেতা-কর্মীদেরই একটি অংশ এর সঙ্গে জড়িয়ে। এরই পাল্টা হিসেবে ঋতব্রত বেঙ্গালুরুর একটি সংস্থাকে চিঠি দিয়ে জানতে চান, তাদের সার্ভার ব্যবহার করে এমন ‘কুৎসা’ করা হচ্ছে কি না। সে খবর ছড়িয়ে পড়তে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়। ঋতব্রতর পাশাপাশি অস্বস্তিতে পড়ে গোটা দল। চাপের মুখে ঋতব্রত শেষ পর্যন্ত ওই চিঠি প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন। কিন্তু এখানেই থামছে না বিতর্ক। দলেরই অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, এক জন কমিউনিস্ট সাংসদ কেন এমন চিঠি লিখে কারও চাকরি বিপন্ন করবেন? এ নিয়ে দলের অন্দরের তরজাও এখন সোশ্যাল মিডিয়ার খোলা উঠোনে। সিপিএমের একটি সূত্রের বক্তব্য, দলের কিছু শীর্ষনেতার স্নেহের জোরেই এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক থেকে রাজ্যসভায় পৌঁছেছেন ঋতব্রত। তরুণ প্রজন্মের মুখ হিসেবে তাঁকে রাজ্যসভায় পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু টেট কেলেঙ্কারি, ভাঙড়-সহ সাম্প্রতিক কোনও আন্দোলনেই ছাত্র-যুবদের প্রতিনিধিত্ব করতে দেখা যায়নি তাঁকে। পথে নেমে লড়াইয়ের চেয়ে যে তিনি টিভি ক্যামেরার সামনে বা সোশ্যাল মিডিয়াতেই অনেক বেশি স্বচ্ছন্দ, সেটা বেশ স্পষ্ট। তাঁর অতিরিক্ত সাজগোজ- চেতন, আত্মপ্রচারসর্বস্ব ভাবমূর্তি নিয়ে ঘরোয়া আলোচনায় দলের অনেক নেতা-কর্মীই চর্চা করেন। সিপিএম সূত্রের আরও বক্তব্য, অনুশাসন-প্রধান দলে এমন আচরণ সুনজরে দেখা হয় না। ঋতব্রত তবু আপন পথেই চলেছেন সংগঠনে ক্ষমতাসীন কিছু নেতার প্রশ্রয়ে।

দিল্লিতে রবিবার পলিটব্যুরোর বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার পর দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘‘ঋতব্রত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সদস্য। তারা এ ব্যাপারে কথা বলেছে। যা করার, তারাই করবে।’’ ইয়েচুরি আরও জানান, ঋতব্রতের একটি পদক্ষেপ (চিঠি লেখার বিষয়টি) দল ইতিমধ্যেই খারিজ করেছে। স্বচ্ছতা রেখেই যা করার, করা হচ্ছে বলে তাঁর বক্তব্য।

রাজ্যের বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী সোমবার বলেন, ‘‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তিও বদলেছে। নতুন ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করা যেতেই পারে। কিন্তু যা-ই করা হোক, তা কখনওই কমিউনিস্ট নৈতিকতার বাইরে যাওয়া উচিত নয়।’’ সুজনবাবু আরও জানান, ঋতব্রত-বিতর্ক নিয়ে দল পর্যালোচনা করে যথাসময়ে অবস্থান জানাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ritabrata Banerjee CPIM Apple
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE