Advertisement
E-Paper

এক বছরের ফারাকে শৃঙ্খলাবদ্ধ সমাবেশ করে চমক সিদ্দিকুল্লার

সময়ের ফারাকটা এক বছর। পরিস্থিতিটা উল্টো! গত বছর সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর সভায় ধুন্ধুমার হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সেই সমাবেশেই জনতা শৃঙ্খলাবদ্ধ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৫ ১৯:১৯

সময়ের ফারাকটা এক বছর। পরিস্থিতিটা উল্টো!

গত বছর সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর সভায় ধুন্ধুমার হয়েছিল। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে সমাবেশে আসা লোকজনের হাতে জখম হয়েছিলেন লালবাজারের চার কর্তা। গোলমালের জেরে কলকাতার একটা বড় অংশ কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার সেই সমাবেশেই জনতা শৃঙ্খলাবদ্ধ। সমাবেশকারীদের সামলাতে পুলিশের পাশাপাশি পথে নেমেছিলেন সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরাও। তাতে ফল কী হয়েছে?

বেলা বারোটার ধর্মতলা মোড়ের ডোরিনা ক্রসিং। এস এন ব্যানার্জি রোডের দিক থেকে এক দল যুবক রাস্তা পেরোনোর তোড়জোড় করছেন। চলন্ত গাড়ির সামনে পড়ে যাতে বিপদ না ঘটে, তা বোঝানোর জন্য পুলিশের সঙ্গেই দুই স্বেচ্ছাসেবক গিয়ে বকাবকি করতে শুরু করেন ওই যুবকদের।

সমাবেশ থেকেই দলে দলে লোক টিপু সুলতান মসজিদে নমাজ পড়তে যাওয়া লোকজনেরা যাতে ফুটপাথ দিয়ে হাঁটেন, সে ব্যাপারে পুলিশের মতোই নজর রাখছিলেন স্বেচ্ছাসেবকেরা। রেড রোডে সমাবেশে আসা লোকজনকে জেব্রা ক্রসিং দিয়েই রাস্তা পার করার ব্যাপারে পুলিশের হাতে হাত লাগিয়েছিলেন সংগঠনের সদস্যরাও। এবং ভিড়কে এই সুশৃঙ্খল ভাবে সামলে দেওয়ার জেরেই যানজটে সে ভাবে নাকাল হতে হয়নি।

সমাবেশের জেরেও এ দিন যে শহরের যানজট পরিস্থিতি নাগালের বাইরে যায়নি, তার পিছনে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন কলকাতা পুলিশের অভিজ্ঞ অফিসারেরা। লালবাজারের একাধিক অফিসার বলছেন, গত বছরের ওই গোলমালের পর এ বার অনুমতি দেওয়ার সময়ই সমাবেশকারী সংগঠনের নেতাদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল। অন্য বারের তুলনায় রাস্তায় পুলিশি বন্দোবস্তও ছিল কঠোর। তবে এ সবের বাইরে আরও একটি কারণ রয়েছে। সেটা কী?

পুলিশেরই একাংশের মতে, সভামঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিই এ বার সমাবেশের চেহারা বদলের অন্যতম কারণ। প্রশাসনের সর্বোচ্চ নেত্রী সমাবেশের অতিথি হিসেবে থাকায় সমাবেশকারীদের প্রশাসন বিরোধী মনোভাব নেয়নি। এক পুলিশ অফিসার বলছেন, ‘‘অন্য বার আমরা রাস্তার পাশে যেতে বললে সমাবেশকারীরা রাস্তার মাঝখানে চলে আসত। এ বার আমাদের বলার আগেই নিজেরা রাস্তার পাশে চলে যাচ্ছে!’’

ট্রাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, এই সমাবেশের জন্য মেয়ো রোড বন্ধ করা হয়েছিল। গাড়িগুলি ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল অন্য দিকে। সমাবেশকারীদের রাস্তা পার করাতে গিয়েও অন্য দিনের তুলনায় বেশি ক্ষণ গাড়ি দাঁড় করাতে হয়েছে। তবে ভিড় রাস্তার মাঝখানের বদলে ফুটপাথ কিংবা রাস্তার এক পাশ দিয়ে যাওয়ার ফলে সিগন্যাল লাল থেকে সবুজ হতেই আটকে থাকা গাড়ি তড়িঘড়ি পার করে দেওয়া গিয়েছে। ‘‘মেয়ো রোড এবং কিছু রাস্তায় গাড়ি নিয়ন্ত্রণের জন্য অল্পবিস্তর যানজট হলেও পরিস্থিতি কখনই নাগালের বাইরে যায়নি,’’ মন্তব্য এক পুলিশকর্তার। এ দিনের ছবি দেখে ধর্মতলা এলাকায় ডিউটিরত এক পুলিশকর্তার বক্তব্য, ‘‘ইচ্ছে থাকলে সুশৃঙ্খল ভাবে যে সমাবেশ করা যায়, সেটা প্রমাণ হয়েছে।’’ ি

এ দিন সমাবেশে ভিড় সামলাতে এসে অনেক পুলিশ অফিসারের স্মৃতিতেই ফিরে এসেছে গত বছরের স্মৃতি। তাঁরা বলছেন, রেড রোড সমাবেশকারীদের ভিড়ে এক পুলিশকর্তার গাড়ি ঢুকে পড়া নিয়ে গোলমালের শুরু হয়েছিল। ইট ছোড়া, হাঙ্গামা সামলাতে কার্যত নাকাল হতে হয়েছিল পুলিশকে। ইট থেকে বাঁচতে ময়দানের এক ক্লাব তাঁবুতে ঢুকে পড়েছিলেন কয়েক জন আইপিএস অফিসার। বস্তুত, এ বারও এই সমাবেশ নিয়ে পুলিশের একাংশের আশঙ্কা ছিলই। সম্প্রতি এ ব্যাপারে লালবাজারের কয়েক জন শীর্ষকর্তা ঘনিষ্ঠ মহলে আশঙ্কাও প্রকাশ করেছিলেন। কেউ কেউ সমাবেশের অনুমতি দেওয়া উচিত কি না, সে প্রশ্নও তুলেছিলেন। কিন্তু শেষমেশ সমাবেশের অনুমতি দেয় লালবাজার।

siddikulla chowdhury meeting tmc esplanade
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy