Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Adhir Chowdhry

‘ভূমিকম্প’ বললেন অধীর, ৩৬ হাজার চাকরি বাতিলে ‘খারাপ’ লাগলেও রাজ্যের দিকেই আঙুল সুজনের

চাকরিচ্যুতদের উদ্দেশে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর পরামর্শ, “যাঁরা টাকার বিনিময়ে চাকরি দিয়েছেন, তাঁদের কাছ থেকে গলায় গামছা দিয়ে টাকা আদায় করুন।”

Opposition parties labelled corruption charges against TMC govt on cancellation of 36000 jobs by Calcutta High Court

চাকরি বাতিল নিয়ে তৃণমূলের সমালোচনা অধীর চৌধুরী, সুজন চক্রবর্তীদের। ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২৩ ১৭:৫০
Share: Save:

৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিল নিয়ে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের তীব্র সমালোচনা করল বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী এই চাকরি বাতিলের নেপথ্যে টাকার খেলাকে দায়ী করেছেন। তাঁর কথায়, “এতগুলো ছেলেপুলের চাকরি গেল, সত্যিই খারাপ লাগছে। কিন্তু এই খারাপ লাগার দায় রাজ্য সরকারের।” চাকরিহারাদের উদ্দেশে সিপিএম নেতার পরামর্শ, “যাঁরা টাকার বিনিময়ে চাকরি দিয়েছেন, তাঁদের কাছ থেকে গলায় গামছা দিয়ে টাকা আদায় করুন।” একই সঙ্গে রাজ্যের শাসকদলকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “শাসকদলের নেতারা প্রস্তুত থাকুন। আপনাদের কাছ থেকে সবাই এ বার টাকা চাইবে।” রাজ্যে শিক্ষাব্যবস্থাকে বাঁচাতে শূন্যপদগুলিতে ৩ মাসের মধ্যে স্বচ্ছ নিয়োগের দাবি তুলেছেন সুজন। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ হাই কোর্টের রায় প্রসঙ্গে বলেন, “ন্যায়বিচার নিশ্চিত ভাবেই হোক। কিন্তু জেদাজেদি করতে গিয়ে অকারণে যেন কেউ বলি না হন।”

এই প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী রাজ্য সরকারের সমালোচনা করে বলেন, “রাজ্যে দুর্নীতির ভূমিকম্প হচ্ছে।” রাজ্য প্রশাসনের উদ্দেশে বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদের কটাক্ষবাণ, “দুর্নীতিতে পশ্চিমবঙ্গ গিনেস বুকে নাম তুলবে।” হাই কোর্টের নির্দেশে রাজ্যে বিপুল সংখ্যক চাকরি বাতিল নিয়ে তৃণমূল সরকারকে কটাক্ষ করেছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপিও। বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে এত বড় দুর্নীতি কোথাও হয়নি। এর পর তৃণমূলের সরকার চালানোর অধিকার নেই। আমরা বার বার চাকরি বিক্রির অভিযোগ করেছিলাম। আজ আদালতের রায় বুঝিয়ে দিল, আমাদের অভিযোগ ঠিক ছিল। আজকের দিনটা বাংলার জন্য লজ্জার।” এই মামলার অন্যতম আইনজীবী তথা বিজেপি নেতা তরুণজ্যোতি তিওয়ারি বলেন, “প্রাথমিকের নিয়োগে কী বিপুল পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছিল, হাই কোর্টের রায়ই তার প্রমাণ।” বিরোধী দলগুলির বক্তব্য, বার বার অনুরোধ করা সত্ত্বেও রাজ্য সরকারের তরফে ওয়েবসাইটে যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়নি।

শুক্রবারই ৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এঁরা সকলেই প্রশিক্ষণহীন। বিচারপতির রায়, আগামী ৪ মাস চাকরিচ্যুতরা স্কুলে যেতে পারবেন। বেতন পাবেন পার্শ্ব শিক্ষক বা প্যারা টিচার হিসাবে। হাই কোর্টের রায়, রাজ্যকে এই ৩ মাসের মধ্যে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে শেষ করতে হবে। বিচারপতি আরও জানিয়েছেন, যাঁদের চাকরি বাতিল হয়েছে, তাঁরা ইতিমধ্যে প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকলে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় তাঁরাও অংশ নিতে পারবেন।

নিয়োগ না পেয়ে অপ্রশিক্ষিত প্রিয়াঙ্কা নস্কর-সহ ১৪০ জন হাই কোর্টে মামলা করেন। মামলাকারীরা সকলেই প্রশিক্ষণহীন। তাঁদের দাবি, সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে নম্বর বিভাজন-সহ তালিকা প্রকাশ হয়েছে। সেই তালিকায় দেখা যাচ্ছে তাঁদের থেকে কম নম্বর পেয়েও অনেক অপ্রশিক্ষিত প্রার্থী চাকরির সুপারিশপত্র পেয়েছেন। তার পরেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় প্যানেল বাতিল করে ‘ঢাকি সমেত বিসর্জন’-এর হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, ২০১৬ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার পুরো প্যানেল বাতিল করে দেবেন। তিনি মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘আমি ঢাকি সমেত বিসর্জন দিয়ে দেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE